নয়াদিল্লি: পুলওয়ামায় শহিদ স্বামীর পথই অনুসরণ করলেন তাঁর স্ত্রী নিকিতা কউল৷ ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার অন্যতম শহিদ মেজর বিভূতিশঙ্কর ধোন্দিয়ালের স্ত্রী নিকিতা কউল শনিবার ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিলেন। ২০১৯ সালে দেশের প্রতি আত্মত্যাগের মেজরকে শৌর্য চক্র পুরস্কার দেওয়া হয়৷
২০২০ সালে শর্ট সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ২৮ বছরের নিকিতা কউল। তারপর ইন্টারভিউ পর্বও পাশ করেন। এদিন চেন্নাইয়ের অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাদেমিতে এক অনুষ্ঠানে নিকিতা কউলকে সেনার পোশাক দেওয়া হয়৷ সেনাবাহিনীর নর্দান কম্যান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াই কে জোশী তাঁর কাঁধে স্টার লাগিয়ে দেন৷ স্বামীর প্রয়াণের ৬ মাসের মধ্যেই নিকিতা সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷ স্বাভাবিক ভাবেই সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার মুহূর্তে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি৷ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে নিকিতা বলেন, পুলওয়ামায় শহিদ স্বামীকে এভাবেই শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছিলেন তিনি। সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে তিনি যেন স্বামীর আরও কাছে পৌঁছে গিয়েছেন বলেই জানান নিকিতা।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় মেজর বিভূতিশঙ্কর ধোন্দিয়াল শহিদ হন, তখন তাঁদের বিয়ের বয়স ৯ মাস। হঠাৎ স্বামীর না থাকার মতো ভয়াবহ আঘাতের পরও নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন তিনি। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলেন, শুধু চোখের জল ফেলে আর স্বামীর রেখে যাওয়া স্মৃতি নিয়েই জীবন কাটাবেন না তিনি। বরং সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে স্বামীর অসমাপ্ত কাজ শেষ করবেন৷ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে নিজেকে দেওয়া সেই কথা রাখলেন নিকিতা৷ স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর উদ্দেশে একটি বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘তুমি বলেছিলে আমাকে ভালোবাসো। কিন্তু আসলে, তুমি আমার চেয়েও দেশকে বেশি ভালোবাসো। আমরা সবাই তোমাকে ভালোবাসি। তুমি অন্যদের চেয়ে আলাদা ভাবে দেশকে ভালোবেসেছিলে৷ তুমি চেনো না এমন মানুষদের জন্য জীবন উৎসর্গ করলে৷ তুমি এত সাহসী! তোমাকে আমার পেয়ে আমি গর্বিত। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমি তোমাকেই ভালোবাসব। এই জীবন আমি তোমাকেই উৎসর্গ করেছি।’