নয়াদিল্লি: ফুটবল বিশ্বকাপকে বলা হয়, ‘গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ’। সেই ফুটবল বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখে প্রায় সব দেশই। ফুটবল বিশ্বকাপের আসরে সুযোগ পেতে কত পরিকল্পনাও করে থাকে এক-একটা দেশ। অন্যদিকে, বর্তমানে ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে ফুটবলের যা অগ্রগতি, তাতে বিশ্বকাপে খেলা প্রায় স্বপ্নের মতই। অথচ বিশ্বকাপ ফুটবলে একবার সুযোগ পেয়েও তা হেলায় হাতছাড়া করেছিল ভারত। ভাবুন একবার! এ যেন হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা! পায়ের জাদু দেখানোর সুযোগ পেয়েও বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের নাম তুলে নিয়েছিল ভারত। কিন্তু কেন? কেন বিশ্বকাপ খেলতে যায়নি ভারত? জানতে দেখুন এই প্রতিবেদন।
এই আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হয় ১৯৩০ সালে এবং এখন পর্যন্ত চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৯৩৪ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ১৬টি দল মূল পর্বে অংশ নিত। তবে ১৯৩৮ সালে জার্মানি অস্ট্রিয়াকে দখল করায় প্রতিযোগিতায় ১৫টি দল অংশ নেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপের পর ১৯৪২ আর ১৯৪৬ সালের বিশ্বকাপের আসর বসেনি। ১৯৫০ সালে মাত্র ১৩টি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই টুর্নামেন্ট। কারণ ভারত, স্কটল্যান্ড ও তুরস্ক নাম প্রত্যাহার করে নেয়। সে বার বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ ছিল ব্রাজিল।
সেসময়টা ছিল ভারতীয় ফুটবলের স্বর্ণযুগ। ১৯৪৮ সালের লন্ডন অলিম্পিক্সে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে প্রায় জেতা ম্যাচ হেরে গেলেও খালিপায়ের ভারত নিজেদের শক্তি জানান দেয় বিশ্ব ফুটবলে। তবে শেষপর্যন্ত বিশ্বকাপে খেলতে না পারা ভারতের কাছে দুঃখজনকই বটে। ভারত কেন বিশ্বকাপে গেল না এই নিয়ে জনমানসে অনেক মিথ প্রচলিত আছে। শোনা যায়, ভারতীয় খেলোয়াড়রা বুট পরে খেলতে অভ্যস্ত ছিলেন না বলেই খেলতে যাননি। আবার শোনা যায়, ভারতীয়রা খালি পায়ে খেলতে চেয়েছিলেন বলে ফিফা তা নাকচ করে দিয়েছে। আবার জানা যায়, বিমান ভাড়া ছিল না বলেই বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের নাম তুলে নিয়েছিল ভারত।
তবে সেসময় ভারতীয় দলের অধিনায়ক শৈলেন মান্না বলেছিলেন অন্যকথা। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা তখন প্রস্তুত ছিলাম না বিশ্বকাপে খেলার জন্য। আমাদের সেভাবে বলাও হয়নি। যদি জানতাম তবে নিজেরাই যেভাবে পারতাম প্রস্তুত হয়ে নিতাম বিশ্বকাপে খেলার জন্য। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ) ১৯৪৮ সালের অলিম্পিকের মতো বিশ্বকাপকেও গুরুত্ব দেয়নি। ব্রাজিলের যাবার খরচ, বিশ্বকাপের আগের অনুশীলন নিয়েও উদাসীন ছিল ফেডারেশন। আর তাই সেবার এত বড় একটি সুযোগ আমাদের হাতছাড়া করতে হয়।’’