কলকাতা: ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল। মুম্বইয়ের ওয়াঙ্খেড়ে স্টেডিয়ামের গর্জন গোটা দেশ মাতিয়ে দিয়েছিল। কপিল দেবের ট্রফি ছোঁয়ার ২৮ বছর পর ক্রিকেট বিশ্বকাপের এই ট্রফি উঠেছিল কোনও ভারত অধিনায়কের হাতে। নামটা নিশ্চয়ই আর মনে করিয়ে দিতে হবে না। মহেন্দ্র সিং ধোনি। তাঁর সেই অনবদ্য ছয় দিয়ে দেশকে বিশ্বকাপ জেতানো কেউ ভুলতে পারবে না। ক্রিকেটীয় বিচারে ধোনির প্রাপ্তি ঠিক কতটা তা হয়তো হিসেব করে বলা যাবে না। এমন কোনও ট্রফি নেই তিনি পাননি। কিন্তু ক্রিকেটের বাইরেও তো একজন ধোনি আছেন। তাঁর ব্যাপারে জেনে নেওয়াটাও হয়তো আপনার জন্য প্রাপ্তি হবে।
ক্রিকেটের বাইস গজে বরাবর নিজের ক্যারিশমা দেখিয়েছেন তিনি। দেশের অন্যতম সফল অধিনায়কদের মধ্যে ধোনি একজন। কিন্তু এটাও অস্বীকার করা যায় না, খেলার মাঠের বাইরেও তাঁর ছক্কা মারা থামেনি। আসলে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও এককথায় ধোনি ধামাকা জারি আছে। তিনি ক্রিকেটের মাঠে ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নামেও পরিচিত। আর এই ‘কুলনেস’টাই হয়তো তাঁকে ব্যবসায়িক আঙিনায় বিরাট সাফল্য এনে দিয়েছে। যা একপ্রকারভাবে ক্রিকেটীয় সাফল্যের সমতুল্য। কারণ ধোনি একটি বা দুটি নয়, মোট আটটি ব্যবসা সামলান। একাধিক ক্ষেত্রের ব্যবসার সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে আছে। এতদিন তাঁর ক্রিকেট-ক্যারিশমা সম্পর্কে সকলে অবগত ছিল। এবার ব্যবসায়ী ধোনিকে চিনে নেওয়া বাকি।
দেশের প্রথম ড্রোন কোম্পানি গারুদা এরোস্পেসের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তারা একটি সারভাইলেন্স ড্রোন লঞ্চ করেছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ড্রোনি’। এর পাশাপাশি ‘খাতাবুক’ নামে একটি ফিনটেক সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরও হয়েছেন তিনি। খুচরো ব্যবসায়ীরা যাতে ভাল ভাবে আর্থিক লেনদেন করতে পারে তার জন্যই এই উদ্যোগ। চমক এখনও বাকি আছে। ২০২১ সালে একটি খাবার ও পানীয়ের সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরও হয়েছেন মহেন্দ্র। এছাড়া CARS24 সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব আছে তাঁর, ফার্মের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরও তিনি। একই সঙ্গে, একটি হোম ইন্টেরিয়র কোম্পানি এবং জিম সংস্থার সঙ্গেও জুড়ে আছেন ধোনি। বেশিরভাগে ক্ষেত্রেই তিনি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। কিছু ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বও আছে তাঁর।
ব্যক্তিগত দিক থেকেও ব্যবসার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সফল ধোনি। ইতিমধ্যেই নিজের একটি লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড লঞ্চ করেছেন তিনি, যার নাম ‘সেভেন’। প্রথম তিন মাসের মধ্যেই ২.৫ মিলিয়ন ডলার টার্ন ওভার অতিক্রম করেছে এই সংস্থা। আর ধোনির বাইক-প্রেমের কথা তো সকলেরই জানা। কিন্তু এটা কি জানা যে, ‘মাহি রেসিং টিম ইন্ডিয়া’ নামে তাঁর একটি সুপারবাইক ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ দল আছে? তবে এত বিনিয়োগ বা উপার্জনের পরেই নিজের কন্যার শিক্ষায় কোনও খামতি রাখেননি ‘মাহি’।
জানলে অবাক হতে হয়, ধোনি-কন্যা জিভা যে স্কুলে পড়াশুনা করে তার সর্বনিম্ন বার্ষিক ফি ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। জিভা টরিয়ান ওয়ার্ল্ড স্কুলে পড়াশোনা করে যা রাঁচির সেরা স্কুলগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত। স্কুলের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুসারে, এলকেজি থেকে ক্লাস ১-এর বার্ষিক ফি ওই আড়াই লক্ষ টাকা। তবে ক্লাস ২-৮-এর জন্য বার্ষিক ফি ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা এবং ৯-১২ ক্লাসের জন্য ফি ৩ লক্ষ ৫ হাজার টাকা৷ জিভা এই স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।