রাফাল মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা কেন্দ্রের

নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের প্রথম দফার আগের দিন রাফাল মামলায় শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খেল মোদি সরকার। মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারকে ক্লিনচিট শীর্ষক রায়ের রিভিউ পিটিশনের বিরোধিতায় মোদি সরকারের প্রাথমিক আপত্তি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি ফাঁস হয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তিনটি নথিকেও মামলায় গ্রাহ্য করেছে শীর্ষ আদালত। রাফাল মামলার শুনানিতে গত ৬ মার্চ কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে জানায়,

রাফাল মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা কেন্দ্রের

নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের প্রথম দফার আগের দিন রাফাল মামলায় শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খেল মোদি সরকার। মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারকে ক্লিনচিট শীর্ষক রায়ের রিভিউ পিটিশনের বিরোধিতায় মোদি সরকারের প্রাথমিক আপত্তি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি ফাঁস হয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তিনটি নথিকেও মামলায় গ্রাহ্য করেছে শীর্ষ আদালত।

রাফাল মামলার শুনানিতে গত ৬ মার্চ কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে জানায়, রাফাল মামলা সংক্রান্ত নথি চুরি গিয়েছে। ইতিমধ্যে তার তদন্তও শুরু হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেল কে বেণুগোপাল বলেছেন, সেই চোরাই নথি হাতে নিয়ে রাপাল নিয়ে শীর্ষ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। সেইসব নথি গোপনীয় বলে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা ছিল। এতে সরকারি কর্মচারীরা জড়িত থাকতে পারেন। এটা সরকারি গোপনীয়তা আইন ভঙ্গ ও আদালত অবমাননার সামিল। রাফাল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ১৪ ডিসেম্বরের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জিতে একাধিক আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট শুনানি শুরু হয়৷ সুপ্রিম কোর্ট রাফাল চুক্তি নিয়ে তদন্তের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল আদালত। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি সঞ্জয় কল এবং বিচারপতি কে এম যোশেফের বেঞ্চ এই আর্জি শোনা হয়৷ এই চুরি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান বেণুগোপাল। চুরির ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর রাফাল ক্রয় চুক্তি নিয়ে আদালতের তত্ত্বাবধানে তদন্তের আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট৷ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়ে দেন, রাফাল সংক্রান্ত কোনও মামলার তদন্তের প্রয়োজন নেই৷ কারণ, এটি দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত৷ একই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, ৩৬টি রাফাল বিমান কেনার চ্যুক্তিতে কোনও দুর্নীতি হয়নি এনডিএ জমানায়৷ শুক্রবার মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ মামলা খারিজের সিদ্ধান্ত নেয়৷

বিমানের গুণমান ও অর্থিক সংক্রান্ত সমস্যা মেলেনি বলেও এদিন আদালতের তরফে জানানো হয়েছে৷ ফলে, এই বিষয়ের উপর তদন্তের কোনও প্রয়োজন নেই বলেও আদাতের তরফে জানানো হয়৷ ১২৬টি যুদ্ধ বিমান কেনার পরিবর্তে কেন ৩৬টি কেন হল, তা গোটা বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে৷ যেহেতু বিষয়টি জাতীয় সুরক্ষা প্রধান বিষয়, সেই কথাকেই মাথায় রেখেই আদালতের তরফে নজরদারিতে তদন্তের আবেদন খারিজ করে শীর্ষ আদালত৷

গত ১৪ নভেম্বর একগুচ্ছ আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই রায় স্থগিত রেখেছিল প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এই মামলায় প্রথম আবেদনটি ছিল আইনজীবী এম এল শর্মার। পরে আরও এক আইনজীবী বিনীত ধান্দা এই তদন্তটি আদালতের তত্ত্বাবধানে করার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। আপ নেতা সঞ্জয় সিংও ফ্রান্স থেকে ওই যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি নিয়ে আদালতে যান। তিনটি আবেদন দাখিল হওয়ার পরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা ও অরুণ শৌরি এবং আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ চুক্তিতে অনিয়ম হয়েছে দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে যান। তাঁরা আবেদন করেন, এই ঘটনায় সিবিআইকে এফআইআর দায়ের করতে নির্দেশ দিক সর্বোচ্চ আদালত। তবে কেন্দ্রের তরফে ৫৮ হাজার কোটি টাকার ৩৬টি রাফাল বিমান কেনার সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। ওই চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলেও কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট করা হয়। ভারতীয় বায়ুসেনার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ফ্রান্স থেকে অত্যাধুনিক ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছিল ভারত। সেই চুক্তিতে অনিয়ম হয়েছে বলে সরকারের উপর রাজনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করেছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। পাশাপাশি আইনি লড়াইও চলতে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 + eleven =