মধ্যপ্রদেশ: আম ছাড়া গরমকাল যেন ভাবাই যায় না৷ তবে ফলের রাজা এই আমের দাম শুনলে চোখ কপালে উঠবে আমআদমির৷ প্রতি কেজি আমের দাম ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা৷ নাম মিয়াজাকি৷ আমের এই প্রজাতির নাম আমাদের দেশে অতটা পরিচিত নয়৷ কিন্তু এর চাষ হচ্ছে এদেশে৷
শুধু নামে নয়, রঙে, বর্ণে, স্বাদে, মূল্যে, সবেতেই মিয়াজাকি আম অনন্য৷ অন্যান্য প্রজাতির আমের রং সবুজ অথবা হলুদ হলেও, এটি উজ্জ্বল লাল বর্ণের হয়৷ আকারে এটি ডাইনোসরের ডিমের মতো হয়৷ আন্তর্জাতিক বাজারে এই আমের দাম প্রচুর। তার মূল কারণ হল এর পুষ্টি গুণ প্রচুর। এতে প্রচুর পরিামণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে৷ রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন এবং ফোলিক অ্যাসিড৷ এর দাম ৮,৬০০ টাকা থেকে শুরু করে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে৷ জাপানের মিয়াজাকি শহরে এই আম পাওয়া যায় বলে এর নাম মিয়াজাকি। এক একটি আমের ওজন ৩৫০ গ্রাম এবং সাধারণ আমের থেকে শর্করার পরিমাণ ১৫ শতাংশ বেশি। এপ্রিল থেকে অগস্ট মাসের মধ্যে এই আমের চাষ হয়। জাপান ছাড়াও থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্সে এই আমের চাষ হয় এবং সম্প্রতি ভারতে এর চাষ শুরু হয়েছে৷
পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান এই আমের চাষ শুরু হয়েছে মধ্যপ্রদেশে৷ গত বছর থেকে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের বাসিন্দা এক দম্পতি এই আমের চাষ শুরু করেছেন৷ রানি ও সঙ্কল্প পরিহার তাঁদের বাগানে দু’টি মিয়াজাকি আমের গাছ লাগিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের কোনও ধারণাই ছিল না, এ রকম বিরল রুবি রঙের আম ধরবে গাছে। কয়েক বছর আগে গাছ প্রিয় এই দম্পতি চেন্নাই থেকে কিছু গাছের চারা কিনতে যাওয়ার সময় একজনের থেকে এই আম গাছের চারা পেয়েছিলেন। ওই ব্যক্তি সঙ্কল্পকে বলেছিলেন, গাছ দু’টিকে নিজের সন্তানের মতো বড় করতে৷ কিন্তু সঙ্কল্প তখনও জানতেন না এই প্রজাতির নাম মিয়াজাকি। পরে তিনি পড়াশোনা করে জেনেছেন ওই প্রজাতির আসল নাম মিয়াজাকি। তাঁদের দাবি, এই বিরল প্রজাতির আম চুরি হওয়া থেকে রক্ষা করতে তাঁরা চারজন দারোয়ন এবং সাতটি কুকুর নিযুক্ত করেছেন৷
সঙ্গল্পের স্ত্রী রানি জানিয়েছেন, ‘মুম্বইয়ের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী একটি আমের জন্য ২১ হাজার টাকা দিতে রাজি ছিলেন। কিন্তু আমরা বিক্রি করিনি। এই আম কাউকে বিক্রি করব না বলেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তা হলে সকলেই এই গাছের চারা বানিয়ে ফেলবেন৷’