কলকাতা: বাংলার সঙ্গে পুরানো বিহারের তুলনা টানার জের৷ বাংলায় নিয়োজিত স্পেশাল অবজার্ভার অজয় ভি নায়েকের অপসারণ চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে কড়া চিঠি তৃণমূলের৷ অবিলম্বে ১৯৮৪ ব্যাচের এই অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার তথা বিহারের নির্বাচন দপ্তরের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক অজয় ভি নায়েকের পদত্যাগ চেয়ে চিঠি সুব্রত বক্সির৷
তৃণমূল সূত্রে খবর, অজয় ভি নায়েকের সঙ্গে আরএসএসের যোগাযোগ থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে৷ তোলা হয়েছে পক্ষপাতের অভিযোগ৷ ভোটের আগে হঠাৎ কেন ৯২ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবস্থা করা হল, তা নিয়ে ক্ষোভ জানানো হয়েছে৷ একই সঙ্গে স্পেশাল অবজার্ভার কেন বিহারের সঙ্গে বাংলার তুলনা টানলেন তারও জবাব চাওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর৷ অবিলম্বে অজয় ভি নায়েকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে নির্বাচন কমিশনকে কড়া ভাষায় লেখা হয়েছে চিঠি৷
বাংলার অবস্থা যেন ১০ বছর আগের পুরানো বিহারের মতো৷ আগে বিহারে যে ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানো হত, এখন বাংলায় ঠিক একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে বিস্ফোরক মন্তব্য স্পেশাল অবজার্ভার অজয় ভি নায়েকের৷ আজ, শনিবার বাংলায় ৯২ শতাংশ বুথে বাহিনী নিশ্চিত করা প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেন তিনি৷ নায়েক বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়। এত আধা সেনা মোতায়েন করে ভোটগ্রহণ অভিপ্রেত নয়৷’’ অজয় নায়েকের বিস্ফোরক পর্যবেক্ষণ, ১০ বছর আগে বিহারের যে পরিস্থিতি দেখেছিলেন, সেটাই এখন পশ্চিমবঙ্গে। সে কারণেই এত কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করতে হচ্ছে।
এদিন বাংলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন৷ জানান, আগে বিহারে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানো হলেও এখন পরিস্থিতি অনেক পরিবর্তন হয়েছে৷ কিন্তু, বাংলায় উল্টো ছবি বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ বাংলার পরিস্থিতি গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলকর নয় বলেও জানান তিনি৷ একই সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের উপর কেন মানুষ আস্থা রাখতে পারছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি৷ বাংলার ৯২ শতাংশ বুথে বাহিনী দিয়ে ভোট করানো রেকর্ড বলেও উল্লেখ করেন ১৯৮৪ ব্যাচের এই অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার তথা বিহারের নির্বাচন দপ্তরের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক অজয় ভি নায়েক৷ নির্বাচন কমিশনের নিয়োজিত স্পেশাল অবজার্ভারের এই পর্যবেক্ষণ ঘিরে ফের তপ্ত হতে শুরু করেছে বাংলার রাজনীতি৷
কোনও অনৈতিক ঘটনার সঙ্গে তুলনা টানতে রাজনৈতিক মহলে খুবই প্রচলিত ছিল বিহার প্রসঙ্গ৷ পুরানোর বিহারের অরাজকতার তুলনা টানা হত বারংবার৷ কিন্তু, এবার সেই বিহারের সঙ্গে বাংলার তুলনা টানলেন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার৷ এই ঘটনা যে বাংলার রাজনীতিতে বেশ খানিকটা কালী ছিটিয়ে দিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷
প্রথম দুই দফার নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে তৃতীয় দফার ভোটের নিরাপত্তা বেশ খানিকটা বাড়াল নির্বাচন কমিশন৷ আজ, কমিশনের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তৃতীয় দফায় আশান্তি রুখতে কমপক্ষে ৯২ শতাংশ আসনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে৷ যে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে, সেখানে রাজ্য পুলিশ থাকবে না৷ তৃতীয় দফায় মাত্র ৮ শতাংশ বুথে থাবকে রাজ্য পুলিশ৷ সেখানেও থাকবে কমিনের বিশেষ নজর৷