কলকাতা: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মনোয়ন বাতিলের দাবিতে নির্বাচনকে চিঠি তৃণমূলের৷ নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বাংলার ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগও আনা হয়েছে মোদির বিরুদ্ধে৷ তৃণমূলের দাবি, নির্বাচনী সভা থেকে দল ভাঙার চেষ্টা করছেন মোদি৷
তৃণমূলের দাবি, শ্রীরামপুরে মোদির ভাষণ অগণতান্ত্রিক৷ মোদির মন্তব্য নির্বাচনী আদর্শ আচারণ বিধি লঙ্ঘন হয়েছে৷ মোদি নির্বাচনী সভামঞ্চ ব্যবহার করে ঘোড়া কেনাবেচায় উৎসহ দিয়েছে৷ ফলে, অবিলম্বে তাঁর প্রার্থীপদ বাতিল করা হোক৷ এই মর্মে কমিশনকে চিঠিও দিয়েছে তৃণমূল৷
মোদির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে তৃণমূলের ৪০ বিধায়ক৷ নরেন্দ্র মোদির এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মঙ্গলবার ভদ্রেশ্বরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মোদি এখানে এসে বলে গিয়েছে, ওর সঙ্গে নাকি ৪০ জন বিধায়ক যোগাযোগ রাখছে৷ যে যাবে যাক৷ আমার কিছু এসে যাবে না৷ কারণ আমরা নেতা তৈরি করি৷’’
The letter written yesterday further reads,”You are thus requested to ask PM Narendra Modi for evidence in support of his statement,failing which his nomination should be cancelled for violation of the Model Code of Conduct by making such provocative and undemocratic statements.” https://t.co/yc3An9uLN6
— ANI (@ANI) April 30, 2019
বলেন, ‘‘নির্লজ্জ প্রধানমন্ত্রী, দল ভাঙাচ্ছেন৷ বাংলায় এসে ঘোড়া কেনাবেচা করছে৷ বিজেপি মতো আমরা চোরের দল নয়৷ টাকা দেখিয়ে দল ভাঙিয়ে নিয়ে যায়৷ বলছে, ৪০ জনের সঙ্গে আছে৷ এটা বলায় প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থীপদ বাতিল হওয়া উচিত৷ বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী শুধু মিথ্যা কথা বলছে, মানুষ সব মনে রাখছেন৷’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের আগেই মুখ খোলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন৷ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাল্টা মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানান ডেকের৷ বলেন, ‘‘এক্সপেরিয়া মোদি বাবু, আপনার সঙ্গে কেউ যাবে না, একজন কাউন্সিলারও যাবে না৷ এটা কি আপনার নির্বাচনী সভা না কি ঘোড়া কেনা বেচার জায়গা৷ আপনার বিদায়ের দিন চলে এসেছে৷ আমরা এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যাব৷ এভাবে কী ঘোড়া কেনাবেচা করা যায়?’’
সোমবার ভরদুপুরে শাসকদলের ঘুম উড়িয়ে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেন নরেন্দ্র মোদি৷ শ্রীরামপুরের কৃষ্ণরামপুরের সভামঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেন৷ দলবদলের জল্পনাকে উস্কে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মোদি জানান, ২৩ মের পর তৃণমূলের পতন শুরু হবে৷ কারণ তাঁর সঙ্গে আজও যোগাযোগ রেখে চলেছেন ৪০ জন বিধায়ক৷
এদিন মমতাকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে মোদি বলেন, ‘‘দিদি তোমার দিন শেষ৷ আজ ৪০ জন বিধায়ক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে৷ আগামী ২৩ মের পর থেকে তোমার পতন শুরু হয়ে যাবে৷ দিদি তোমার পায়ের তলার জমি সরে গিয়েছে৷ ২৩ মের পর সবাই বিজেপিতে যোগ দেবে৷’’
এদিন নাম না করে বলেন, ‘‘আপনি গণতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন, এবার সেই গণতন্ত্রকেই একটু বিশ্বাস করুন৷’’ বাংলা ভোটের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বলেন, ‘‘যত দফা যাচ্ছে, বিরোধীদের ভয় তত বাড়ছে৷ আজ, এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দিদির দলের লোকেরাও তাঁকে দেখে ভয় পাচ্ছে৷’’ ভোটের সন্ত্রাস ইস্যুতে বলেন, ‘‘আজ মমতাদির গুণ্ডা ভোটারদের ভোট দিতে দিচ্ছে না৷ আমাদের কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে৷ তবুও এত বাধার পরও আমাদের কর্মীরা বুথে যাচ্ছেন৷’’
সোমবার ভরদুপুরে টানা রোদ ও গরমের মধ্যেও দীর্ঘ ভাষণ দেন মোদি৷ মহাজোট থেকে শুরু করে মোদির আমলের উন্নয়ন প্রসঙ্গ তুলে ধরেন৷ একই সঙ্গে ‘দিদি’কে কটাক্ষ করেন নমো৷ পুলওয়ামা হামলা নিয়েও মমতাকে খোঁচা দেন প্রধানমন্ত্রী৷ জঙ্গিদের মারলে দিদির ভালো লাগে না বলেও অভিযোগ তোলেন৷ বলেন, ‘‘এই ধরেন লোক কী দেশকে রক্ষা করতে পারবে, যাঁরা সেনার সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন৷’’ এদিনের সভা থেকে নয়া স্লোগান তোলেন মোদি৷ বলেন, ‘‘চুপ চাপ, ফুলফুল সে তৃণমূল সাফ৷’’