অবশেষে ক্যাম্পাস ছাড়লেন রাজ্যপাল, ৬ ঘণ্টা পর নামল ব়্যাফ

কলকাতা: পড়ুয়াদের চোখে কার্যত ধুলো দিয়ে অবশেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালেয়র ক্যাম্পাস ছাড়তে সক্ষম হলেন রাজ্যপাল৷ তিন নম্বর গেটের পরিবর্তে ৪ নম্বর গেট দিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ছাড়েন তাঁরা৷ মন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ, এবিভিপি-বাম ছাত্র সংগঠনের সংঘর্ষ, এবিভিপির তাণ্ডব, রাজ্যপালকে ঘিরে বিক্ষোভ, ক্যাম্পাসে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পথ অবরোধের প্রায় ৬ ঘণ্টার পর ক্যাম্পাস চত্বরে

অবশেষে ক্যাম্পাস ছাড়লেন রাজ্যপাল, ৬ ঘণ্টা পর নামল ব়্যাফ

কলকাতা: পড়ুয়াদের চোখে কার্যত ধুলো দিয়ে অবশেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালেয়র ক্যাম্পাস ছাড়তে সক্ষম হলেন রাজ্যপাল৷ তিন নম্বর গেটের পরিবর্তে ৪ নম্বর গেট দিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ছাড়েন তাঁরা৷ মন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ, এবিভিপি-বাম ছাত্র সংগঠনের সংঘর্ষ, এবিভিপির তাণ্ডব, রাজ্যপালকে ঘিরে বিক্ষোভ, ক্যাম্পাসে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পথ অবরোধের প্রায় ৬ ঘণ্টার পর ক্যাম্পাস চত্বরে মোতায়েন ব়্যাফ৷ গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

এদিন তিন নম্বর গেটে রাজ্যপালের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা৷ রাজ্যপালের গাড়ি আটকে তিন নম্বর গেটের কাছে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা৷ দফায় দফায় রাজ্যপাল পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার বার্তা দেন৷ মাইকিং করে পড়ুয়াদের সরতে বলা হয়৷ কিন্তু কোনমতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় করে চোখের নিমিষে রাজ্যপালের গাড়ির ঘুড়িয়ে পিছনের ৪ নম্বর গেট দিয়ে সুলেখা মোড় হয়ে রাজ্যপালের গাড়ি রাজভবনের দিকে রওনা হয়৷

রাজ্যপালের গাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার মিনিট ১৫ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ব়্যাফ৷ সেখানে রুটমার্চ করেন জওয়ানরা৷ ক্যাম্পাসের গেটের বাইরে ততক্ষণে অপেক্ষা করছিলেন যাদবপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী৷ কিন্তু অভিযোগ উঠছে, দুপুর থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ তাণ্ডব রুখতে কেন আগাম কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ৷ রাজ্যপাল ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরও কেন পুলিশ ক্যাম্পাসের মধ্যে ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেনি? এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে গিয়েও প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যপাল৷ রাজ্যপালের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়াদের৷ পড়ুয়াদের প্রবল বাঁধা উপেক্ষা করে রাজ্যপাল তিন নম্বর গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতেই প্রবল বাঁধার মুখে পড়ে তিনি৷ পরে কোনোক্রমে বিক্ষোভ এড়িয়ে বাবুলকে উদ্ধার করে নিজের গাড়িতে নিয়ে তুলে নেন রাজ্যপাল৷ কিন্তু, বাবুলকে গাড়িতে ওঠানো গেলেও ক্যাম্পাস বন্দি হয়ে পড়েন রাজ্যপাল ও বাবুল সুপ্রিয়৷ পরে, পড়ুয়াদের চোখে ধুলো দিয়ে রাজ্যপালের কনভয় ক্যাম্পাস ছেড়ে রাজভবনে পৌঁছে যায়৷

ঘটনার সূত্রপাত আজ দুপুরে৷ চুল টেনে, জামা ছিঁড়ে, লাঠি মেরে, ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে হেনস্থার শিকার হন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়৷ পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে উপচার্যকে অসন্তোষ প্রকাশ বাবুলের৷ ক্যাম্পাসে ঢুকতে ও বেরোতে গিয়ে বাধা পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় বাহিনী আনিয়ে বাবুলকে উদ্ধার করার চেষ্টা করা হয়৷ প্রবল বিক্ষোভে ব্যর্থ হয় সেই চেষ্টা৷ জানা গিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীনবরণের অনুষ্ঠানে আজ অতিথি হিসেবে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়৷ অভিযোগ বাবুলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা৷ বিক্ষোভের মুখে পড়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে পাল্টা তর্ক জুড়ে দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷ এই নিয়ে ক্যাম্পাসে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে৷ বাবুলের চুলের চুল টেনে, জামা ছিঁড়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ৷ তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে৷

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন আচার্য তথা বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধানকার৷ উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের কাছ থেকে গোটা ঘটনা রিপোর্ট চেয়ে পাঠানোর পর মুখ্যসচিবকে ফোনে কথা বলেন রাজ্যপাল৷ পরে বাবুলকে উদ্ধারের জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যান আচার্য তথা রাজ্যপাল৷ সেখানেও তাঁকে কার্যত ঘেরাও করা হয়৷

এরপরই তাণ্ডব শুরু করে আরএসএস ছাত্র সংগঠন এবিভিপি৷ তাণ্ডবের জেরে আগুন জ্বলল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে৷ ভাঙচুর করা হল ইউনিয়ন রুম৷ কম্পিউটার, টেবিল, আলমারি ভেঙে তছনছ করে করে দেওয়া হয়েছে৷ ক্যাম্পাসের মধ্যেই জ্বালানো হয়েছে আগুন৷ তছনছ করা হয়েছে আলমারি৷ ইউনিয়ন রুমের বাইরে বড়বড় করে লেখা হয়েছে এবিভিপি৷ একইসঙ্গে রাজা সুবোধ মল্লিক স্কয়ার অবরুদ্ধ করে রেখেছেন বিজেপি কর্মীরা৷ বাঁশ-লাঠি হাতে ক্যাম্পাসে তাণ্ডব চালালোর অভিযোগ আরএসএস ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে৷ জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাসে আগুন নেভাতে দমকল কর্মীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ৷ দমকলের ইঞ্জিনের উপর উঠে আগুন নেভাতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ৷ গোটা ঘটনার জেরে ফের তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা৷ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এভাবে ভাংচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ কেন্দ্রীয়মন্ত্রীকে হেনস্তার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে চত্বরে তাণ্ডবের ঘটনায় নয়া বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × five =