বিন্দ্রার পরামর্শ নিয়ে বিশ্বকাপ শুটিংয়ে তাঁকেই ছুঁলেন বাঙালি কন্যা, স্বর্ণপদক জয় মেহুলির

বিন্দ্রার পরামর্শ নিয়ে বিশ্বকাপ শুটিংয়ে তাঁকেই ছুঁলেন বাঙালি কন্যা, স্বর্ণপদক জয় মেহুলির

নয়াদিল্লি: শুটিং বিশ্বকাপে সোনা জয় বাঙালি কন্যার৷  ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের মিক্সড ইভেন্টে সোনা জিতলেন মেহুলি ঘোষ৷ এই নিয়ে চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সোনা জিতল ভারতীয় দল৷ শাহু তুষার মানের সঙ্গে জুটি বেঁধে এদিন সোনা জেতেন মেহুলি৷ সেই সঙ্গে তিনি ছুঁয়ে ফেলেন অভিনব বিন্দ্রার রেকর্ড৷  

 

 

আরও পড়ুন- ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডে-তে অনিশ্চিত বিরাট! ‘চোট’ না ‘খারাপ ফর্ম’? চর্চা তুঙ্গে

মেহুলি-শাহুর হাত ধরে শুটিং বিশ্বকাপে ভারতের মুকুটে জুড়েছে দ্বিতীয় পালক৷ তবে চলতি বিশ্বকাপে দুটি সোনা ছাড়া একটি ব্রোঞ্জ পদকও এসেছে ভারতের ঝুলিতে৷ চলতি শুটিং বিশ্বকাপে মেহুলির পারফরম্যান্স প্রথম থেকেই নজর কেড়েছিল৷  গতকালই পদক নিশ্চিত করেছিলেন তিনি৷ এদিন হাঙ্গেরির জুটিকে হারিয়ে সোনা জিতে নেন বঙ্গ তনয়া৷ তবে ভারতের হয়ে এটা মেহুলির দ্বিতীয় সোনা জয়৷ এর আগে কাঠমাণ্ডুতে সাউথ এশিয়ান গেমসে সোনা জিতেছিলেন তিনি৷ তবে ভারতের হয়ে প্রথম সোনা জিতলেন শাহু তুষার৷ 

নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে ‘ইন্টারশুট’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী শুটার অভিনব বিন্দ্রার পরমর্শ নিয়ে বিমানে উঠেছিলেন মেহুলি ঘোষ। চল্লিশ বছরের বেশি পুরনো তিন দিনের এই ক্লাব শুটিংয়ে বিশ্বসেরাদের সঙ্গে লড়াই করে জোড়া সোনা জেতেন বাংলার এই শুটার। শনিবার তৃতীয় সোনা জয়ের সামনে চলে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু সামান্য ভুলের জন্য দু’নম্বরেই থামতে হয় তাঁকে। পাশাপাশি দলগত বিভাগে একটি রূপো জেতেন মেহুলি। কয়েক বছর আগে একই প্রতিযোগিতায় নেমে জোড়া স্বর্ণপদক জিতেছিলেন অভিনব বিন্দ্রা৷ 

এর আগে যুব অলিম্পিকেও পদক জিতেছিলেন মেহুলি। কমনওয়েলথ গেমসে জিতেছিলেন রুপো৷ ধারাবাহিকভাবে ভাল পারফরম্যান্স করে চলেছেন বাংলার শুটার। 

দিন পাঁচেক আগে ঝটিকা সফরে কলকাতায় এসেছিলেন অভিনব বিন্দ্রা৷ মেহুলির কোচ জয়দীপ কর্মকারের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। তার আগেই অবশ্য কোচের সঙ্গে বিন্দ্রার সঙ্গে দেখা করতে যান মেহুলি৷ জয়দীপ জানান, খুব অল্প সময়ের জন্য দেখা হয়েছিল৷ তার মধ্যেই কথা হয় দু’জনের৷ জানা গিয়েছে, সংক্ষিপ্ত ওই সাক্ষাৎকারে প্রতিযোগিতার মান সম্পর্কে মেহুলিকে একটা ধারণা দিয়েছিলেন বিন্দ্রা। সেই সঙ্গে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে মেহুলিকে বলেছিলেন, ‘‘তুমি দুর্দান্ত শুটার। দারুণ ফর্মেও রয়েছ। তুমি অনেক  ভাল লোকের সংস্পর্শে আছ৷ যারা তোমাকে সাহায্য করছে। তুমি শুধু নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকো।’’

সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে মেহুলি। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হলেও মেয়ের চাহিদা মেটাতে কোনও কসুর রাখেননি তাঁর বাবা নিমাই ঘোষ ও মা মিতালী ঘোষ। কষ্ট করেই মেয়ের এই খরচ সাপক্ষে খেলা চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা৷  শ্রীরামপুর রাইফেল ক্লাবে প্রথম শুটিং শেখা শুরু মেহুলির৷ কিন্তু,  ২০১৪ সালে অনুশীলনের সময় ভুলবশত একজনকে আঘাত করেন তিনি৷ এর জন্য ক্লাব কর্তৃক তাঁকে বহিষ্কার করেন। পরবর্তীকালে প্রাক্তন ভারতীয় অলিম্পিক ফাইনালিস্ট এবং অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত জয়দীপ কর্মকারের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন মেহুলি৷