এটা বাজপায়ীর বিজেপি নয়, তাই মোদিকে একটিও ভোট নয়: মমমতা

আসানসোল: এটা অটলবিহারী বাজপেয়ী বিজেপি নয়৷ ফলে, বিজেপি একটিও ভোট দেবেন না৷ শুক্রবার অটলবিহারী বাজপেয়ী সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন আসানসোলের সভা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অটলবিহারী বাজপেয়ী যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন বলেছিলেন, যাও মমতাকে ডেকে আনো৷ বাজপেয়ীজি আমাকে ডেকেছিলেন৷ আমি ওঁর মৃত্যু আগে দেখতে গিয়েছিলাম৷ ভোটের প্রচারে ফের একবার

f31f5db133171e5ddade412199132588

এটা বাজপায়ীর বিজেপি নয়, তাই মোদিকে একটিও ভোট নয়: মমমতা

আসানসোল: এটা অটলবিহারী বাজপেয়ী বিজেপি নয়৷ ফলে, বিজেপি একটিও ভোট দেবেন না৷ শুক্রবার অটলবিহারী বাজপেয়ী সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন আসানসোলের সভা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অটলবিহারী বাজপেয়ী যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন বলেছিলেন, যাও মমতাকে ডেকে আনো৷ বাজপেয়ীজি আমাকে ডেকেছিলেন৷ আমি ওঁর মৃত্যু আগে দেখতে গিয়েছিলাম৷ ভোটের প্রচারে ফের একবার মমতার মুখে বাজপেয়ীর জয়গান বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল৷

আসানসোলে ভোট প্রচারে গিয়ে খনি ধসের সমস্যার কথাই তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দিলেন আবাসন তৈরি হচ্ছে খনি শ্রমিকদের জন্য। কিন্তু নির্বাচনী আচারণ বিধি লাগু থাকার কারণে এখনই চালু করা যাচ্ছে না। আসানসোল খনি ও শিল্পাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষই হিন্দিভাষী। সে কথা মাথায় রেখাই শুক্রবার, তৃণমূল সুপ্রিমোর ভাষণের প্রায় পুরোটাই ছিল হিন্দিতে।

বিজেপি বিরুদ্ধে কয়লা বেল্টে মাফিয়ারাজ চালানোর অভিযোগ তোলেন মমতা। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও কালোটাকা ফিরিয়ে আনেননি নরেন্দ্র মোদি। দেননি পনেরো লক্ষ করে টাকাও। সভামঞ্চ থেকে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেত্রী। তুলে ধরেন আসানসোলের উন্নয়নে রাজ্য সরকারের প্রকল্পের খতিয়ান। আসানসোলের দলীয় প্রার্থী মুনমুন সেনের হয়ে তৃণমূল বলেন, ‘মুনমুন নাইস লেডি, ভেরি গুড ক্যান্ডিডেট’। এদিনের সভা থেকে বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যের অভিযোগ তোলেন মমতা।

নয়ের দশকের শেষ লগ্নে রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির সমঝোতা হয়েছিল। সেই সূত্র ধরে বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনডিএ-র অন্যতম শরিক হিসেবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সম্পর্ক খুবই ভাল ছিল। সেই সময় কলকাতা এসে কালীঘাটে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী।

এটা বাজপায়ীর বিজেপি নয়, তাই মোদিকে একটিও ভোট নয়: মমমতাতৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী ২০০০ সালের ৬ জুলাই ৩০বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টালির বাড়িতে এসে মমতার মা গায়ত্রীদেবীকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিলেন৷ সেসময়ে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল অন্যরকম৷ বাজপেয়ীর কালীঘাট-যাত্রার পিছনেও ‘রাজনীতি’ ছিল বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় মমতা রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কোনও না কোনও ঝামেলা লেগেই থাকত। মমতা প্রধানমন্ত্রীর মাথাব্যথার অন্যতম কারণ ছিলেন৷ তখন রাজ্যের ৪টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধ করা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে মতবিরোধ ছিল মমতার। বার বার পশ্চিমবঙ্গে বাম সরকারের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন মমতা। কিন্তু বাজপেয়ী সরকার সেই দাবিতে সাড়া দেয়নি। একবার পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ানো নিয়ে রেগে যান মমতা। সেই সময়েই কলকাতা পুরসভার বোর্ড গঠনের জন্য বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে আলোচনাও চলছে।

এটা বাজপায়ীর বিজেপি নয়, তাই মোদিকে একটিও ভোট নয়: মমমতাপরবর্তী সময়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল-বিজেপি পুরসভার বোর্ড গঠন করে। এই পরিস্থিতিতে মমতার বাড়িতে এসে মমতার মান ভাঙানোর কাজটি করে যান প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ী। বাজপেয়ীকে একটি গোলাপ ও সিল্কের উত্তরীয় দিয়ে গায়ত্রীদেবী বরণ করে নেন। মমতা তাঁকে ধুতি-পাঞ্জাবি, মিষ্টি ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের ক্যাসেট উপহার দেন। বাজপেয়ী ও মমতা কেউই সেদিন রাজনৈতিক কোনও কথা বলেননি। বাজপেয়ী বলেছিলেন, এখানে রাজনৈতিক কোনও কথা নয়। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের ধারণা ছিল মমতা যে এনডিএ-র গুরুত্বপূর্ণ শরিক, সেই বার্তা দিতেই মমতার বাড়িতে নিজেই হাজির হয়েছিলেন এই বিজেপি নেতা। তবে সেদিন বাজপেয়ী কলকাতায় এসেছিলেন বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের সূচনা করতে। সেই অনুষ্ঠানে মমতা উপস্থিত থাকলেও, ভারপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই অনুষ্ঠান বয়কট করেন। রাজ্যের কোনও মন্ত্রীও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। নীতিগত কারণে সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারছেন না বলে বাজপেয়ীকে চিঠিও দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব। তবে বাজপেয়ীকে সেদিন বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *