শিলিগুড়ি: লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট সামনে আসার পর জোরকদমে ভোটপ্রচারে নেমে পড়েছে প্রায় সব দলই। এবার দার্জিলিঙে কংগ্রেস প্রার্থী শংকর মালাকারের হয়ে ভোটপ্রচারে আসছেন রাহুল গান্ধি। কালিম্পঙে রাজ বব্বর, কমল নাথ। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে রাহুল গান্ধির বাংলা সফরের কথা জানিয়েছেন শংকরবাবু।
দার্জিলিঙে তাঁর বিপরীতে প্রার্থী তৃণমূলের অমর সিং রাই ও সিপিএমের সমন পাঠক। এবিষয়ে শংকর মালাকার বলেন, “পাহাড়ের জন্য বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস কিছুই করেনি। দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া পাহাড়কে ললিপপ খাইয়েছেন। পাহাড়ের বেকার সমস্যা, জলের সমস্যার সমাধান হয়নি। রাস্তাঘাটের সমস্যাও মেটেনি।” দার্জিলিং লোকসভা আসনে লড়াই এবার হাড্ডাহাড্ডি হচ্ছে। এখানে পঞ্চমুখী লড়াইয়ের জন্য প্রার্থীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কারণ তৃণমূল কংগ্রেস এই আসনে পাহাড়ের বাসিন্দা অমর সিং রাইকে আগেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বামেরা গতকাল এই আসনে সিপিএমের সমন পাঠককে প্রার্থী করেছে। কংগ্রেস মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শংকর মালাকারকে প্রার্থী করেছে। এদিকে বিজেপি এখনও প্রার্থী ঘোষণা না করলেও এই সপ্তাহেই তারা প্রার্থী ঘোষণা করে দেবে।
স্বাভাবিকভাবেই এই চারটি বড় রাজনৈতিক দলের লড়াই তো হচ্ছেই পাশাপাশি এই আসনে পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলিরও প্রার্থী দেবে বলে স্থির করেছে। এদিকে জিএনএলএফ ইতিমধ্যেই বিজেপি’কে সমর্থন করার কথা জানিয়ে দিয়েছে। এসব কারণেই লড়াই এবার এখানে হাড্ডাহাড্ডি হচ্ছে। কংগ্রেস প্রার্থী শংকর মালাকারের দাবি, প্রচারের ক্ষেত্রে তিনি কোনওরকম ছুঁতমার্গ রাখবেন না। প্রয়োজনে বিরোধী প্রার্থীদের বাড়িতেও তিনি যাবেন।যদিও ওই আসনের জেতা যে কংগ্রেসের পক্ষে খুব কঠিন তা অনুমান করতে পারছেন প্রার্থী নিজেই। কারণ গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী বিজেপি’র সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ৮৮ হাজার ২৫৭টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তৃণমূলের বাইচুং ভুটিয়া। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ২ লক্ষ ৯১ হাজার ১৮টি। অন্যদিকে তৃতীয় স্থানে থাকা এবারের প্রার্থী সমন পাঠক পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ১৮৬টি। সেক্ষেত্রে চতুর্থ স্থানে ছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী সুজয় ঘটক। তাঁর ভোট ছিল মাত্র ৯০ হাজার ৭৬টি।এদিকে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রে শংকরবাবু ভোট পেয়েছিলেন ৮৬ হাজার ৪৪১টি। তিনি জয়ী হয়েছিলেন।
স্বাভাবিকভাবেই তাঁর দাবি ওই বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই তিনি লিড পাচ্ছেন। তবে দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া এবং চোপড়ায় তাঁকে যথেষ্ট বেগ পেতে হতে পারে। পাহাড় নিয়ে সমীকরণে এবার ভোট ভাগাভাগি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করেছেন জেলাবাসী। ভোটের প্রচারে এবার পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি যে হালে পানি পাবে না সেটাও আগেভাগে বুঝিয়ে দিচ্ছেন পাহাড়ের বাসিন্দারা। রপাহাড় সমস্যা ও জিটিএ-র বিভিন্ন ইশুকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জিটিএ তৈরিতে কংগ্রেস সরকারের অবদান রয়েছে এই কেন্দ্রে। তবে এই জিটিএ কেই রাফ অ্যান্ড টাফ বানিয়েছে রাজ্য সরকার। এসব নিয়ে পাহাড়ের গ্রামে গ্রামে প্রচার করব।”