কৃষক বিদ্রোহ: অধরা সমাধান, পিছিয়ে গেল পরবর্তী বৈঠক

কৃষক বিদ্রোহ: অধরা সমাধান, পিছিয়ে গেল পরবর্তী বৈঠক

4acc93cd7e730acd9be641ff4d6887c5

নয়াদিল্লি: সপ্তম দফার বৈঠকেও কাটল না জট, শুক্রবার ফের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন কৃষক নেতারা। বৈঠকেও কেন্দ্রীয় সরকারের সংশোধনীর প্রস্তাব দেওয়া হয়, যদিও আগের মতোই তা পত্রপাঠ খারিজ করে দেন কৃষক নেতারা। কেন্দ্রীয় সরকারের আনা কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় বিক্ষোভরত কৃষকরা। তাঁদের দাবি পূরণ না হলে, ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে ট্রাক্টর নিয়ে মিছিল করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভরত কৃষকরা। তবে সরকারের তরফে তাঁদের রাজি করানোর চেষ্টা অব্যাহত। তবে ৮ জানুয়ারি ফের বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছে দুপক্ষই।

বিজ্ঞানভবনে বৈঠক শুরুর আগে, বিক্ষোভ চলাকালীন প্রয়াত কৃষকদের স্মৃতিতে নীরবতা পালন করা হয় সরকার ও কৃষক নেতাদের তরফে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিযুষ গোয়েল, নরেন্দ্র সিং তোমর, সোম প্রকাশ সহ আধিকারিকরা। বৈঠকের পর ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকাইত বলেন, আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত বিভিন্ন সীমানায় বিক্ষোভরত কৃষকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ নূন্যতম সহায়ক মূল্য এবং তিনটি আইন প্রত্যাহার করা  নিয়ে আলোচনা৷ আইন প্রত্যাহার না করলে বাড়ি ফিরব না।’’

এর আগে রাকেশ টিকাইত দাবি করেন, বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে ৬০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, প্রতি ১৬ ঘণ্টায় একজন করে কৃষকের মৃত্যু হচ্ছে এবং সরকারকে তার উত্তর দিতে হবে। কিষাণ মজদুর সংঘর্ষ কমিটির নেতা সারওয়ান পান্ধের উপস্থিত ছিলেন এদিনের বৈঠকে। তিনি জানান, কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর এখনও বলছেন এই কৃষি আইন চাষিদের মঙ্গলের জন্যই। বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর বলেন, ‘‘সরকার চায়, কৃষক সংগঠনগুলি তিনটি আইনের যে বিষয়গুলিতে আপত্তি রয়েছে, তা নির্দিষ্টভাবে তুলে ধরুক৷’’ 

তাঁর কথায়, ‘‘বৈঠকের পর আমার আশা, পরবর্তী বৈঠকে আমাদের অর্থবহ আলোচনা হবে এবং আমরা একটা সাারমর্মে পৌঁছাতে পারব।’’ যদিও বৈঠকে উপস্থিত সারা ভারত কৃষক সভার নেতা হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘আইন প্রত্যাহার করা ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে আমরা আলোচনা করতে চাই না। আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সরকার প্রচণ্ড চাপে রয়েছে। আমরা জানিয়ে দিয়েছি, আইন প্রত্যাহার করাই আমাদের দাবি।’’ ৮ জানুয়ারি পরবর্তী বৈঠক হবে কৃষক নেতা ও কেন্দ্রীয় সরকারের৷  কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় দিল্লির চার সীমানায় বিক্ষোভরত কৃষকরা। তাঁদের দাবি একটাই, কোনওরকম বিকল্প বা সংশোধনী নয়, তিনটি আইনই প্রত্যাহার করতে হবে। বৈঠকের আগেও এমনই কড়া অবস্থান জানিয়েছিল কিষাণ মজদুর সংঘর্ষ কমিটি। এদিনের বৈঠকে কৃষকদের দাবিগুলি খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিল কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারপক্ষের দাবি, তারা চায়, ইংরাজি নববর্ষ বাড়িতেই পালন করুন কৃষকরা। যদিও নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থানে অনড় কৃষকরা। প্রয়োজনে এক বছর ধরে অবস্থান করতেও রাজি আন্দোলনরত কৃষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *