নয়াদিল্লি: হিজাব বিতর্কে উত্তাল গোটা দেশ৷ জায়গায় জায়গায় প্রতিবাদে গর্জে উঠছেন মুসলিম মহিলারা৷ ফুঁসে উঠে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির নেত্রী রুবিনা খানমের হুঙ্কার, হিজাবে হাত দিলে হাত কেটে নেব৷ পরিস্থিতি যখন অগ্নিগর্ভ, তখন অতীত সংস্কার থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানালেন বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তাঁর কথায়, একটি ধর্মনিরেপেক্ষ রাষ্ট্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইউনিফর্মই পড়ুয়াদের একমাত্র পোশাক হওয়া উচিত। তসলিমার বিস্ফোরক মন্তব্য, হিজাব হল সতীত্বের পাহাড়াদারি করা পোশাক। যা মনে করিয়ে দেয়, মেয়েরা আসলে সম্ভোগের বস্তু।
আরও পড়ুন- ভেন্টিলেশনে কোভিড আক্রান্ত স্ত্রী, বিল মেটাতে ডিগ্রি বন্ধক রাখলেন চিকিৎসক স্বামী
সারা দেশ যখন হিজাব বিতর্কে উত্তাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ হবে কি না তা নিয়ে মামলা চলছে, ঠিক তখনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তসলিমা নাসরিন৷ সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তসলিমার সাফ কথা, “একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের পোশাক হওয়া উচিত ইউনিফর্ম৷ সেখানে ধর্মীয় ভেদাভেদ চলে না। শিক্ষকরা পড়ুয়াদের ধর্মীয় পোশাক পরে স্কুল-কলেজে আসতে বারণ করছেন৷ এর মধ্যে কোনও ভুল নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো ধর্মচর্চার স্থান নয়।” তাঁর কথায়, “স্কুলে শেখানো হয় নাগরিক অধিকার, লিঙ্গসাম্য, মানবিকতা, আধুনিক মনস্কতা, বিজ্ঞান ভাবনা ইত্যাদি।”
তসলিমার দাবি, হিজাব, বোরখা বা নাকাব আদতে নারী নিপীড়নের প্রতীক। তাঁর মতে, “হিজাব, বোরখা, নাকাব মনে করিয়ে দেয় মেয়েরা আসলে ভ্যগ্যবস্তু ছাড়া কিছুই নয়। পুরুষদের থেকে মেয়েদের লুকিয়ে রাখা দরকার, নাহলে তারা পুরুষদের যৌন লালসার শিকার হবে৷ এই ভাবনাটাই অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই মনোভাবের বদল হওয়া প্রয়োজন।”
যদিও ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের একটা বড় অংশই হিজাবের পক্ষে৷ তাঁরা মনে করেন, হিজাব মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সম্মান ও ঐতিহ্যের পোশাক। তবে তসলিমার যুক্তি, “বিষয়টা শুধুমাত্র ইসলামের নয়৷ আমাদের মনে রাখা উচিত, যে নিয়ম সতেরোশো শতকে তৈরি হয়েছিল তা একবিংশ শতকে চলতে পারে না।”
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>