নয়াদিল্লি: সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি দেশ অত্যন্ত সংকট নিয়ে এসেছে। সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার একদিকে যেমন বাড়ছে ঠিক সেই মতই দিন দিন কমছে অক্সিজেনের সরবরাহ। অর্থাৎ এক কথায় বলা যায় অক্সিজেনের আকালে ভুগছে দেশ। যদিও পরিসংখ্যান বলছে, দেশের অক্সিজেনের আকালের মধ্যেও টনটন অক্সিজেন বিদেশে রফতানি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার! যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তা দেখলে চক্ষুচড়কগাছ হতে বাধ্য।
জানা গিয়েছে, গতবছর এপ্রিল মাস থেকে চলতি বছর জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ভারত প্রায় ৯,০০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন বিদেশে রপ্তানি করেছে! এই সময়ে বিদেশের অক্সিজেন রপ্তানির হার বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত বছর জানুয়ারি মাস থেকে চলতি বছর জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ভারতের অক্সিজেন রফতানি বেড়েছে ৭৩৪ শতাংশ, এর মধ্যে গত বছর ডিসেম্বর মাসে রফতানি করা হয়েছে ২,১৯৩ মেট্রিক টন অক্সিজেন! এই তথ্য সামনে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা দেশে। গতবছর মার্চ মাসের পর থেকে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সঙ্গীন হয়েছিল। চলতি বছর পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে ইতিমধ্যেই। তাহলে কোন যুক্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার বিগত এক বছরের মধ্যে এত টন অক্সিজেন বিদেশে রফতানি করল সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আরো তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, চলতি বছর জানুয়ারি মাসের পর থেকে বিদেশে অক্সিজেন রফতানি বিষয়ক কোনো তথ্য সরকারের তরফে প্রকাশ করা হয়নি। তাই এই সময়ে আরো কতটা অক্সিজেন রফতানি হয়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যের একাধিক হাসপাতলে অক্সিজেনের আকাল রয়েছে এখন। মূলত দিল্লি এবং উত্তর প্রদেশে সবচেয়ে বেশি করুণ চিত্র ধরা পড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থাও যে খুব ভালো তা নয়। এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে যে শিল্পাঞ্চলের কাজে আপাতত অক্সিজেন ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যেও কেন কেন্দ্রীয় সরকারের আগে হুঁশ ফিরল না তা সত্যিই সকলের অজানা। এই তথ্য রীতিমতো অসন্তোষ বাড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। নিজের ঘর ধ্বংস করে অপরের ঘর তৈরি করার মত অবস্থা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, মনে করছে জনগণ।