নয়াদিল্লি ও হল্যান্ড: ভারতের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ টেলিকম সংস্থা ভোডাফোন আন্তর্জাতিক আদালতে একটি বড় মামলা জিতল৷ ভোডাফোনের সঙ্গে ভারত সরকার ন্যায্য ও যথার্থ আচরণ করেনি। ভোডাফোনের ওপর চাপানো করের বোঝা লগ্নি চুক্তির বিরোধী, এমনটাই দাবি করে ভারত সরকারকে ভোডাফোনের সমস্ত আইনি খরচ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল হেগের পার্মানেন্ট কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন।
হেগের পার্মানেন্ট কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন, আজ অর্থাৎ শুক্রবার এই মামলার শুনানি করে। ট্রাইবুনালে বলা হয়েছে, ভারত ও হল্যান্ডের মধ্যে একটি লগ্নি চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল। ভারত সরকার ভোডোফোনের বিরুদ্ধে যে করের বোঝা চাপিয়েছিল, সেটা ভারত ও হল্যান্ডের মধ্যে লগ্নি চুক্তির বিরোধী। সরকার এই সংক্রান্ত কোনও টাকা সরকার ভোডাফানের থেকে আদায় করতে পারবে না, একইসঙ্গে ভারত সরকারকে আইনি খরচা বাবদ ভোডাফোনকে ৫৪.৭ লক্ষ টাকা দিতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দিল আন্তর্জাতিক এই আদালত। স্বাভাবিকভাবেই এই রায়ে ভোডাফোন একটি বড় জয় হাসিল করল।
ব্রিটিশ টেলিকম সংস্থায় হয়ে হেগে প্রতিনিধিত্ব করে ডিএমডি অ্যাডভোকেটস। ২০০৭ সালে ভোডাফোন সংস্থা হাচিসনকে কিনে নিয়েছিল। সরকার এই ক্রয়ের ওপর মোটা অঙ্কের করের বোঝা চাপায় ভোডাফোনের বিরুদ্ধে। যা মানতে অস্বীকার করে ব্রিটিশ টেলিকম সংস্থা। মনমোহন সরকার টিডিএস বাবদ মোট ১১ হাজার কোটি টাকা কর দিতে বলে ভোডাফোন কোম্পানিকে। তা দিতে রাজি না হওয়ায় ফাইন সহ ২০ হাজার কোটি টাকা ভোডাফোনের থেকে চেয়ে বসে তৎকালীন ভারত সরকার। এরপরেই আদালতে মামলা করে ভোডাফোন। সুপ্রিম কোর্টে প্রথম এই মামলা নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানেও পরাজিত হয়েছিল কেন্দ্র। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অর্থমন্ত্রক তরফে রেট্রোস্পেকটিভ ভাবে আইন সংশোধন করার কথা ভাবা হয় সেই সময়। যার ফলে টাকা দিতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ সংস্থা ভোডাফোন।
কিন্তু এরপর রেট্রোস্পেকটিভ ট্যাক্স নিয়ে হইচই শুরু হয় কর্পোরেট মহলে। ভোডাফোন ছাড়াও অন্যান্য একাধিক সংস্থার সঙ্গে ভারত সরকারের সংঘাত শুরু হয়। ২০১৪ সালে মামলা যায় আন্তর্জাতিক আদালতে। ভোডাফোন ভারত সরকারের বিরুদ্ধে প্রমাণ সমেত ক্ষোভ উগরে দেয়। শেষমেশ জয় পেল ভোডাফোন। কিন্তু এরকম একাধিক কোম্পানির সঙ্গে ভারত সরকারের একাধিক মামলা ঝুলে রয়েছে। রায়ে পরাজিত হলে দেশের রাজকোষ থেকেই সেই টাকা দিতে হবে। যার বেশির ভাগটাই আসে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে।