নয়াদিল্লি: ক্রিকেট মানেই এখন ধুমধাড়াকা। কেউ ৩১ বলে সেঞ্চুরি করে দিচ্ছে তো কোনও দল ৫০ ওভারে ৪০০ রান করে ফেলছে। প্রতিপক্ষ আবার সেই রান টপকে জিতেও যাচ্ছে। বলা বাহুল্য, নবীনতম ক্রিকেট টি-টোয়েন্টির প্রভাব ৫০ ওভার এবং পাঁচদিনের ক্রিকেটেও পড়েছে। অথচ একটা সময় ছিল যখন ৫০ ওভারে ২৫০ রান করা মানেই তা উইনিং স্কোর। কিন্তু তা বলে ৬০ ওভার ব্যাট করে মাত্র ৩৬ রান! কোনও কালেই এত মন্থর ব্যাটিং সমর্থনযোগ্য নয়, এমনকী তা টেস্ট ম্যাচ হলেও নয়। কিন্তু এই কীর্তি আছে এক ভারতীয় ব্যাটসম্যানেরই। তিনি সুনীল গাভাসকর, শচীন-পূর্ব যুগে ভারতের সেরা ব্যাটসম্যান।
সেটা ১৯৭৫ সাল, তারিখ ৭ জুন। প্রথম একদিনের বিশ্বকাপের একদম প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড এবং ভারত। খেলা হচ্ছে ক্রিকেটের মক্কা লর্ডস স্টেডিয়ামে। প্রথমে ব্যাট করে ৬০ ওভারে ইংল্যান্ড তোলে ৩৩৪ রান। সে আমলে ৫০ নয়, ৬০ ওভারেই খেলা হত। জবাবি ইনিংসে ভারতের হয়ে একজন ওপেনার ছিলেন গাভাসকর। তিনি পুরো ইনিংস নট আউট ছিলেন, কিন্তু মোট রান করেন মাত্র ৩৬। এই রান করতে তিনি খেলেছিলেন ১৭৪টি বল। রান উঠছে না বলে মারকুটে ভঙ্গিতে ব্যাট চালানোরও কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি তাঁর। ভারত সে ম্যাচে তিন উইকেট খুইয়ে তোলে মাত্র ১৩২ রান।
গাভাসকরের এই মন্থর ইনিংস নিয়ে নানা মুনির নানা মত শোনা গেছে। কারও মতে দল নির্বাচনে খুশি ছিলেন না তিনি। পেস বোলার বাদ দিয়ে স্পিনার খেলানোয় তিনি বিরক্ত হয়ে মন্থর ব্যাটিং করেছিলেন। আবার কারও মতে, তাঁকে ছেড়ে ভেঙ্কটরাঘবনকে অধিনায়ক নির্বাচন করাটা মেনে নিতে পারেননি গাভাসকর। কেউ কেউ বলেছেন ক্রিকেটের আদি ফর্ম্যাট টেস্ট ছেড়ে একদিনের ক্রিকেট পছন্দ ছিল না লিট্ল মাস্টারের। তাই প্রতিবাদে এমন ইনিংস। আরও কারণের কথা শোনা যায় যে, সেই সময় দুই দলের পয়েন্ট সমান হলে নট আউট থাকা দল সুবিধা পেত। তাই হয়তো গাভাসকর উইকেট দিয়ে আসেননি। অদ্ভুত বিষয় হল এই নিয়ে কোনওদিন মুখ খোলেননি স্বয়ং সুনীল, ফলে অজানাই থেকে গেছে রহস্য।