নয়াদিল্লি: অমিত শাহের শান্তিনিকেতন সফরের চেয়ার-বিতর্কের জল ক্রমশ গড়াতে গড়াতে পৌঁছে গেছে দিল্লির সংসদ অব্দি। আর এবার সেই জল নিজের হাতে তুলে নিতে সামনে এলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবার লোকসভায় বক্তব্য রাখার সময় স্পিকারের কাছে দুটি প্রিন্টেড ছবি পেশ করেন৷ বলেন, তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত চেয়ারে বসেননি, তিনি বসেছেন জানলার একটি অংশে, যেখানে যে কেউই বসতে পারে।
মঙ্গলবার লোকসভার অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “অধীর রঞ্জন চৌধুরীর ভাষণে তোলা অভিযোগ সম্পুর্ন ভিত্তিহীন। বাংলা সফরে আমি ও নাড্ডাজি গিয়েছিলাম। আমরা শান্তিনিকেতনেও গেছিলাম। কিন্তু সেখানে ঠাকুরের চেয়ারে বসিনি আমি৷” এই প্রসঙ্গে শাহ আরও বলেন, “সংসদের রেকর্ডে ভুল তথ্য থাকা উচিত নয়। তাই একজন সাংসদ হিসেবে সত্যিটা প্রকাশ করার দায়িত্ব পালন করছি আমি৷”
গত ২০ জানুয়ারি বঙ্গ সফরে এসে রবি-ভূমি শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীতে আসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরাল হয়, যাতে দাবি করা হয় যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত চেয়ারে বসে লিখছেন কিছু। এই নিয়ে বাংলার রবীন্দ্র ভাবাবেগ আহত হয়, শুরু হয় রাজনৈতিক তর্জা। কিন্তু সেসময় বিজেপির একাংশ দাবি করে, ওই চেয়ার ‘ক্যাটাগরি-২’ বিভাগের, অর্থাৎ এগুলি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহার করা জিনিস নয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার শাহ সংসদের নিম্নকক্ষে বলেন, “আমি পরে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের কাছে জেনেছিলাম, আমি কোন চেয়ারে বসেছিলাম। উনি আমাকে বলেছিলেন, এই চেয়ার ঠাকুরের ব্যবহৃত নয়৷” পাশাপাশি এদিন শাহ কয়েকটি প্রিন্টেড ছবি পেশ করে ঘোষণা করেন, এই ‘ক্যাটাগরি-২’ চেয়ারে এই আগেও বসেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপরই কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে শাহ বলেন, “লোকসভায় কোনো কথা বলার আগে তার সত্যতা যাচাই করা উচিত। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ভুল তথ্য তুলে সংসদে পেশ করলে তা সংসদকে অবমাননা করা হয়৷” এছাড়াও ইতিহাসের পাতা উল্টিয়ে দুটি ছবি দেখিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এই দুই ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে জওহরলাল নেহেরু এবং রাজীব গান্ধী যে চেয়ারে বসে আছেন তাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বসতেন৷”