খ্যাতির অপ্রত্যাশিত চাপই কি টেনিস প্লেয়ারদের পতনের কারণ? প্রশ্ন তুলে দিলেন বুশার্ড

খ্যাতির অপ্রত্যাশিত চাপই কি টেনিস প্লেয়ারদের পতনের কারণ? প্রশ্ন তুলে দিলেন বুশার্ড

কলকাতা:  খ্যাতির বিড়ম্বনা সমাল দেওয়া বড় দায়! হঠাৎ করে জীবনে আসা খ্যাতি বদলে দিতে পারে জীবনের ছন্দ৷ কেউ সহজেই বয়ে চলে খ্যাতির ভার৷ কেউ আবার হারিয়ে যায় কালের নিয়মে৷ খ্যাতির স্রোতে তিনি হারিয়ে যাননি ঠিকই৷ কিন্তু, পিছিয়ে যে পড়েছেন, তা তিনি বিলক্ষণ জানেন৷ টেনিস কোর্টে তাঁর উত্থান হয়েছিল ধূমকেতুর মতো৷ পতনও হয় উল্কার গতিতে৷ অনেক ঝড় ঝাপটা সামলে ফের টেনিস কোর্টে ফিরতে মরিয়া ইউজিনি বুশার্ড৷ তবে সম্প্রতি তাঁর একটি মন্তব্য প্রশ্ন চিহ্ন তুলেছে৷ -প্রত্যাশার চাপ সামলাতে পারা কতটা গুরুত্বপূর্ণ? 

আরও পড়ুন- ছিল না প্রশিক্ষণ নেওয়ার টাকা, IPL খেলার টাকায় বাবা-মা’র জন্য বাড়ি কিনতে চান তিলক

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বুশার্ড বলেন, “টেনিসে সফলতা সঙ্গে আসে খ্যাতিও৷ সেটা আমি জানতাম। তবে আমার মনে হয়, অধিকাংশ খেলোয়াড়ই আগে থেকে সেই খ্যাতির জন্য প্রস্তুত থাকেন না। আমিও ছিলাম না। আমরা শুধু নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলি। কিন্তু সেই লক্ষ্য যদি পূরণ না হয়, তাহলে পরিস্থিতি কী ভাবে সামলাতে হবে, সেটা কেউই বুঝতে পারি না।” বুশার্ড সর্বসমক্ষে যে কথা স্বাকীর করেছেন, অতীতে তা অনেকেই পারেননি৷ প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও এক সময় সময়ের স্রোতে হারিয়ে গিয়েছেন রবিন সোডারলিং, ডেভিড নালবান্দিয়ান, ডেভিড ফেরার, নিকোলাই ডেভিডেঙ্কোরা-এর মতো টেনিস প্লেয়াররা৷ সম্প্রতি টেনিস থেকে অবসর নিয়েছেন অ্যাশ বার্টি৷ আগেও একবার আবসাদে খেলা ছেড়েছিলেন তিনি৷ 

বুশার্ড এমন এক পরিবারের সন্তান, যেখানে আগে কেউ কখনও টেনিস, খেলেননি৷ কিন্তু, পরিবারই তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিল টেনিসের ব়্যাকেড৷ পাঁচ বছর থেকে খেলা শুরু৷ স্কুল স্তর থেকে টেনিস খেলেছেন৷ ২০১২-য় মাত্র ১৮ বছর বয়সে জুনিয়র উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হন। যা তাঁর জীবনের অন্যতম সফল্য৷ ধীরে ধীরে ছাপ ফেলেন বড়দের টেনিসেও৷ 

দু’বছর পরে প্রথম ডব্লিউটিএ পুরস্কার জেতেন। এর পর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং ফরাসি ওপেনের সেমিফাইনালে পৌঁছন। উইম্বলডন ফাইনালেও ওঠেন। কিছুদিনের মধ্যে তাঁর তুলনা শুরু হয় মারিয়া শারাপোভা, সেরেনা উইলিয়ামসের সঙ্গে৷ আসতে থাকে খ্যাতি৷ কিন্তু সেই খ্যাতির আলোয় কী ভাবে টেনিস থেকে তিনি দূরে সরে যাচ্ছিলেন তা বুঝতেই পারেননি বুশার্ড৷ পর পর প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ হতে থাকেন৷ নিজেকে প্রচারের আলোয় রাখতে নানা কৌশল নেন৷ কখনও কির্গিয়সকে ‘ডেট’ করেছেন, কখনও সমুদ্রসৈকতে ধরা দিয়েছেন স্বল্প পোশাকে৷ শারাপোভা ডোপিং কাণ্ডে নির্বাসিত হওয়ার পর যখন ফের কোর্টে ফিরেন, তখন তাঁকে ‘প্রতারক’ বলতেও কুণ্ঠা বোধ করেননি বুশার্ড।  আর সবের মাঝে তিনি অনেকটা সরে যান টেনিস থেকে৷ 

টেনিস খেলোয়াড় জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “বিদেশে এমন ঘটনা প্রায়ই হয়ে থাকে। ১৭-১৮ বছর বয়সে আচমকা খ্যাতি পাওয়ার পর আর তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেন না। ভারতীয় ক্রিকেটও এমন উদাহরণ রয়েছে৷  নেয়োমি ওসাকা চাপ সামলাতে পারছে না। কিছুদিন আগে অ্যাশ বার্টি খেলা ছেড়েছেন৷  তবে আমাদের দেশে সেই ঘটনা খুব বেশি নেই। সানিয়া মির্জা এখনও খেলে চলেছে।” তাঁর কথায়, চাপ সামলাতে পারাটাই আসল ব্যাপার৷