বড়মা বীণাপাণি দেবীর সঙ্গে মমতার ‘সখ্যতা’ ও ‘রাজনীতি’

কলকাতা: মতুয়া মহাসংঘের বড়মা বীণাপাণি দেবীর জীবনাবসান। মঙ্গলবার রাত ৮টা ৫২ মিনিটে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বুধবার ভোর আটটায় এসএসকেএম থেকে বের করা হবে বড়মার মরদেহ৷ ওই দিন সকালে তাঁর দেহ যাবে ঠাকুরনগরের বাড়িতে৷ ঠাকুরবাড়িতেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য হবে৷ ১৯১৯ সালে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন বীনাপাণি দেবী। তারপর দেশভাগের সময় চলে আসেন ঠাকুরনগরে৷ মতুয়াদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

বড়মা বীণাপাণি দেবীর সঙ্গে মমতার ‘সখ্যতা’ ও ‘রাজনীতি’

কলকাতা: মতুয়া মহাসংঘের বড়মা বীণাপাণি দেবীর জীবনাবসান। মঙ্গলবার রাত ৮টা ৫২ মিনিটে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বুধবার ভোর আটটায় এসএসকেএম থেকে বের করা হবে বড়মার মরদেহ৷ ওই দিন সকালে তাঁর দেহ যাবে ঠাকুরনগরের বাড়িতে৷ ঠাকুরবাড়িতেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য হবে৷ ১৯১৯ সালে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন বীনাপাণি দেবী। তারপর দেশভাগের সময় চলে আসেন ঠাকুরনগরে৷

মতুয়াদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সখ্য’ ২০০৮ সাল থেকেই। রেলমন্ত্রী থাকাকালীনও নানা সময়ে ঠাকুরবাড়িতে ছুটে গিয়েছেন মমতা৷ নিজেও মতুয়া মহাসঙ্ঘের সদস্যপদ নিয়েছেন৷ রাজ্যে বিরোধী থাকাকালীনও সাংসদ-বিধায়ক কোটার টাকা ঠাকুরবাড়ির নানা উন্নয়নে ব্যয় করেছেন৷ রেলমন্ত্রী হিসাবেও ঠাকুরবাড়ির উন্নয়নে ‘মুক্তহস্ত’ ছিলেন মমতা৷ পরিবর্তনের সরকার গড়ার আগে বিধানসভা ভোটে রাজ্যে প্রথম যে আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল তৃণমূল, সেটি হল গাইঘাটা। সেখানে বড়মার ছোট ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরকে প্রার্থী ঘোষণা করেন মমতা৷ পরে মঞ্জুলকে মন্ত্রীও করেছেন৷ পরে, ঠাকুরবাড়ির উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে বহু ঘটনা৷ মঞ্জুলকে বিবাদ দিয়ে মমতার কাছে পৌঁছে গিয়েছে মমতা বালাঠাকুর৷  জন্মশতবর্ষে মতুয়াদের বড়মা বীণাপানি দেবীকে বিশেষ বঙ্গবিভূষণে ভূষিত করে তৃপ্ত মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে বড়মাকে সম্মানিত করে গেলাম৷ এর থেকে আমার হাতে আর বেশি কিছু দেওয়ার নেই৷’’

দেশ ভাগের পরে এ রাজ্যে নমঃশূদ্ররা বঞ্চিতই বলা চলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম ঠাকুরনগরে গিয়ে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক নিজের দিকে টানার চেষ্টা করেছিলেন। তখনও রাজ্যে শাসকদল বামফ্রন্ট। বামফ্রন্টের এক মন্ত্রীও দৌত্য করেছিলেন ঠাকুরনগরে মতুয়াদের প্রধান ‘বড়মা’ বীণাপানি দেবীর কাছে। তবে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির একাধিক সদস্য ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে।

সম্প্রতি নমঃশূদ্রদের উন্নয়নের জন্য বোর্ড তৈরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণের জন্য শতায়ু বীণাপানি দেবীকেই বেছে নিয়েছেন। এটা মতুয়া তথা নমঃশূদ্রদের মন জয় করার জন্য তাঁর মাস্টারস্ট্রোক। দেশভাগের পরে ও বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সময়ে যে সব হিন্দু এ দেশে এসেছেন তাঁদের কথা ভেবে বিজেপি সরকার বিল আনছে। এ রাজ্যেও নাগরিক পঞ্জীকরণ হবে বলে বারে বারে ঘোষণা করেছেন বিজেপির নেতারা। এর ফলে সীমান্তবর্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ হওয়ার দিকে যাচ্ছিল, বিশেষ করে যে সব জায়গায় সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ ঘটেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরপর কয়েকটি পদক্ষেপ বিজেপি সেই আশায় জল ঢালছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + 7 =