কলকাতা: অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি প্রতিবাদে এবার টুইটারে নিজের মন্তব্য প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মুখ্যমন্ত্রী টুইটারে নাম না করে বিজেপির মুখোশ খুলে দেওয়ারও বার্তা দেন৷ একইসঙ্গে অসময়ের বঞ্চিত নাগরিকদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী৷
টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘‘রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে গিয়ে আজ এই এনআরসির বিপর্যয়৷ সময় এসেছে, এবার তাদের মুখোশ খুলে দিতে হবে৷ এনআরসির বিপর্যয়ের জন্য দেশের মানুষ তাদের জবাব দেবেই৷ আসলে অসৎ উদ্দেশ্যে কোন কাজ করলে এমনই বিপর্যয় ঘটে৷’’
অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী থেকে বাদ পড়েছেন অন্তত ১৯ লক্ষ মানুষ৷ কিন্তু, যাঁদের নাম বাদ পড়ল তাঁদের কী হবে? তাঁদের কি নো ম্যানস ল্যান্ডে কেটে ফেলে দেওয়া হবে? কেন্দ্রকে বিঁধে এনআরসি ইস্যুতে দলের অবস্থান জানালেন ফিরহাদ হাকিম৷
The NRC fiasco has exposed all those who tried to take political mileage out of it. They have a lot to answer to the nation.
This is what happens when an act is guided by an ulterior motive rather than the good of the society and the larger interest of the nation.(1/2)— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 31, 2019
My heart goes out to all those, especially the large number of Bengali speaking brothers and sisters, who are made to suffer because of this botched-up process.(2/2)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 31, 2019
সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘আমরা অসমবাসীর পাশে আছি৷ মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে আছেন৷ এই ১৯ লক্ষ মানুষের ভবিষ্যত কী হবে? ৪০ লক্ষ থেকে নেমে এখন ১৯ লক্ষে দাঁড়িয়েছে৷ কিন্তু মানুষ তো মানুষ থাকে৷ তাঁকে তো আর আকাশে ওড়ানো যাবে না৷ যদি তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয় ভারতবর্ষ থেকে তাঁরা কোথায় যাবেন? শেখা হাসিনা নেবেন? প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে? তাহলে কী হবে এঁদের৷ রোহিঙ্গাদের মতো নো ম্যানস ল্যান্ডে কেটে ফেলে দেওয়া হবে? এই প্রশ্নের উত্তর ভারত সরকারকে দিতে হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী নিজে খুব উদ্বিগ্ন৷ আমরা অসমের মানুষের পাশে আছি যাঁরা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন৷’’
দীর্ঘ বিতর্কের পর অবশেষে প্রকাশ হল অসমে চূড়ান্ত এনআরসির তালিকা৷ ওয়েবসাইটে এনআরসির তালিকা প্রকাশ হয়েছে৷ কিন্তু শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে ওয়েবসাইট৷ সার্ভারের উপর চাপ পড়ে যাওয়ায় খুলছে না এনআরসির ওয়েবসাইট৷ আর তাতেই বিপাকে পড়েছেন অসমের কয়েক লক্ষ জনতা৷
এনআরসির তালিকা ঘিরে বিতর্ক ও অশান্তির আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই ২০ হাজার অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে মোতায়েন করা হয়েছে৷ জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা৷ মাইকে মাইকে প্রশাসন গুজবে কান না দেওয়ার প্রচার শুরু করেছে৷ কন্ট্রোলরুম খুলেছে রাজ্য পুলিশ৷ মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল জানিয়েছেন, এনআরসি তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর কেউ আতঙ্কিত হবেন না৷ রাজ্যজুড়ে সর্তকতা জারি করা হয়েছে৷ গুজবে কান দিতে রাজ্যবাসীকে আর্জি জানিয়েছেন তিনি৷ জানা গিয়েছে, এই তালিকায় ২০ লক্ষ নাগরিকের নাম নতুন করে তোলা হয়েছে৷ ১৯ লক্ষ ছ’হাজার নানুষের নাম বাদ পড়েছে পড়েছে৷ তালিকায় রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষের নাম৷ (এই লিঙ্কে দেখুন NRC তালিকা- https://www.thefinalnrc.com/FinalNRC/Draft.htm)
ইতিমধ্যেই আজ বেলা ১০টায় চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়েছে৷ এই চূড়ান্ত তালিকায় যাঁদের নাম উঠবে না তাঁদের জন্য আরও ১২০ দিনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে৷ নথিপত্র দেখিয়ে ফের নাম নথিভুক্ত করা যেতে পারে বলেও জানানো হয়েছে অসম প্রশাসনের তরফে৷ ইতিমধ্যেই এনআরসির খসড়া তালিকায় ৪০ লক্ষ্য নাগরিকের নাম না ওঠায় শুরু হয়েছিল বিতর্ক৷
এবার ১৯ লক্ষ মানুষের নাম এনআরসি চূড়ান্ত তালিকায় প্রকাশিত না হওয়ায় নতুন করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ গোটা পরিস্থিতির ওপর ইতিমধ্যেই নজরদারি শুরু করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল৷ কংগ্রেস-তৃণমূল সহ অন্যান্য বিরোধীরাও এনআরসি চূড়ান্ত তালিকা উপর নজর রাখছে৷ প্রয়োজনে বিশেষ গণ-আন্দোলনের হুমকি দিয়ে রেখেছেন বিরোধীরা৷ শেষ মুহূর্তে যাঁদের নাম উঠল না, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তাও দেওয়া হয়েছে৷