আজ বিকেল: ভোট আসতেই ফের সাড়া ফেলেছে একাই একশো মমতা। শুনে খটকা লাগছে কি? লাগলেও পাত্তা দেবেন না। এটি যে সে বই নয়। এই বই হল হাওড়া বর্ধমান রুটের ছড়াকার হকার ভাইদাসের বই। ৯৮ সালে যে ছড়ার বই লিখে তিনি সংশ্লিষ্ট শাখার ট্রেন রুটে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
নিজের লেখা ছড়া পরিবেশন করে নিত্যযাত্রীদের মন জয় করাতে ভাই দাসের জুড়ি নেই। থাই ভোট এলেই একাই একশো মমতা ভালোই বিকোয়। এবার ভোটের বাজারের চাহিদা বুঝে ভাইদা আরও দুটি ছড়ার বই এনেছেন। একটি হল মোদির ভয়ে কাঁপে দাউদ ও অন্যটি উন্নয়নের প্রতীক নরেন্দ্র মোদি। প্রথমটি ৫০ হাজার কপি ছাপানো হয়েছে। পরের দুটি হিন্দি ও বাংলা মিলিয়ে ২০ হাজার কপি। এখনও পর্যন্ত ভালোই বিকোচ্ছে এই বই। চুঁচুড়া থেকে ট্রেনে উঠেই রীতিমতো সুর করে ছড়া কাটতে থাকেন ভাই দাস। মুখচেনা যাত্রীরা আগ্রহভরে শুনতে শুনতেই কয়েকটা সংগ্রহ করে নেন। তাঁদের দেখাদেখি নতুন যাত্রীদের কেউ কেউ ভাইদাসের বই কেনেন। ওই শাখার অন্য হকাররাও ভাইদাসের জনপ্রিয়তা টের পেতে এই বই নিয়ে ফেরি শুরু করেছেন। ভোটের বাজারে ভালোই বিকোচ্ছে দুই রাজনীতিককে নিয়ে লেখা ছড়ার বই।
তাই বাদাম, ডালমুট, মশলামুড়ির পাশাপাশি ভাই দাসও এখন ট্রেনের কামড়ায় পরিচিত নাম। নিজের মুখেই পুরনো দিনের কথা শোনালেন এই হকার। বহুদিন থেকে হাঁড়া বর্ধমান শাখার ট্রেনে হকারি করছেন তিনি। ছড়া কেটে ফেরি করা তাঁর একটা ভাললাগা। ৯৭ সালে তৃণমূলের জন্ম হল, ৯৮-এর লোকসভা নির্বাচনে চুঁচুড়া থেকে ভোটে দাঁড়ালেন আকবর আলি খোন্কার। সেসময় সুন্দর্শন রায়চৌধুরি সিপিএমে ও কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। আকবর সাহেবের অনুপ্রেরণায় ছড়া লিখলেন ভাইদাস, সেই ছড়াই হুগলির গৃহস্থ বাড়ির দেওয়ালে ছেয়ে গেল। সেবার তৃণমূল জেতে। আকবর সাহেব আজ আর বেঁচে নেই। তিনিই ভাই দাসকে বলেছিলেন, ছড়া লিখে সেই বই ট্রেনের কামড়ায় ফেরি করতে। তাঁর কথাতেই একাই একশো মমতা লেখেন। এতে তৃণমূলনেত্রীর জীবন রাজনীতির সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও ছড়া সঙ্গে বেশকিছু নেতার ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে। সেই ১৫-১৬ পাতার বই দশ টাকাতে মানুষ আজও কিনছে। এবার বাজার বুজে মোদিকে নিয়েও দুটো বই ছেপেছেন তিনি। এখন তিনটেরই কাটতি বেশ ভাল।