‘বাংলা কি কাশ্মীর, কথায় কথায় ইন্টারনেট বন্ধ?’

আজ বিকেল: ভোট পরবর্তী হিংসায় জ্বলছে পশ্চিমবঙ্গের একাংশ। শিরোনামে উঠে এসেছে শিল্পাঞ্চল বারাকপুরের ভাটাপড়া কাঁকিনাড়া এলাকা। এবার অশান্তি এড়াতে এই বারাকপুর সাব ডিভিশনের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিল প্রশাসন। মূলত খুনোখুনি হিংসার জেরে গোটা এলাকাটাই গত দেড়মাস ধরে অশান্ত হয়ে রয়েছে। এরমধ্যেই ঝরে গিয়েছে বেশ কয়েকটি তাজা প্রাণ। খুনের ঘটনা ঘটলেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব

‘বাংলা কি কাশ্মীর, কথায় কথায় ইন্টারনেট বন্ধ?’

আজ বিকেল: ভোট পরবর্তী হিংসায় জ্বলছে পশ্চিমবঙ্গের একাংশ। শিরোনামে উঠে এসেছে শিল্পাঞ্চল বারাকপুরের ভাটাপড়া কাঁকিনাড়া এলাকা। এবার অশান্তি এড়াতে এই বারাকপুর সাব ডিভিশনের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিল প্রশাসন। মূলত খুনোখুনি হিংসার জেরে গোটা এলাকাটাই গত দেড়মাস ধরে অশান্ত হয়ে রয়েছে। এরমধ্যেই ঝরে গিয়েছে বেশ কয়েকটি তাজা প্রাণ। খুনের ঘটনা ঘটলেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, এরফলে অশান্তি ম্যাসিভ আকার নেয়। এহেন পরিস্থিতি আটকাতেই বারাকপুর, বনগাঁ ও বসিরহাট সাবডিভিশনের বন্ধ হয়ে গেল ইন্টারনেট পরিষেবা। জেলা শাসকের দপ্তর থেকে ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিটি সংস্থাকেই চিঠি দিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রেখে ১৪৪ ধরা জারি করার পরও আজও শান্ত করা যায়নি ভাটপাড়ার উত্তেজনা৷

আর এর এতেই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে৷ অনেকেই বলছে, যারা নেট দুনিয়ায় অশান্তি ছাড়াচ্ছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক প্রশাসন৷ প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করা হোক৷ কিন্তু, ২০১৯-সালে দাঁড়িয়ে এভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া যেমন জন জীবনে প্রভাব ফেলে, তেমনই ব্যবসায়ীক ভাবেও ক্ষতি হয়৷ কেননা, এই মুহূর্তে ইন্টারনেটের উপর নির্ভরতা বিপুল ভাবে বেড়ে গিয়েছে৷ অফিস, আদালত থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজেও ভর্তির জন্য অনলাইনে অবেদন জমা নেওয়ার কাজও চলছে৷ এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কোনও এলাকার অশান্তির প্রভাব কেন ভুগতে হবে গোটা জেলার বাসিন্দাদের৷

এই বিষয়ে ইন্টারনেট পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত এক ব্যবসায়ী বুবুন বিশ্বাসের মন্তব্য, ‘‘এটা কী হচ্ছে৷ কথায় কথায় ইন্টারনেট কেন বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে৷ বাংলা কি কাশ্মীর? যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন৷ তাহলে সাইবার থানাগুলি কি করছে? গুজব রুখতে কেন তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ একাংশ গুজব ছড়াচ্ছে, তার জেরে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীরা মার খাচ্ছে৷’’

বৃহস্পতিবার ভাটপাড়ায় থানা উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওটে গোটা এলাকা। পুলিশের সামনেই দুই দুষ্কৃতীদলের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়ে যায়, বোমাবাজি, গুলি কোনও কিছুই বাদ যায়নি। এর জেরে মৃত্যু হয়েছে দুজনের, আহত পাঁচজন। যদিও বিজেপি নেতা অর্জুন সিংয়ের দাবি পুলিশের গুলিতেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। তবে উদ্বোধন স্থগিত রেখেই থানার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। মাঝপথ থেকেই কলকাতায় ফিরে গিয়েছেন ডিজি রবীন্দ্র। ইতিমধ্যেই বারাকপুরকে শান্ত করতে কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরিকে সরিয়ে সেখানে মনোজ বর্মাকে আনা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে এই পরিস্থিতি যাতে নিয়্ন্ত্রণে আসে তার কড়া নির্দেশ দিএছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সপ্তাহ খানেক আগেই রাজনৈতিক অশান্তিতে উত্তাল হয়ে ওটে সন্দেশখালি এলাকা। পরিস্থিতি নিয়্ন্ত্রণে রাখতে বসিরাহাট মহকুমার বেশ কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। জানানো হয় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতেই এই বন্দোবস্ত। এর আগে ২০১৭-তে যখন বসিরহাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল, তখনও অনির্দিষ্ট কালের জন্য বসিরহাট বারাসত সাব বিভিশনে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ইন্টারনেট পরিষেবা। এদিকে সন্দেশখালির ন্যাজাটের সাতগাছি এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে তিন তৃণমূল কর্মীর দেহ উদ্ধার হলেও নিখোঁজ হন ছয় তৃণমূল কর্মী। গোটা ঘটনায় বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তোলে শাসকদল। একইভাবে পাঁচ কর্মী খুনের ঘটনায় তৃণমূলকে দায়ী করেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − three =