আজ বিকেল: শহর কলকাতার দূষণের মাত্রা বেশ ভয়ঙ্কর, বাতাসে ধূলিকণার হার দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এদিকে ভোট এলেই বাড়ে হানাহানি রক্তপাত, গুলি গোলা বোমার অন্ত থাকে না। গাড়িঘোড়ার চলাচলও বেড়ে যায়। এহেন পরিস্থিতি একেবারে বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাই ভোটকে যতটা সম্ভব পরিবেশ বান্ধব করা যায় ততটাই ভাল। আর সে কারণেই রাজনৈতিক দলগুলি ও নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে আবেদন জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চ।আবেদন জানিয়ে চিঠিও পৌঁছে গিয়েছে জায়গামতো।
দূষণ যেন কলকাতার আকাশে বাতাসে সর্বদা বিরাজ করছে।গঙ্গার জল থেকে রবীন্দ্র সরোবরের মতো জাতীয় সরোবর সবই এখন দূষিত। ঝড় জলে বা সৌন্দর্যায়নের কোপে রাস্তার ধারে থাকা বড় গাছ কেটে ফেলা হলেও নতুন গাছ প্রায় লাগানোই হয়নি কলকাতায়। বিভিন্ন উৎসবে শব্দের তাণ্ডব সব মিলিয়ে দূষণে জর্জরিত কলকাতা। তবু পুলিশ প্রশাসনের তেমন কোনও হেলদোল না থাকায় অবস্থার কোনও উন্নতিও হয়নি। চলে এসেছে দেশের সাধারণ নির্বাচন। ইতিমধ্যে এরাজ্যও প্রথম দফার ভোট শেষ ও দু’দিন পরেই দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ পর্ব। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচার তুঙ্গে। জনগণের দরজায় পৌঁছনোর কোনও ফাঁক রাখছে না কোনও দলের নেতা-কর্মীরাই। এরজন্য বড় জনসভায় উচ্চস্বরে মাইক বাজানো থেকে, মিছিল জনসভায় আসায় বিরাট সংখ্যক কর্মীদের দেওয়া খাওয়ার প্যাকেট বা এলাকায় লাগানো পাতলা প্লাস্টিকের চেন ফ্ল্যাগ- সবই দূষণের মাত্রা আরও বাড়াবে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানকর্মীদের।
পরিবেশকর্মী নব দত্তের কথায়, ভোটের সময়কালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি ছোট বড় জনসভায় যে পরিমাণ মাইক ব্যবহার করে ও তার থেকে যে আওয়াজ হয় তা অবশ্যই শব্দ দূষণের বড় কারণ। এর উপরে এখন নয়া প্রবণতা ভোট প্রচারে বিভিন্ন এলাকায় ডিজে’র ব্যবহার। যার ফলে জেলাগুলিতে দূষণের মাত্রা বাড়ছে চড়চড়িয়ে। একইভাবে দেওয়াল লিখনেও দূষণ ছড়াচ্ছে। এ থেকে বাঁচতে গেলে চুন ও শিশামুক্ত রঙের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এলাকা সাজাতে ৫০ মাইক্রনের নিচে চেন ফ্ল্যাগ বা নেতাকর্মীদের জন্য আনা পাতলা পলিথিনে দূষণ ছড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে থার্মোকলের থালা বাটিও ব্যাপকহারে ব্যবহার করা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলির দূষণ নিয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে দূষণ আটকাতে চিঠি পাঠানো হয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে। পাঠানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক, জেলার আধিকারিক ও রিটার্নিং অফিসারদেরও। চিঠি সম্পর্কে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। পরিবেশ সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্বাচনী আধিকারিক, রাজনৈতিক দল ও ভোটপ্রার্থীদের কাছে আবেদন জানিয়েছি। নির্বাচনী প্রচার পরিবেশ বান্ধব করতে। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বা রাজনৈতিক দলগুলির তরফে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত।
এদিকে ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানমঞ্চের ডাকে সাড়া দিয়েছে মালদহ ও পূর্ব-বর্ধমান, এই দুই জেলার নির্বাচনী আধিকারিক বিজ্ঞানমঞ্চের আবেদন কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন।