নয়াদিল্লি: সেনারা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে রক্ষা করেন দেশবাসীকে। সীমান্তে তাঁদের অতন্দ্র প্রহরাতেই নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারে দেশের মানুষ। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাই সম্মানে দেশের কাছে উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু এহেন শ্রদ্ধার পাত্রেও লাগল কালি। দুর্নীতির মেঘ থেকে রেহাই পেল না সেনাবাহিনীও।
ঘুষ নিয়ে দেশের নানা শহরেই চলছে সেনা কর্মী নিয়োগ, এদিন এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা সিবিআই। দেশের অন্তত ১৩টি শহরে তাঁরা তদন্ত চালিয়েছেন বলে জানা গেছে। আর তা থেকেই বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য। সেনা কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়িয়েছে অন্তত ২৩ জনের। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এহেন রিপোর্টে স্বভাবতই শুরু হয়ে গেছে ব্যাপক চর্চা।
সূত্রের খবর, দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআইয়ের জালে নাম জড়িয়েছে ৭ জন সেনা অফিসার, ৫ জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল, ১ জন সেনা মেজর এবং একজন লেফটেন্যান্ট অফিসারের। অভিযোগ, মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ব্যবস্থা করে দিতেন তাঁরা। উচ্চ পদস্থ অফিসাররা ছাড়াও ১৭ জন সেনা জওয়ানের নাম জড়িয়েছে ঘুষ ও দুর্নীতি কাণ্ডে। যে সার্ভিস সিলেকশন বোর্ডের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষা, ইন্টারভিউ এবং শারীরিক পরীক্ষা দিয়ে সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত হন প্রার্থীরা, সেই বোর্ডের ৬ জন ব্যক্তিও জড়িত দুর্নীতিতে, জানিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। যোগ্যতার পরীক্ষা ছাড়াই ঘুষ নিয়ে তাঁরা জওয়ানদের চাকরিতে নিয়োগ করতেন তাঁরাই। এছাড়া, দুর্নীতিগ্রস্ত বেশ কিছু এজেন্সিও। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, যোগ্যতা ছাড়াই যাঁরা এযাবৎ সেনাবাহিনীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে যাঁরা নিয়োজিত হয়েছেন তাঁদের হাতে দেশ কতটা সুরক্ষিত?
উল্লেখ্য, সেনা নিয়োগে যে বড়সড় দুর্নীতি চলছে তা বেশ কিছুদিন আগে সেনা মহলের অন্দর থেকেই জানানো হয়েছিল সিবিআইয়ের গোয়েন্দাদের। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গোয়েন্দা আধিকারিকরা ঘটনার তদন্তে নামেন। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁরা জানতে পারেন দুর্নীতি কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড হলেন একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল। এরপর একে একে উঠে আসে একাধিক অফিসারের নাম।