‘‘যারা শান্তির ভাষা বোঝে না, তাদের ‘আপনে’ ভাষাই জবাব দেওয়া হবে’’

‘‘যারা শান্তির ভাষা বোঝে না, তাদের ‘আপনে’ ভাষাই জবাব দেওয়া হবে’’

নয়াদিল্লি: রীতি বজায় রেখে এবারও সেনা জওয়ানদের সঙ্গে দীপাবলি উদযাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ এদিন সকালে রাজস্থানের জয়সলমীর সীমান্তে সেনা জওয়ানদের মাঝে উপস্থিত হন নমো৷ সেনা জওয়ান ও তাঁদের আত্মবলিদানকে তিনি কুর্নিশ জানান৷ এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন চিফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত এবং সেনা প্রধান এমএম নারাভানে৷ 

আরও পড়ুন- করোনা রুখতে সুখবর দিচ্ছে ‘কোভিশিল্ড’! ভারতে শুরু ‘স্পুটনিক ভি’র ট্রায়াল

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর থেকে প্রতিবছরই সেনা জওয়ানদের সঙ্গে দেওয়ালির উৎসব পালন করেন প্রধানমন্ত্রী৷ এটাই রীতি হয়ে গিয়েছে৷ এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি৷ জয়সলমীরের লঙ্গেওয়ালায় বিএসএফ পোস্টে উপস্থিত হন তিনি৷ তবে দীপাবলির আগে গতকাল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভারত পাক সীমান্ত৷ সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে একাধিক জায়গায় গুলিবর্ষণ করে পাক রেঞ্জার্স৷ তবে তাদের ভাষাতেই যোগ্য জবাব দেয় ভারত৷ জবাবি গুলিতে প্রাণ হারান পাক বাহিনীর ১১ জন সেনা৷ এদিন ভারতীয় সেনাদের স্যালুট জানিয়ে নমো বলেন, তুষার ঘেরা পাহাড় হোক বা শুষ্ক মরুভূমি, আপনাদের মাঝে না এলে আমার দেওয়ালি সম্পূর্ণ হয় না৷ আপনাদের মুখে হাসি দেখলে আমার আনন্দ দ্বিগুন হয়ে যায়৷ আজ দেশের মানুষ নিরাপদে তাঁদের দেওয়ালি পালন করতে পারছে আপনাদের জন্য৷ আমি তাঁদের শুভ কামনা, আশীর্বাদ এবং কৃতজ্ঞতা আপনাদের জানাতে চাই৷ আজ দেশের মানুষ যখন দেওয়ালি পালন করবে তখন আপনারা সীমান্তে দেশকে রক্ষা করছেন৷ এই দায়িত্ববোধ, ত্যাগ সত্যই প্রশংসনীয়৷ শুধু আপনারা নন, আপনাদের পরিবারের ত্যাগও প্রশংসাযোগ্য৷ সমগ্র দেশবাসী আপনাদের ধন্যবাদ জানায়৷  

নমো বলেন, ‘‘অনেকেই হয়তো ভাবেন মোদীজি কেন প্রতি বছর সেনা জওয়ানদের সঙ্গে দীপাবলি পালন করেন৷ আমাকে একটা কথা বলুন, দীপাবলি তো পরিবারের লোকেদের সঙ্গে, আপনজনদের সঙ্গে  পালন করা হয়৷ সেই কারণেই প্রতি বছর আমি আপনাদের সঙ্গে দীপাবলি পালন করি৷ কারণ আপনারাই আমার পরিবার৷ আমি আপনাদের জন্য মিষ্টি নিয়ে আসি৷ তবে এই উপহার শুধু আমার তরফ থেকে নয়, ১৩০ কোটি দেশবাসীর তরফ থেকে৷’’ ভারতের দীর্ঘ সীমান্তে একাধিক দেশ রয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রীর কথায়, এর মধ্যে যদি একটি সেনা পোস্টের নামও দেশর মানুষ জেনে থাকে তাহলে সেটা লোঙ্গেওয়ালা৷ এই লোঙ্গেওয়ালার যুদ্ধের কথা প্রত্যেক ভারতীয় জানে৷ আর যখনই লোঙ্গেওয়ালার কথা ভাবি, তখনই মনে পড়ে একটাই কথা, ‘জো বলে সো নিহাল, সসরিয়াকাল৷’ 

আরও পড়ুন- বড়সড় সাফল্য ভারতের, ওড়িশা উপকূলে মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ

মোদী বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনা যখন বাংলাদেশের মানুষের উপর নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছিল, মা-বোনেদের সম্ভ্রম লুঠ করছিল, সেই সময় হয়েছিল লোঙ্গেওয়ালা যুদ্ধ৷  পাকিস্তান মনে করেছিল ভারতের পশ্চিম সীমান্তে যুদ্ধের দামাম বাজিয়ে সারা বিশ্বের দৃষ্টি সেই দিকে ঘুরিয়ে দেব৷ অন্যদিকে পূর্ব প্রান্তে চলতে থাকবে তাদের নৃশংস অত্যাচার৷ কিন্তু তাদের সেই উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি৷ ভারতের কাছে পরাজিত হয়েছিল পাকিস্তান৷ আগামী বছর ১৯৭১-এর যুদ্ধের ৫০ বছর পূর্তি হবে৷ সেই কারণেই আজ এই সীমান্তে আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি৷ 

নমো আরও বলেন, যারা পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে ইতিহাস সেই সকল দেশকেই শিক্ষা দিয়েছে৷ তারা জানে চলার পথে কী ভাবে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়৷ ভারতের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বাহিনী রয়েছে৷ দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ করতে সাহায্য করেছে৷ আজ কোনও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলে, ভারতী দ্বিধা করবে না৷ শক্রুদের কড়া জবাব দেবে৷ যাঁরা শান্তির ভাষা বোঝে না, তাদেরকে তাদের ভাষাতেই জবাব দেওয়া হবে৷ তা মাটিতেই হোক বা আকাশ পথে৷ সীমান্তে দ্রুত পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে৷ এছাড়াও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, অস্ত্র ও গোলাবারুদ, যন্ত্রপাতি সীমান্তে আনা হচ্ছে৷ ভারতের মাটিতে এই সকল সরঞ্জাম তৈরির চেষ্টা চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷     

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − three =