নয়াদিল্লি: বাংলার নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন বাংলার তৃণমূলের সাংসদরা৷ বুধবার তৃণমূলের সাংসদরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন৷ রাজ্যের শাসক দলের রাজ্য সভার সাংসদ ও লোকসভার সাংসদরা নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন৷ সেখানে চলতি অধিবেশনে বাংলা নাম পরিবর্তনের বিষয়টি তোলার জন্য মোদির কাছে গিয়ে আর্জি জানান বাংলার সাংসদরা৷
বুধবারের প্রতিনিধি দলে ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সৌগত রায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্রের মতো তৃণমূলের লোকসভার সাংসদরা। রাজ্য সভার থেকে ছিলেন ডেরেকও ব্রায়েন। পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করে বাংলা হোক তা চায় রাজ্যের শাসক দল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের নাম পরিবর্তনে ইচ্ছুক নয়। অন্যদিকে রাজ্য বিজেপিও শ্যামাপ্রসাদের স্মৃতির কথা মাথায় রেখে রাজ্যের নাম পরিবর্তনে নারাজ৷
রাজ্যের নাম পরিবর্তন আটকাতে রাজ্য বিজেপি বহুবার কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে৷ কয়েকদিন আগে দেশের স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন নাম পরিবর্তন নিয়ে কেন্দ্রের আপত্তি রয়েছে৷ তারপর বুধবার দিল্লিতে রাজ্যের নাম পরিবর্তন নিয়ে তৃণমূল সাংসদরা প্রধানমন্ত্রীর দারস্থ হন৷
দীর্ঘ টালবাহানার পর রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব সরাসরি খারিজ করে দেয় কেন্দ্র৷ নাম বদল করতে গেলে বহু জটিলতা রয়েছে৷ বদলাতে হবে সংবিধানিক ধারা৷ দীর্ঘ এই জটিলতার ধকল কেন্দ্র সরকার নিতে চাইছে না বলে চলতি মাসের তিন তারিখ সাফ জানিয়ে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায়৷ মোদির মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ হিসাবে উঠে আসা বিহারের উজিয়ারপুরের বিজেপির সাংসদ নিত্যানন্দ রায় রাজ্যসভায় লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব কেন্দ্র অনুমোদন দিচ্ছে না৷ কারণ নাম পরিবর্তন করতে গেলে নানান জটিলতা তৈরি হতে পারে৷
যদিও রাজ্যের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি তুলে ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের উপনেতা সুখেন্দুশেখর রায়৷ সংসদে দাঁড়িয়ে সুখেন্দুশেখর রায় জানান, ২০১৮-র জুলাইয়ে পশ্চিমঙ্গ বিধানসভা রাজ্যের নাম পাল্টে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব পাশ হয়ে গিয়েছে৷ কিন্তু, কেন্দ্র সরকারের তরফে কোনও অনুমোদন এখনও দেওয়া হয়নি৷ এই বিষয়ে রাজ্যসভার সচিবকে চিঠিও পাঠানো হয় তৃণমূলের তরফে৷ এরপরই আজ, কেন্দ্রের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, পশ্চিমবঙ্গকে বাংলা করবে না মোদির সরকার৷
এর আগে রাজ্যের নাম পরিবর্তনের জন্য বাংলা, ইংরেজি এবং হিন্দি ভাষায় ‘পশ্চিম’ শব্দটি তুলে বাংলা ও বেঙ্গল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়৷ সেই প্রস্তাব বিধানসভায় পাশ করিয়ে পাঠানো হয় কেন্দ্রকে৷ কেন্দ্র পুরো বিষয়টি পর্যালোচনার পরে রাজ্যকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ৩টি ভাষাতেই এক ধরনের নাম বাছতে বালা হয়৷ এবং তা খারিজ করে দেওয়া হয়৷ এরপর বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি ভাষাতেই বাংলা নামের প্রস্তাব দেওয়া হয়৷ কিন্তু সেই পরিবর্তিত প্রস্তাব বিধানসভায় পেশ না করায় আপত্তি তোলে কেন্দ্র৷ পরে, বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে তা ফের পাঠানো হয়৷ তবে প্রস্তাব পাঠানো হলেও, কেন্দ্রের তরফে প্রথমে কোনও জবাব না দিলেও তৃণমূল সাংসদরে চিঠির জবাবে সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয়৷