প্রতিবাদ, নাকি রাজনৈতিক হিংসার বলি তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস?

কলকাতা: ভর সন্ধ্যায় সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নামতেই দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে খুন তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস৷ তৃণমূল বিধায়ক খুনের ঘটনায় লোকসভা ভোটের আগে ফের সরগরম বঙ্গ রাজনীতি৷ তুঙ্গে রাজনৈতিক উত্তেজনা? কিন্তু, কেন ঘটল এই ঘটনা? খুনের পিছনে ঠিক কী কী কারণ থাকতে পারে? শুরু হয়েছে তদন্ত৷ এই খুনের পিছনে বেশ কয়েকটি ঘটনা ভাবাচ্ছে স্থানীয়দের৷

প্রতিবাদ, নাকি রাজনৈতিক হিংসার বলি তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস?

কলকাতা: ভর সন্ধ্যায় সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নামতেই দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে খুন তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস৷ তৃণমূল বিধায়ক খুনের ঘটনায় লোকসভা ভোটের আগে ফের সরগরম বঙ্গ রাজনীতি৷ তুঙ্গে রাজনৈতিক উত্তেজনা? কিন্তু, কেন ঘটল এই ঘটনা? খুনের পিছনে ঠিক কী কী কারণ থাকতে পারে? শুরু হয়েছে তদন্ত৷

এই খুনের পিছনে বেশ কয়েকটি ঘটনা ভাবাচ্ছে স্থানীয়দের৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বভাবে প্রতিবাদী চরিত্রের তরুণ এই বিধায় বেশ কিছু দিন দু’টি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন৷ প্রথমত, বাংলাদেশ থেকে আসা চুর্নি নদীর জল দূষিত নিয়ে বরাবর সরব হয়ে এসেছিলেন এই তৃণমূল বিধায়ক৷ খোদ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চুর্নি নদীর জল দূষণের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানান৷ সমস্যা সমাধানে মুখ্যমন্ত্রীকেও অভিযোগ জানান তিনি৷ জানান চুর্নি নদীর জল দূষণের জেরে নদীয়া জেলার মাজদিয়া, শিবনিবাস, হাঁসখালী, বীরনগর, আড়ংঘাটা, রানাঘাট, চাকদহ দিয়ে প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ নদী দূষণের পাশাপাশি বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধেও সবর ছিলেন তিনি৷

অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে নদীয়া জেলায় ধান কেনাবেচায় ফড়েদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ তুললেন তিনি৷ কৃষ্ণনগরে জেলা পরিষদের সভাগৃহে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা নিয়ে একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়। সেখানেই প্রশাসনিক কর্তাদের সামনে এই অভিযোগ তোলেন একাধিক বিধায়ক। পরে পার্থবাবু রবীন্দ্র ভবনে একটি দলীয় বৈঠকে ফড়েদের হুঁশিয়ারি দেন।

গত ২২ ডিসেম্বর কৃষ্ণনগরের জেলা পরিষদের সভাগৃহে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয়। সেখানে জেলার সমস্ত বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, এসডিও, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, বিধায়কদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনিক কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী রত্না ঘোষ, খাদি বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌরীশঙ্কর দত্ত। বৈঠকের শেষ দিকে যোগ দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে জেলায় ফড়েদের দৌরাত্ম্য নিয়ে অভিযোগ তুললেন শাসক দলের বিধায়করা।

বৈঠকে কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, চাষিদের কাছ থেকে ফড়েরা ধান নিয়ে নিচ্ছে। তারপর তারা সেই ধান সরকারি ক্যাম্পে বিক্রি করছে। প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকে ধান নেওয়া হচ্ছে না কেন? চাষিদের আয় বাড়াতে হলে তাদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনতে হবে৷ পরে, অভিযোগ শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷

স্থানীয়দের অনুমান, সম্ভবত বালি মাফিয়া ও ফড়েদের দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা জেরেই তাঁকে খুন হতে হয়েছে! বালি মাফিয়া ও ফড়েদের দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদ জানানো পাশাপাশি নদীয়া জেলায় আরএসএস ও বিজেপির উত্থানও ভাবিয়ে তুলছে শাসকদলের প্রতিনিধিদের৷ কারণ, কিছুদিন আগেই নদীয় জেলায় সভা করে তৃণমূল নেতৃত্বকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে যান গেরুয়া নেতারা৷ তা নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনাও ছড়িয়ে পড়ে৷ ফলে, এদিকে বালি মাফিয়া দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, ফড়েদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ও বিজেপির উত্থানের জেরেই কী খুন হতে হল তরুণ এই বিধায়ককে? প্রশ্ন ঘুরছে স্থানীয়দের মধ্যে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine + one =