নয়াদিল্লি: কৃষি বিলের বিরুদ্ধে ক্রমশ তীব্র হচ্ছে বিদ্রোহের আগুন৷ এরই মধ্যে কৃষকদের নিয়ে ভার্চুয়াল কনফারেন্স করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ দেশের ৯ কোটি কৃষককে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ১৮ হাজার কোটি টাকা পৌঁছে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন তিনি৷ কথা বললেন ৬ রাজ্যের কৃষকদের সঙ্গে৷ সেইসঙ্গে একহাত নিলেন বিরেধীদের৷ তাঁর অভিযোগ, নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্যই কৃষি আইন নিয়ে বিভ্রান্তি ছাড়াচ্ছে বিরোধীরা৷
আরও পড়ুন- একটু সময় দিন, কার্যকরী না হলে সরকার সংশোধন করে নেবে! কৃষি আইন প্রসঙ্গে রাজনাথ
পিএম কিষান সম্মান নিধি যোজনায় অধীনে প্রতি বছর ৬ হাজার টাকা করে পান কৃষকরা৷ এই টাকা সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়৷ কিষান ক্রেডিট কার্ডেরও একাধিক সুবিধা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি জানান, এর মাধ্যমে কম সুদে ঋণ পেতে পারেন কৃষকরা৷ কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার সময় পশ্চিমবঙ্গকে নিশানা করেন নমো৷ তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা কেন্দ্রের এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছে৷ বাংলাই একমাত্র রাজ্য যারা কৃষকদের কাছে এই প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছতে দেয়নি৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ বাংলাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে৷ কৃষকদের বিরুদ্ধে তাঁর পদক্ষেপে আমি ব্যথিত৷ কেন কৃষকরা এই বিষয়ে চুপ রয়েছেন? কেন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন না?’’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে টাকা পাচ্ছে না কৃষকরা৷ একথা দেশের সামনে বলতে আমার কষ্ট হচ্ছে৷’’
মধ্যপ্রদেশের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন নরেন্দ্র মোদী বলেন৷ নাম না করেই কংগ্রেসকে নিশানা করেন তিনি৷ নমো বলেন, ‘‘রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে৷ যাঁরা কৃষকদের জন্য আজ কুম্ভীরাশ্রু ফেলছেন, ক্ষমতায় থাকার সময় তারা কোন কাজটা করেছে? তাদের নীতি গরিবকে আরও গরিব করেছে৷ কৃষকদের দুরবস্থা দেখার পরও মুখ ফিরিয়ে রেখেছে৷’’ তাঁর কথায়, ওঁরা কেরলে, পশ্চিমবঙ্গে কৃষকদের স্বার্থে আন্দোলন করে না, অথচ পাঞ্জাবে গিয়ে কৃষকদের ভুল বোঝায়।
আরও পড়ুন- NRC অসম্পূর্ণ, হিন্দুদের সুবিচার মেলেনি! বিস্ফোরক বিজেপি নেতা
মোদী বলেন, মানুষ যে রাজনৈতিক দলগুলিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাঁরা নিজেদের স্বার্থে মিথ্যা প্রচারে নেমেছে৷ স্বার্থের জন্য কৃষকদের নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে৷ নতুন কৃষি আইনে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য থেকে বঞ্চিত হবেন না কৃষকরা৷ কোনও মান্ডি বন্ধ হবে না৷ কৃষকের সঙ্গে চুক্তি হলে চুক্তিকারী কৃষককে টাকা দিতে বাধ্য৷ আগের সরকারের আমলে কৃষকদের উন্নতি হয়নি৷ আমরা নতুন রণকৌশল নিয়ে কাজ করছি৷ তাঁর অভিযোগ, বিরোধীরা কৃষকদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি চালানোর চেষ্টা করছেন। তবে কংগ্রেস তো বটেই এদিন তাঁর নিশানায় ছিল বামেরাও৷
কিছু মানুষ কৃষকদের বিভ্রান্ত করে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করতে চাইছে৷ দিল্লির মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করতে চাইছে৷ কংগ্রেসকে বিঁধে তিনি বলেন, ‘‘কেউ কেউ কৃষকদের জমি নিয়ে আজকাল একটু বেশিই চিন্তা করছে৷ কিন্তু কৃষকদের জমি কেলেঙ্কারিতে কাদের নাম জড়িয়ে তা সবাই জানে৷’’
তাঁর আশ্বাস, নতুন কৃষি আইনে কৃষকরা মান্ডির পাশাপাশি যেকোনও জায়গায় ফসল বিক্রি করতে পারবেন৷ কৃষকদের স্বার্থ কোনও ভাবে বিঘ্নিত হবে না৷ এতে কৃষকদের কোনও ঝুঁকি থাকবে না৷ ঝুঁকি থাকবে সংস্থাগুলির৷ তাই কৃষকদের কোনও প্রকার মিথ্যে প্ররোচনায় পা না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি৷ তাঁর কথায়, আত্মনির্ভর কৃষকই আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে পারবে৷