মদ্যপান থেকে আদর পুতুলের ব্যবহার, কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে গিয়ে নিয়ম ভাঙলেই হতে পারে জেল

মদ্যপান থেকে আদর পুতুলের ব্যবহার, কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে গিয়ে নিয়ম ভাঙলেই হতে পারে জেল

দোহা: শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন৷ আর কিছু দিনের মধ্যেই কাতারে শুরু হবে ফুটবল বিশ্বকাপ৷ আর বিশ্বকাপ মানেই ফুটবল প্রেমীদের বাঁধন ছাড়া উচ্ছ্বাস৷ রাতভর হইহুল্লোড়-পার্টি৷ আয়োজক দেশে পা রাখার পর যেন অন্য জগতে হারিয়ে যান ফুটবলপ্রেমীরা৷ যেন তাঁরা সব নিয়মের উর্ধ্বে৷ কাতার বিশ্বকাপেও কি দেখা যাবে সেই চেনা ছবি?

আরও পড়ুন- ‘তোমার জীবন সুখের হোক’, বিচ্ছেদ-জল্পনার মধ্যেই জন্মদিনে স্ত্রী সানিয়াকে শুভেচ্ছা শোয়েবের

বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি৷ কাতারে বাড়ছে সমর্থকদের ভিড়৷ সকলকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটি৷ তবে আগত দর্শকদের জন্য বেশ কিছু নিয়মকানুন বেঁধে দিয়েছে কাতার সরকার৷ যা উদ্দাম উল্লাসের পথে বাধা হতে পারে৷ এমনিতেই কাতারের আইন অত্যন্ত কড়া৷ এরই মধ্যে বিশ্বকাপ দেখতে আসা সমর্থকদের উদ্দেশে নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে৷ তবে মদ্যপান, নৈশজীবন এবং পোশাক বিধির উপর কড়াকড়ি রয়েইছে৷

কাতারে খোলাবাজারে মদ পাওয়া যায় না৷ মদ মেলে একমাত্র হোটেল এবং বারে৷ কাতারে বসবাসকারী অমুসলিম যাঁদের কাছে লাইসেন্স রয়েছে, একমাত্র তাঁরাই ঘরে বসে মদ্যপান করতে পারেন৷ স্টেডিয়ামে সমর্থকদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রাখা থাকবে, যেখানে বসে তাঁরা মদ্যপান করতে পারবেন৷ এর বাইরে অন্যত্র মদ্যপান করা যাবে না৷ ২১ বছরের নীচে কোনও ব্যক্তি মদ কিনতে পারবেন না৷ বারে গিয়েও তাঁদের মদ্যপানের অনুমতি নেই কাতারে৷ বারে ঢোকার আগে লাগবে ফটো আইডি প্রুফ৷ 

যৌনজীবন নিয়েও কড়া আইন কাতারে৷ এদেশে অবিবাহিত নারী-পুরুষের মধ্যে যৌন সম্পর্ক গুরুতর অপরাধ৷ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়ালেও মেলে কড়া শাস্তি৷ তবে বিশ্বকাপ উপলক্ষে সেই নিয়মে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে৷ হোটেলগুলিতে এক ঘরে ছেলে ও মেয়ে একসঙ্গে থাকতে পারবেন৷ 

কাতারে সমকামিতা গুরুতর অপরাধ৷ ধরা পড়লে হতে পারে তিন বছর পর্যন্ত জেল৷ একটি ছেলে ও মেয়ে হাতে হাত রেখে ঘোরাঘুরি করলেও প্রকাশ্যে এক অপরকে জড়িয়ে ধরা এদেশে মানা৷ ফলে আলিঙ্গন এড়িয়ে যাওয়াই দর্শকদের পক্ষে ভালো৷  এছাড়াও কাতার সরকারের তরফে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশ থেকে আগত সমর্থকরা যেন সে দেশের সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন৷ দর্শকরা যেন কাঁধ ও হাঁটু ঢাকা পোশাক পরেন৷ হাফ প্যান্ট বা স্লিভলেস পোশাক এড়িয়ে যাওয়াই ভালো৷ 

মনে করা হচ্ছে, দেশ-বিদেশ থেকে ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে কাতারে পা রাখবেন প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ। ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালীন কাতার যেন ‘বেআইনি’ কাজের আঁতুড়ঘরে পরিণত না হয়, সে দিকে কড়া নজর রয়েছে কর্তৃপক্ষের। 

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, শুল্কমুক্ত মদ নিয়ে কাতারে প্রবেশ করা যাবে না। কোনও ফুটবলপ্রেমী আদর পুতুল  বা সেক্স টয় নিয়ে এ দেশে ঢুকলে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে৷ এছাড়াও কাতার বিমানবন্দরে শূকরের মাংস নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। শূকরের মাংস নিয়ে কাতারে প্রবেশ করলেই কড়া শাস্তি৷ তাছাড়া এক রাতের ‘অবৈধ’ যৌনমিলনের (ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড) জন্য হতে পারে সাত বছরের জেল।

এসব নিয়ম-কানুন না হয় মানা গেল৷ কিন্তু প্রশ্ন হল হোটেলের রুম পাওয়া নিয়ে৷ অর্থ দিলেও ঘর পাওয়া বেজায় মুশকিল৷ কারণ, ইতিমধ্যেই কাতারের সমস্ত হোটেলের রুম বুকিং হয়ে গিয়েছে৷