কলকাতা: আগামী ২১ জুলাই শহিদ দিবস পালন করবে তৃণমূল৷ ওই দিনই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে লড়াইয়ের ডাক দিতে পারেন রাজ্যের শাসকদল৷ তৃণমূলের শহিদ দিবস কার্যত শাসক দলের শক্তি পরীক্ষার মঞ্চ৷ কেননা ইতিমধ্যেই এ রাজ্যে নিজেদের জমি শক্ত করতে শুরু করেছে বিজেপি৷ ২০২১-এর বিধানসভা জয়ের লক্ষ্যে তৃণমূল প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে প্রশান্ত কিশোরের হাত ধরে৷ তলে, প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও তাঁরা জানেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের লড়াইটা খুব একটা সহজ হবে না৷ কেননা, গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলেই দেখা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ক্রমশই নিজেদের জমি শক্ত করছে ভারতীয় জনতা পার্টি৷ ফলে, কৌশল বদলের পথে হাঁটতে পারে তৃণমূল৷
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা সুব্রত বক্সী ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘‘কোনও চ্যালেঞ্জের প্রশ্নই নেই৷ গত ২৬ বছরের তুলনায় এই বছরের সমাবেশ আরও বড় হবে৷’’ নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কিশোর কোনও পরামর্শ দিয়েছেন কিনা সে সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘তাঁর সঙ্গে কথা বললে তবেই এ ব্যাপারে বলতে পারব৷’’
আসলে প্রশান্ত কিশোরের প্রসঙ্গ নিয়ে এখনই তৃণমূল কংগ্রেস সেভাবে কিছু বলতে চাইছে না৷ তবে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূলের নির্বাচনী কৌশলবিদ৷ গত ১৩ জুলাইও তিনি কলকাতায় দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ যদিও তিনি মনে করছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের হাতে লোহা গরম করার মতো যথেষ্ট সময় আছে৷
২০১৪ সালে তৃণমূল রাজ্যে ২১১টি আসনে জয়লাভ করে৷ তবে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই এ রাজ্যে ক্রমশই নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি৷ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ১৪৮টি আসন দরকার৷ এই মুহূর্তে তৃণমূল সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে না বলে আশাবাদী বিজেপি৷
এই প্রসঙ্গে বিজেপির সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘প্রশান্ত কিশোরের নিয়োগ প্রমাণ করে দিয়েছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দল নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছেন৷ তিনি ভয় পাচ্ছেন এই ভেবে যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করা তাঁর পক্ষে আর সম্ভব হবে না৷’’ তবে অনেকেই মনে করছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনকে এগিয়ে আনার চেষ্টা করতে পারেন যাতে বিরোধী দল বিজেপি প্রস্তুতির জন্যে হাতে বিশেষ সময় না পায়৷ তবে যাই হোক না কেন, সবার চোখ এখন আগামী রবিবার তৃণমূলের শহিদ সমাবেশের দিকে৷ এটাই তৃণমূলের শক্তি পরীক্ষার একটা বড় মঞ্চ বলে মনে করছেন সবাই৷ অনেক দেরি হয়ে যাওয়ার আগে পারবে কি তৃণমূল নিজেদের গুছিয়ে নিতে? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে৷