নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাসের উৎসস্থল হিসেবে গোটা বিশ্বের রোষের মুখে পড়েছিল চিন, এখনও তার রেশ কাটে নি। গত বছর করোনা অতিমারী সামাল দিতেই যখন হিমশিম খাচ্ছে বিশ্বের তাবড় দেশগুলি, তখন ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে চিন জন্ম দিয়েছিল নতুন বিতর্কের। লাদাখ সীমান্তে চুক্তি লঙ্ঘন করে লাল ফৌজের অতর্কিত হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ২০ জন ভারতীয় সেনার। এই চিনা আগ্রাসন মুখ বুজে মেনে নেয় নি দিল্লি।
চিনকে যোগ্য জবাব দিতে গত বছরেই ভারতের মাটিতে বহুল ব্যবহৃত চিনা অ্যাপ গুলির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় কেন্দ্রের তরফে। এর ফলে এদেশে চিনের বাণিজ্যে খানিক ভাঁটা পড়বে, এমনটাই দাবি করেছিল কেন্দ্র। ভারতের এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল চিন, এমনকি আইনি চ্যালেঞ্জের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল জি জিনপিংয়ের দেশ থেকে। কিন্তু কোনো কিছুতেই না দমে বজায় রাখা হল পূর্ব সিদ্ধান্তই। ভারতের মাটি থেকে মোট ৫৯টি চিনা অ্যাপ চিরস্থায়ী ভাবে নিষিদ্ধ করল কেন্দ্র সরকার।
জানা গেছে, কেন্দ্রের তরফ থেকে নিষিদ্ধ করা চিনা অ্যাপ গুলির মধ্যে রয়েছে বহুল ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয় কিছু অ্যাপ, যা ভারতীয় ব্যবহারকারীদের মুঠোফোনে ছিল অপরিহার্য। এই তালিকায় রয়েছে আলিবাবার ইউসি ব্রাউজার (UC Browser), উই চ্যাট (WE chat), বাইডু (Baidu), বিগো লাইভ (BIGO Live), ক্লাব ফ্যাক্টরি (Club Factory),এম আই ভিডিও কল (MI Video call) এমনকি টিকটকের (Tiktok) মতো অ্যাপও।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ভারতীয় ইন্টারনেট পরিষেবায় এই সমস্ত নিষিদ্ধ চিনা অ্যাপগুলিকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। গত জুন মাসের শেষ থেকে ভারত সরকার এই অ্যাপগুলি বাতিল করার কাজ শুরু করেছে। আইটি আইনের (IT act) ৬৯এ ধারার ভিত্তিতে এই সমস্ত অ্যাপ্লিকেশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতায় হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বস্তুত, অ্যাপগুলির বিরুদ্ধে ভারত সরকার যে সমস্ত অভিযোগ এনেছে তার ভিত্তিতে আইটি মন্ত্রক সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু তা খুব একটা লাভদায়ক হয় নি বলেই জানা গেছে সূত্রের খবর মারফত। দেখা গেছে তাদের গোপনীয়তা রক্ষা, তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতি এমনকি তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতেও রয়েছে গোলমাল। নিষিদ্ধ অ্যাপের তালিকায় রয়েছে শেয়ার ইট (Share it), লাইক (Likee) প্রভৃতি অ্যাপও।