নয়াদিল্লি: করোনা সংক্রমণের বিধ্বংসী দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাস্তানাবুদ গোটা দেশ৷ দেশের সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার ‘উদ্বেগজনক’ বলেই মন্তব্য করলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন৷ তিনি আরও বলেন, ভারতে করোনা ভাইরাসের যে স্ট্রেন দেখা দিয়েছে, তা অতিসংক্রামক৷ দ্রুত একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে৷ এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় টিকা নেওয়া অত্যন্ত আবশ্যক৷
আরও পড়ুন- BJP-র হাতে আক্রান্ত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, হামলার শিকার বাম নেতারা
সোমবার একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৌম্যা বলেন, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনায় যে প্রজাতির দেখা মিলেছিল, ভারতে উভয়ই বর্তমান রয়েছে৷ তিনি আরও জানান, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে হেলথ মেট্রিক অ্যান্ড ইভোলিউশন (আইএইচএমই)-এর তৈরি মডেল অনুযায়ী অগাস্ট মাসের মধ্যে ভারতে ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হতে পারে৷ হু-র প্রধান বিজ্ঞানী আরও বলেন, এই মুহূর্তে পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক৷ ভারত ও দক্ষিণ-পূর্বের অন্যান্য দেশে প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন ও মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছেন, তা অত্যন্ত উদ্বেগের৷ আমরা এটা বুঝতে পারছি যে, এই সংখ্যাটা কমিয়ে বলা হচ্ছে৷ শুধু ভারত নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশই তাঁদের আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমিয়ে বলছে৷ ভারত সরকারের উচত প্রকৃত সংখ্যাটা সামনে আনা৷
কোভিড-১৯ বিষয়ক হু-র টেকনিক্যাল প্রধান মারিয়া ভ্যান কেরকোভ সোমবার বলেন, গত বছর ভারতে করোনা ভাইরাসের যে প্রজাতির খোঁজ মিলেছিল, তা অত্যন্ত দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম৷ যা গোটা বিশ্বের জন্য চিন্তার বিষয়৷ এই বিষয়ে সৌম্যা স্বামীনাথন জনান, B.1.617 ভ্যারিয়ান্ট বিশ্বে চতুর্থ প্রজাতি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এর জন্য উচ্চ পর্যায়ের ট্র্যাকিং, বিশ্লেষণ আর তথ্য সংগ্রহ আবশ্যক৷ তবে তা স্বচ্ছ উপায়ে করতে হবে৷ তাঁর কথায় প্রাপ্ত ডাটাতে যতটা স্বচ্ছ্বতা থাকবে, ততটাই উপযুক্ত নীতি নির্ধারণ করা সম্ভব হবে৷ পাশাপাশি এটাও মনে রাখা উচিত, মানুষ শুঘু কোভিডেই মারা যাচ্ছে না৷ অন্যান্য অসুখে চিকিৎসা না পেয়েও মারা যাচ্ছে৷
আরও পড়ুন- অক্সিজেনের অভাবে ১১ রোগীর মর্মান্তিক মৃত্যু অন্ধ্রে
ভারতে সংক্রমণ মোকাবিলায় লকডাউনের পথ বেছে নেওয়া হয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে সৌম্যার মত, ভারতে করোনা ভাইরাসের প্রজাতির সংক্রমণ ক্ষমতা, তার দ্বারা সৃষ্ট রোগের তীব্রতা এবং ভ্যাকসিন দেওয়ার পরেও শরীরে অ্যান্টিবডিগুলির প্রতিক্রিয়া যাচাই করার জন্য গবেষণা চলছে৷ তবে ভারতে এই মুহূর্তে যে দুটি টিকা পাওয়া যাচ্ছে সেগুলি ডাবল মিউট্যান্ট বিনাশে সক্ষম কি না, সেই তথ্য এখনও হাতে আসেনি৷ তবে এটা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর বড় অসুখ বা মৃত্যু এড়াতে কার্যকরী৷ তাই সুযোগ এলেই টিকা নিতে হবে বলেই জানান সৌম্যা৷