জ্যোতি বসু কি বিজেপির বিরুদ্ধে ছিলেন? গভীর প্রশ্ন মমতার

কলকাতা: নির্বাচনী সভা থেকে বামেদের সঙ্গে রামের যোগাযোগ আছে বলে বারংবার সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এবার প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে নির্বাচনী ভাষণে আলোচনার টেবিলে নামিয়ে আনলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ টেনে আনলেন অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকেও৷ রবিবার বারুইপুরের সভা মঞ্চ থেকে মমতার সটাল প্রশ্ন, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিপিআইএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিজেপি বিরোধী এবং স্বয়ং বুদ্ধদেবই

জ্যোতি বসু কি বিজেপির বিরুদ্ধে ছিলেন? গভীর প্রশ্ন মমতার

কলকাতা: নির্বাচনী সভা থেকে বামেদের সঙ্গে রামের যোগাযোগ আছে বলে বারংবার সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এবার প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে নির্বাচনী ভাষণে আলোচনার টেবিলে নামিয়ে আনলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ টেনে আনলেন অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকেও৷  রবিবার বারুইপুরের সভা মঞ্চ থেকে মমতার সটাল প্রশ্ন, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিপিআইএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিজেপি বিরোধী এবং স্বয়ং বুদ্ধদেবই একথা জানিয়েছেন মমতাকে৷ কিন্তু, জ্যোতি বসু কি বিজেপির বিরুদ্ধে ছিলেন?

বারুইপুরের সভায় সিপিএমের অত্যাচারের কাহিনী তুলে ধরতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘সিপিএম অনেক অত্যাচার করেছে। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম-নেতাই তো অনেক পরে। ওটা তো ২০০৬ সাল থেকে। তার আগে বহু ঘটনা ঘটেছে। হাজরটা ঘটনার সাক্ষী। আমার আন্দোলন লগ্নে জন্ম, আন্দোলন লগ্নেই মৃত্যু হবে। লড়াই যারা করে, তাদের সারাজীবন ধরে লড়াই থাকে। আমি অনেক মার খেয়েছি, অনেক অসম্মানজনক কথা বলা হয়েছে আমাকে। তাও বলছি, সিপিএমের সব লোক খারাপ, এটা আমি মনে করি না৷ আপনারা যদি জিজ্ঞাসা করেন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কি বিজেপি সমর্থক? আমি বলব, না। মিথ্যা কথা বলে লাভ নেই। উনি যে আমার বন্ধু তা তো নন। ওঁর আমলেই তো সবথেকে বেশি মার খেয়েছি। আমি ওঁর বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, উনি আমায় বলেছিলেন৷ জ্যোতি বসুও হয়তো বিজেপির বিরুদ্ধে, জানি না, বেঁচে থাকলে হয়তো জিজ্ঞেস করে দেখতাম৷’’

সম্প্রতি, সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তি পত্রিকায় কলম ধরেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ নাম না করে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘ধান্দাবাজদের চৌকিদার’ বলে তোপ দেগেছেন। অন্যদিকে, রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে অন্যতম ‘বিপদ’ বলে অভিহিত করেছেন। দলের দৈনিক মুখপত্র ‘গণশক্তি’তে  বুদ্ধদেববাবু দক্ষিণবঙ্গের ভোটারদের কাছে বাম প্রার্থীদের জয়ী করার আহ্বান জানাতে গিয়েই বিজেপি ও তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন দ্ব্যর্থহীনভাবে।

২০১১ সালে বিধানসভার ভোটে পরাজিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে আর যুক্ত রাখতে চাননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এর পিছনে একদিকে যেমন তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারণ রয়েছে, তেমনই কিছুটা ‘অভিমান ও হতাশা’ও কাজ করেছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত। বুদ্ধদেববাবু বলেছেন, নরেন্দ্র মোদি হলেন দেশের উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও পুঁজিপতিদের মডেল। আসলে ধান্দাবাজ পুঁজিপতিদের কাছে মোদি এই বার্তা দিয়েছেন যে আমি তোমাদেরই চৌকিদার। মানুষের সামনে এখন দায়িত্ব হল, এই মডেলকে ভেঙে চুরমার করে দেওয়া। সারা দেশে বামপন্থা, ধর্মনিরপেক্ষতা, স্বাধীন অর্থনৈতিক বিকাশই বিকল্প পথ। এটাই বিকল্প মডেল। তাঁর কথায়, ২০০৪ সালের মতো এবারও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কোণঠাসা করে কেন্দ্রে একটা ধর্মনিরপেক্ষ বিকল্প সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বামপন্থীদের পক্ষে নীতি নির্ধারকের ভূমিকা পালন করা সম্ভব। সংসদে বামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধির যথেষ্ট বাস্তবতা রয়েছে দেশের সামনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − 4 =