নয়াদিল্লি: ফুরিয়েছে সরকারি আবাসনে থাকার মেয়াদ। আর তাই গভীর রাত প্রায় ১টার সময় নবতিপর শিল্পীকে বাড়ি থেকে বের করা হল ঘাড় ধাক্কা দিয়ে। মধ্যরাতে বাড়ির ভিতর থেকে প্রায় ফেলে দেওয়া হল পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত এই শিল্পীর সমস্ত জিনিস। পরিবর্তে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি। সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে এই ঘটনা। আর তারপরই বিষয়টিকে নিয়ে রীতিমতো নিন্দার ঝড় উঠেছে নেট পাড়ায়।
জানা গেছে সম্প্রতি ৮ বিখ্যাত শিল্পীকে আগামি ২ মের মধ্যে সরকারি আবাসন খালি করার নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শিল্পী কোটায় ওই আবাসনে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। যার মেয়াদ ফুরিয়েছে আজ থেকে প্রায় আট বছর আগে ২০১৪ সালে। কিন্তু তারপরেও নাকি এই সমস্ত শিল্পীরা সরকারি আবাসন ছাড়েননি। মূলত সেই কারণেই মধ্যরাত্রে নবতিপর ওই ওড়িশি নৃত্যশিল্পী গুরু মায়াধর রাউতকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি পুরো বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শিল্পীর মেয়ে মধুমিতা। তিনি এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘৯০ বছরের এক বৃদ্ধের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তা কোনওভাবেই মানা যায় না। যেভাবে বাড়ির ভেতর থেকে জিনিসপত্র ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং মধ্যরাত্রে কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে আমার বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তারপরেও যে আমার বাবা বেঁচে আছে এটাই সবথেকে বড় পাওনা। মধুমিতা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে দিল্লির এশিয়ান গেমস ভিলেজের বাংলায় হানা দিয়ে সরকারি অফিসাররা কোন কিছু না জানিয়েই হঠাৎ করে তাঁদের জিনিসপত্র রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলতে শুরু করেন। ছুঁয়ে ফেলা হয় দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত একাধিক সম্মান শংসাপত্র এবং পুরস্কার। এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া পদ্মসম্মানকেউ টেনে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।এইভাবেই দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পরে থাকে পদ্মসম্মান। সেই ছবিও তিনি শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কন্যা মধুমিতার কথায় মিলেছে রাজনৈতিক অভিসন্ধির গন্ধ। তিনি এই প্রসঙ্গে আর বলেছেন, ‘বাবাকে বাংলো বরাদ্দ করেছিল রাজীব গান্ধি সরকার। সেই সরকারের দেওয়া বাংলো থেকে উৎখাত হওয়াটাই এখন স্বাভাবিক। আর যেটা সব থেকে বেশি লজ্জাজনক, তা হল যে কায়দায় বাংলো থেকে বাবাকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ঘরে যা যা ছিল সব টেনে বের করে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলছিল ওরা। ঘটনাচক্রে সেদিন আমি বাবার সঙ্গে ছিলাম। না থাকলে হয়তো বাবা এই ধাক্কা সহ্য করতে পারতেন না। মরেই যেতেন। রাত একটার সময় দরজায় টোকা মেরে দরজা খুলতে বলার নির্দেশ। খুলে না ফেললে ভেঙে ফেলার হুমকি।’