‘একার পক্ষে জামাকাপড় খুলে ধর্ষণ করা সম্ভব নয়’, ধর্ষণে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস

‘একার পক্ষে জামাকাপড় খুলে ধর্ষণ করা সম্ভব নয়’, ধর্ষণে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস

মুম্বই: একের পর এক রায়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালার বেঞ্চকে কেন্দ্র করে। পকসো আইনের বিতর্কিত রায়ের পর এবার ধর্ষণ বিরোধী রায় ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷  কোনোরকম ধস্তাধস্তি ছাড়া একা একজন ব্যক্তির পক্ষে ধর্ষণ করা সম্ভব নয়, জানিয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে বেকুসুর খালাস করে দিলেন বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা। সেই বিচারক, যার দুই সপ্তাহ আগে পকসো আইন নিয়ে দেওয়া রায় নিয়ে তোলপাড় হয়ে গিয়েছে গোটা দেশ।

২০১৩ সালের ২৬ জুন বছর ২৬-এর প্রতিবেশী সুরজ কাসাকারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন নিগৃহীতার মা। অভিযোগ ছিল, নিগৃহীতার বয়স যখন ১৫ বছর তখন তাকে তার বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণ করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে আদালতে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। অভিযুক্ত সুরজ কাসাকারের আইনজীবী অবশ্য দাবি করেন, উভয়পক্ষের সম্মতিতেই যৌন সম্পর্ক স্থাপন হয়েছিল এবং ঘটনার সময় মেয়েটির বয়স ছিল ১৮। নিম্ন আদালত অভিযুক্তকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়।

দুই পক্ষের অভিযোগ শোনার পর রায় দেন বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা। তিনি জানান, “প্রথমত, মেয়েটির বয়স সেই সময় ১৫ বা তার কম ছিল এ বিষয়ে কোনও মজবুত প্রমাণ দিতে পারেনি অভিযোগকারিণীর আইনজীবী। মেডিক্যাল রিপোর্টেও তা স্পষ্ট নয়। দ্বিতীয়ত, দু’পক্ষের মধ্যে কোনও ধস্তাধস্তির চিহ্ন ছিল না। এটা কী জোর করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন হয়েছিল? মেডিক্যাল রিপোর্টেও ধস্তাধস্তির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’’

ধর্ষণে অভিযুক্তের ১০ বছরের কারাদণ্ড খারিজ করে তাকে বেকসুর খালাস করে দিয়ে বেঞ্চ জানিয়েছে, “কোনও একজন লোকের পক্ষে একা কোনও মেয়ের কন্ঠরোধ করে তার ও নিজের পোষাক খুলে কোনোরকম ধস্তাধস্তি ছাড়া ধর্ষণ করা প্রায় অসম্ভব। কড়া শাস্তির জন্য কড়া প্রমাণও প্রয়োজন হয়। এসব কেসে অভিযোগকারিণীর বয়ান শেষ কথা হলেও এক্ষেত্রে নিগৃহীতার দূর্বল জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে অভিযুক্তকে ১০ বছরের কারাবাস দেওয়া ঠিক হবে না।”

ক’দিন আগেই বোম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ পকসো আইন নিয়ে একটি মামলার শুনানিতে রায় দিয়েছিল। রায়ে বলা হয়েছিল, “নাবালিকার হাত ধরা বা প্যান্টের জিপ খুলে যৌনাঙ্গ দেখানো যৌন হেনস্থার মধ্যে পড়বে না। যৌন নির্যাতনের জন্য ‘স্কিন টু স্কিন কনট্যাক্ট’ বা ত্বকের সঙ্গে ত্বকের স্পর্শ হতে হবে।” এই রায় দেওয়ার পরই তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল গোটা দেশ। একইসঙ্গে বিরক্তি ও ক্ষোভের প্রকাশ দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।  এরপরও ধর্ষণ নিয়ে নতুন রায় দিয়ে সেই বিতর্ক আবার আরও একবার উস্কে উঠেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − 6 =