নয়াদিল্লি: নববর্ষের আগে মিলল মুক্তির স্বাদ৷ দীর্ঘ ১২ বছর পর ঘুঁচল বন্দিদশা৷ পাকিস্তানে করাচির জেল থেকে বিহারের বক্সারে ফিরলেন ছবি মুশাহর। সম্প্রতি পঞ্জাবের অমৃতসর সীমান্তে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস সংস্থার প্রতিনিধিদের হাতে ছবিকে তুলে দেন পাক কর্তৃপক্ষ। ভারত সরকারের হেফাজতে যাবতীয় সরকারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর বুধবার বিহারের বাড়িতে ফেরেন বছর ৩৫-এর ছবি।
আরও পড়ুন- দেশে তৈরি প্রথম যাত্রীবাহী বিমানের সফর শুরু, প্রথম যাত্রী দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
২০০৯ সাল৷ হঠাৎই করেই একদিন বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান দলিত যুবক ছবি৷ তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৩৷ বহু বছর পর জানা যায় তিনি পাকিস্তানে রয়েছেন৷ কিন্তু, কী ভাবে ছবি পড়শি মুলুকে পৌঁছলেন, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা৷ ছবির দাবি, ট্রেনে চেপে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি৷ কোনও ভাবে পৌঁছে যান পঞ্জাব। সেখান থেকে পথ ভুল করে সীমান্ত পেরিয়ে একেবারে পাকিস্তান। তবে অদ্ভূতভাবে প্রথমেই ধরা পড়েননি তিনি৷ পাকিস্তানে পৌঁছনোর পর বেশ কয়েক বছর সেখানে মোট বওয়া কৃষি শ্রমিকের কাজ করেন৷ এভাবেই দিন কাটছিল ছবির। পরে তাঁকে গ্রেফতার করে পাকিস্তান পুলিশ৷ গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ভরা হয় করাচির জেলে।
ছবি নিখোঁজ হওয়ার পরেই থানায় অভিযোগ জানিয়েছিল তাঁর পরিবার৷ বিস্তর খোঁজাখুঁজিও করা হয়। কিন্তু খোঁজ মেলেনি৷ ২০০৯ সালেই সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান স্ত্রী অনিতা৷ তিনি ফের বিয়েও করে নেন৷ এদিকে ছেলের বাড়ি ফেরার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল ছবির পরিবার৷ এমনকী পরলৌকিক ক্রিয়ার আয়োজনও করা হয়৷ কিন্তু আশা ছাড়েননি ছবির মা বীর্থি দেবী৷ তাঁর মনে বিশ্বাস ছিল, ছেলে একদিন ফিরবেই৷ ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানতে পারে, করাচির জেলে বন্দি রয়েছেন এক ভারতীয়৷ নাম ছবি৷ তাঁর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়৷
প্রতি বছরই রমজান মাসে কিছু নিরপরাধ বিদেশি বন্দিদের মুক্তি দেয় পাকিস্তান৷ সেই তালিকাতেই এবার ছিল ছবির নাম৷ ছেলেকে ফিরে পেয়ে বীর্তি বলেন, ‘‘আজ আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন। বহু বছর পর ছেলেকে ফিরে পেলাম। এটা ঈশ্বরের আশীর্বাদ। আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ।’’
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>