নয়াদিল্লি: ভারতে বর্তমানে যে করোনা সংকট চলছে, তার জন্য শনিবারই নরেন্দ্র মোদি সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জার্নাল ‘ল্যানসেট’৷ পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, সমালোচনা আর পরামর্শ কানে না-তুলে এই সংকট ডেকে এনেছে মোদি সরকারই৷ এবার দেশের বর্তমান শোচনীয় করোনা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রের উদাসীনতা এবং অলসতাকেই দায়ী করল চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। তাদেরও দাবি, তাদের কোনও পরামর্শই মানছে না কেন্দ্রীয় সরকার৷ আস্তাকুঁড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বিশিষ্ট চিকিৎসক এবং গবেষকদের পরামর্শ৷ আইএমএ-র স্পষ্ট বক্তব্য, রাত কার্ফু বা বিক্ষিপ্ত লকডাউন নয়, দেশের বর্তমান বেহাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে একমাত্র সুপরিকল্পিত সার্বিক লকডাউন।
রবিবার আইএমএ-র তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে অনেক আগেই দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। হাসপাতাল এবং অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা কেন্দ্রগুলো যাতে নিজেদের তৈরি রাখতে পারে, তার জন্য পূর্ব-ঘোষিত লকডাউন জরুরি ছিল বলে মনে করছে আইএমএ। তারা বলেছে, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশজুড়ে যে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের উদাসীন মনোভাব এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে অলসতা দেখে আমরা স্তম্ভিত।’
আইএমএ-র দাবি, তাদের সতর্কতা সত্ত্বেও লকডাউন করেনি কেন্দ্র৷ অথচ এখন দৈনিক নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ৷ এর মধ্যে মাঝারি থেকে খারাপ অবস্থার রোগীর হার অন্তত ৪০ শতাংশ। আলাদা আলাদা করে বিক্ষিপ্ত লকডাউন বা নাইট কারফিউ কোনও কাজে লাগেনি। অর্থনীতি ঠিক রাখার থেকেও মানুষের প্রাণ বাঁচানো জরুরি বলে মনে করছে আইএমএ৷ আর তাই তাদের স্পষ্ট দাবি, কেন্দ্রের উচিত এখনই হাতে সময় নিয়ে সুপরিকল্পিত ভাবে লকডাউন ঘোষণা করা। বর্তমানে দেশজুড়ে অক্সিজেনের যে সংকট, তার জন্যও কেন্দ্রের ব্যর্থতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছে চিকিৎসকদের সংগঠনটি। তাদের বক্তব্য, দেশে অক্সিজেনের সংকট নেই। শুধু সঠিকভাবে তা বিতরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে কেন্দ্র৷ আর তার ফলেই সংকট তৈরি হয়েছে৷