কলকাতা: এনআরএস-কাণ্ডে ‘কড়া পদক্ষেপ’ নেওয়ার পর জুনিয়র ডাক্তার পেটানো হোতাদের জামিল মিলল মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই৷ আজ সোমবার ডাক্তার পিটিয়ে ধৃত পাঁচ অভিযুক্তরে জামিনের আর্জি মঞ্জুর করে শিয়ালদহ আদালত৷ মাত্র ২০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তিকালীন জামিন মিললের নির্দেশ আদালতের৷ অভিযুক্তদের জামিন মিলতেই ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি জুনিয়র ডাক্তারদের৷
ক্ষুব্ধ জুনিয়র ডাক্তারদের হুঁশিয়ারি, নবান্ন টানা আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ কিন্তু, অভিযুক্তদের জামিল মঞ্জুর হওয়ার ঘটনার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের সামিল বলেও অভিযোগ তুলেছেন ক্ষুব্ধ জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ৷ প্রয়োজন থেকে ফের কর্মবিরতিতে নামতে পারেন বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে৷ সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা বাড়াতে যখন এত তৎপরতা, তখন অভিযুক্তদেক জামিন জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে তৈরি হওয়া ক্ষোভে বেশ খানিকটা ঢি ঢেলেছে বলেই অনেকেই মনে করছে৷
জামিনের ঘটনায় যখন আক্রান্ত জুনিয়র ডাক্তাররা ক্ষোভে ফুঁসছেন, ঠিক তখনই মঙ্গলবার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার সঙ্গে বৈঠক বসতে চলেছেন ৩১ জন জুনিয়র ডাক্তারের একটি প্রতিনিধি দল৷ স্বাস্থ ভবনে সেই বৈঠক হওয়ার কথা৷ জানান গিয়েছে, মঙ্গলারের বৈঠকে ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা লিখিত প্রতিবাদ জানিয়ে সমস্যা সমাধানের দাবি জানাতে চলেছেন৷
এনআরআসকাণ্ডে আজ ধৃতদের শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়৷ বিচারক মামলার নথিপত্র খতিয়ে দেখেন৷ কিন্তু, ২০ দিনের মধ্যে মামলার অগ্রগতি না দেখে অভিযুক্তদের পাঁচ জনকে অন্তর্বর্তিকালীন জামিনের নির্দেশ দেন বলে আদলাত সূত্রে খবর৷ দু’হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে ধৃতদের জামিন দেয় শিয়ালদহ আদালত৷ কিন্তু, এর আগে রাজ্য সরকারের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, ডাক্তার পেটানোর ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়৷ জামিন অযোগ্য ধারা মামলা করা হলেও মামলার অগ্রগতি না থাকায় জামিনের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে গুরুত্ব মামলায় ২০ দিনেও অগ্রগতি করতে পারল না পুলিশ? যে ঘটনা নিয়ে গোটা বাংলার চিকিৎসা পরিষেবা লাটে তুলে দিয়েছিল৷ তার পরও কীভাবে অভিযুক্তরা মুক্তি পেয়ে গেল মাত্র ২০ দিনের মধ্যে?
গত ১০ জুন এনআরএস হাসপাতালে মৃত্যু হয় বছর ৮৪-এর এক রোগীর৷ চিকিৎসার গাফিলতির জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এনআরএস৷ ট্রাক ভর্তি লোক এসে জুনিয়র ডাক্তারদের পিটিয়ে চম্পট দেয়৷ মারপিট হয় রোগী ও জুনিয়র ডাক্তারের মধ্যে৷ অশান্তির মাঝে মাথায় আঘাত লাগে জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের৷ ক্ষোভে বিদ্রোহে ফেটে পড়েন রাজ্যের চিকিৎসকেরা৷ ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়৷ টানা এক সপ্তাহ ধরে লাটে ওঠে বাংলার চিকিৎসা পরিষেবা৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ধৃতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মমতার আশ্বাসে জুনিয়র ডাক্তার কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার পরই তদন্তের অগ্রগতি না দেখে অভিযুক্তদের পাঁচ জনকে অন্তর্বর্তিকালীন জামিনের নির্দেশ দেন বলে আদলাত৷