পেটের জ্বালা! চোলাই মদ বেচে চাল কিনছেন জাতীয় ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ন বিমলা

পেটের জ্বালা! চোলাই মদ বেচে চাল কিনছেন জাতীয় ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ন বিমলা

রাঁচী: অভাব মানুষকে দিয়ে অনেক কিছুই করায়৷ সেই উদাহরণ আকছার আমরা দেখে থাকি৷ ঝাড়খন্ডে জাতীয় ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ন বিমলা মুন্ডা৷ ঘরে তাণর একগুচ্ছ মেডেল৷ কিন্তু দারিদ্রতার প্যাঁচে পড়ে এখন মদ বেচছে বিমলা দেবী৷ দুবেলা দুমুঠো অন্ন জোগানেোর জন্য কী না করতে হচ্ছে এই জাতীয় স্তরের ক্যরাটে চ্যাম্পিয়নকে৷ বর্তমানে হাড়িয়া বিক্রি করে অন্ন সংস্থান করছেন বিমলা মুন্ডা৷ বছর ছাব্বিশের বিমলা জানিয়েছেন, লকডাউনের জেরে চরম আর্থিক দুরাবস্থার সম্মুখীন হয় তাঁর পরিবার৷ যার ফলে নিজের পরিবারকে বাঁচাতে হাড়িয়ার ব্যবসা করতে বাধ্য হন তিনি৷ বিমলা আরও জানিয়েছেন এই উপার্জন থেকে নিজের ক্যারাটে প্রাকসিটও চালু রেখেছেন তিনি৷

বিমলা জানিয়েছেন, ক্যারাটের ক্ষেত্রে প্রতিটা টুর্নামেন্টের অংশগ্রহণ করার জন্য নিজের পকেট থেকেই টাকা দিয়ে হয়৷ এমনকি টুর্নামেন্টে যাওয়ার জন্যও খরচ করতে হয় প্রতিযোগীকেই৷ তাঁর কথায়, একগুচ্ছ মেডেল রয়েছে তাঁর৷ কিন্তু সেগুলো রাখার জায়গা নেই ঘরে৷ যার ফলে অযত্নে অনেক মেডেলই ভেঙে গিয়েছে৷ বিমলার মা আগে শ্রমিকের কাজ করত৷ তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেই কাজও করতে পারেন না তিনি৷ ফলে বিমলাকেই ধরতে হয় সংসারের হাল৷ অ্যাকাউন্টে স্নাতক পাশ করেছেন বিমলা মুন্ডা৷ একইসঙ্গে পঞ্চম শ্রেণী থেকে ক্যারাটে শিখেছেন তিনি৷ ২০০৮ সালে প্রথম টুর্নামেন্ট খেলেন বিমলা৷ সেই টুর্নামেন্টে জিতে জেলাস্তরের মেডেল পান তিনি৷

৩৪ তম ন্যশানাল গেমস-এ রূপোর পদক পান বিমলা৷ তিনি ভেবেছিলেন এরপর হয়ত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোনও স্কলারশিপ বা চাকরি পাবেন তিনি৷ কিন্তু তেমনটা হয়নি৷ সরকারের কাছ থেকে কোনও সাহায্যই পাননি তিনি৷ শেষ পর্যন্ত কোনও উপায় না দেখে হান্ডিয়া বেচার সিদ্ধান্ত নেন বিমলা৷ নিজের মায়ের সঙ্গে হান্ডিয়া বেঁচেই সংসার চালাচ্ছে জাতীয় স্তরের এই খেলোয়ার৷ টুইটারে বিমলার এই সংগ্রামের গল্প পোস্ট করেন স্থানীয় এক সাংবাদিক৷ যা নজরে আসে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের৷ এরপরই ওই জেলার ডেপুটি কমিশনারকে ক্রীড়া সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে জরুরী পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + eight =