বছর দশেক আগে ২০১৩ সালে সাহিত্য একাডেমি সম্মানে পুরস্কৃত জনপ্রিয় এক লেখোকের লেখা পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন দিল্লির মুখার্জি নগরের বাসিন্দা এক মহিলা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই মহিলার ডাকে ওই লেখক সাড়াও দেন। এরপর ফেসবুকের হাত ধরেই বন্ধুত্ব এবং সেই বন্ধুত্ব থেকে পরে প্রেম। দুজনের প্রেমের সম্পর্কে এতটাই গভির হয়েছিল যে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই স্বনামধন্য ওই লেখক মহিলাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজিও হন ওই মহিলা। এতটুকু পর্যন্ত সবকিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু সম্প্রতি একাডেমি পুরস্কারে সম্মানিত ওই লেখকের প্রিয়সি হাজির হয়েছেন থানায়। তাঁর অভিযোগ ১০ বছর ধরে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই মহিলার সঙ্গে সহবাস, যৌন নির্যাতন এমনকি তাঁকে ধর্ষণ পর্যন্ত করেছেন স্বনামধন্য ওই লেখক। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো আলোড়ন পড়েছে সাহিত্য জগতে। নির্যাতিতা তাঁর বয়ানে ওই লেখক কিভাবে এতদিন ধরে তাঁর ওপর নির্যাতন চালিয়েছে সেই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। আর সেই বয়ানেই কার্যত তোলপাড় লেখক শিল্পী-মহল। ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশের কাছে ওই মহিলা লেখকের বিরুদ্ধে লিখিত এফআইআর দায়ের করেছেন।
অভিযোগে মহিলা লেখেন, সাহিত্যিকের লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই ওই সাহিত্যিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। পরে সাহিত্যিক নিজেই মহিলাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। কিন্তু পরবর্তীতে শুরু হয় মহিলার ওপর ভয়াবহ অত্যাচার। নির্যাতিতদের দায়ের হওয়া এফআইআর-এ লিখেছেন, ‘২০১৩ সালে দিল্লির এইমসে চক্ষু পরীক্ষার জন্য গিয়েছিলাম। বাড়ি ফিরতে সামান্য দেরি হওয়ায় আমাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আমি ভীষণ চিৎকার করেছিলাম।’ আর সেই চিৎকার থামাতে ওই সাহিত্যিক তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। পরের দিন তিনি তাঁর কৃতকর্মের জন্যে ক্ষমা চেয়ে নেন এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির পর দশ বছর পরেও বিয়ে করেননি ওই সাহিত্যিক। কিন্তু এই দশ বছরে ওই মহিলার ইচ্ছা-অনিচ্ছা কোনও কিছুর পরোয়া না করেই তাঁর সঙ্গে লাগাতার সহবাস করে গিয়েছেন।
অপরাধের তালিকায এখানেই শেষ নয়। ওই মহিলা আরও জানিয়েছেন যে ওই সাহিত্যিকের সঙ্গে ওই মহিলা ছাড়াও আরও বহু মহিলার সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি সাহিত্যিকের মোবাইল ঘাটতে গিয়ে মহিলা দেখেন যে তিনি একা নন এই প্রতারণার শিকার আগেও অনেকে হয়েছেন এবং বহু মহিলার উপরেই সাহিত্যিক এই একই রকমভাবে শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছেন।