বিতর্কিত ধনকুবের, আইপিএলের জনক ললিতে মজে প্যারিস হিলটন থেকে বঙ্গতনয়া সুস্মিতা সেন!

বিতর্কিত ধনকুবের, আইপিএলের জনক ললিতে মজে প্যারিস হিলটন থেকে বঙ্গতনয়া সুস্মিতা সেন!

2dfa6620fb60d9eee18ada3a847a755e

নয়াদিল্লি: আর্থিক দুর্নীতি এবং বিশৃঙ্খলার অভিযোগে তিনি আজীবনের জন্য নির্বাসিত৷ ২০১৩ সালে তাঁকে নির্বাসিত করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড৷ তার পর থেকেই লন্ডনে ‘বেপাত্তা’ প্রাক্তন আইপিএল কর্তা ললতি মোদী৷ এই ক’বছরে তিনি প্রায় বিস্মৃত হয়ে গিয়েছিলেন৷ সেই তিনিই আবার শিরোনামে৷ একটা টুইটে তেড়েফুড়ে উঠলেন নতুন করে৷  রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিলেন চারিদিকে৷ তাঁকে নিয়ে শুরু হল নতুন চর্চা৷ নিজস্ব কায়দায় বিশ্বদুনিয়াকে জানালেন অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন তাঁর ‘সঙ্গিনী’! শীঘ্র বিয়েও হবে দু’জনের৷ 

বিতর্ক যেন আষ্টেপৃষ্ঠে রাখে তাঁকে৷ সেই ‘বিতর্ক’ শুধু আইপিএল-কেন্দ্রিক নয়। তাঁর গোটা জীবন মোড়া একাধিক বিতর্কিত অধ্যায়ে৷ শুরুটা হয়েছিল বহু বছর আগে৷ ললিত তখন আমেরিকার ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র৷ সেই সময় তিন বন্ধুকে নিয়ে দশ হাজার ডলার দিয়ে আধ কিলো কোকেন কিনতে গিয়ে একেবারে হাতেনাতে ধরা পড়েন। তাঁর বিরুদ্ধে অপহরণ, মাদকপাচার, নিগ্রহ-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়। শেষে বাবা কেকে মোদীর হস্তক্ষেপে তিনি ছাড়া পান।

ললিত

এর পর ললিতের জীবনে আসে প্রেম৷ আমেরিকায় পড়তে পড়তেই তিনি প্রেমে পড়েন তাঁর চেয়ে বয়সে ১০ বছরের বড় মিনাল সাগরানির। তিনি ছিলেন বিবাহিত এবং ললিতের মা বীণার বন্ধু।  মিনালের স্বামী জ্যাক সাগরানি ছিলেন নিলাকস সংস্থার কর্ণধার। মিনাল তখন সন্তানসম্ভবা৷ সৌদি আরবে দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার হন জ্যাক। বেশ কয়েক মাস জেলও খাটতে হয় তাঁকে৷ স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মিলানকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন ললিত৷ কিন্তু, বেঁকে বসে তাঁর পরিবার৷ অবশেষে নাছোড় ছেলের জেদের কাছে হার মানেন বাবা-মা৷ বিয়ে হয় মিলান-ললিতের৷ 

ক্রিকেট প্রশাসক হিসাবেও তাঁর সঙ্গী ছিল বিতর্ক৷ ক্রিকেট প্রশাসক হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল রাজস্থান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে৷ ২০০৫ সালে রাজস্থানের ক্রিকেট নির্বাচনে একটি বিতর্কিত সরকারি অর্ডিনান্স প্রকাশ করা হয়। যেখানে ৫৯ জন সদস্যের ভোটাধিকার কেড়ে মাত্র ৩২টি জেলা ক্রিকেট সংস্থার ভোটে কিশোর রুংতা ও তাঁর গোষ্ঠীকে হারিয়ে জয়ী হন ললিত। সেই সময় তাঁর পাশে ছিলেন রাজস্থানের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের।

ললিত সুস্মিতা

বয়সে দশ বছরের বড় রাজের সঙ্গেও ‘অন্য রকম’ সম্পর্ক ছিল তাঁর৷ তাই নানা সুযোগ সুবিধাও পেতেন ললিত৷ এমনটা অনেকেই বলে থাকেন৷ তবে গোয়ালিয়রের রাজ পরিবারের সঙ্গে মোদীদের বন্ধুত্ব বহু পুরনো। তাই ওই বিতর্কিত অর্ডিনান্স প্রকাশ করতে কোনও সমস্যাই হয়নি ললিতের৷ 

একাধিক সংস্থার বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সের সদস্য ললিত এককথায় ছিলেন ধনকুবের৷ আইপিএল তাঁর লক্ষ্মীভাণ্ডারকে আরও পরিপূর্ণ করে। ২০১০-এ আইপিএল টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পরেই গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং ৪৭০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে ললিতের বিরুদ্ধে৷ অবিলম্বে বিসিসিআইয়ের সহসভারপতির পদ থেকে বরখাস্ত করা হয় তাঁকে।

 ললিত মোদীর বিলাসবহুল জীবন দেখে চোখ কপালে ওঠে অনেকেরই৷ মার্সিডিজ থেকে প্রাইভেট জেট—কী নেই তাঁর! অভিযোগ, আইপিএলের দৌলতে আরও ফুলেফঁপে ওঠেন তিনি৷ ছুটি কাটাতে যেতেন বিলাসবহুল রিসর্টে। এর মধ্যে ছিল পাক ক্রিকেটার ইমরান খানের প্রাক্তন স্ত্রী জেমাইমার বাবা জিমি গোল্ডস্মিথের প্রাসাদোপম বাড়িও। ভাড়া নেওয়া এই সকল রিসর্টে চলত চরম উদ্দামতা৷ কখনও ললিতের সঙ্গী হতেন স্ত্রী মিনাল ও বন্ধুবান্ধব৷ কখনও বা অন্য সঙ্গিনী৷ সেই সঙ্গিনীদের তালিকাও অবশ্য বেশ দীর্ঘ৷ যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুপার মডেল নায়েমি ক্যাম্পবেল৷ ললিতের নাম জড়িয়েছে প্যারিস হিলটনের সঙ্গেও৷ 

ললিত সুস্মিতা

সম্প্রতি যাঁকে নিয়ে এত চর্চা, সেই সুস্মিতার সঙ্গে ললিতের বন্ধুত্ব বেশ পুরনো৷ স্ত্রী মিলান বেঁচে থাককালীন এক ফ্রেমে দেখা গিয়েছিল তাঁদের৷ রহমন শলের সঙ্গে সুস্মিতার বিচ্ছেদের পর সেই বন্ধুত্বই আরও গভীর হয়৷ সমস্ত বিতর্ক পিছনে ফেলে উঠে আসে শুধু নিখাদ প্রেম৷ সুস্মিতার সঙ্গে বিয়ের কথাও ঘোষণা করেছেন ললিত৷ তবে এ বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি প্রাক্তন মিস ইউনিভার্স৷