নয়াদিল্লি: নারীরা এগিয়ে চলেছে। ছেলেদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধে কর্মক্ষেত্রে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বাইরে থেকে দেখতে এমনটাই লাগলেও কেন্দ্রীয় সরকারের সম্প্রতি একটু রিপোর্ট চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। মেয়েদের এই উন্নতি কয়েকজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে মনে হবে। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে, যে নিজেদের অবস্থান নিয়ে সন্দেহ জাগতে শুরু করেছে।
গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন। সেই রিপোর্টের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতি তিনজনে একজন বিবাহিত মহিলা কর্মরতা।অথচ দেশের ৪৪ শতাংশ মহিলা একা একা বাইরে যাওয়ার এমনকী বাজারে যাওয়ারও অনুমতি পাননা। প্রতি পাঁচ জনকে চার জন মহিলা স্বামীকে যৌন সম্পর্কে না বলতে পারেন না। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে গোয়া। গোয়াতে ৯২ শতাংশ মহিলা স্বামীকে যৌন সম্পর্কে সরাসরি না বলতে পারেন না। সব থেকে কম রয়েছে অরুণাচল প্রদেশে। সেখানে ৬০ শতাংশ মহিলা স্বামীকে সরাসরি না বলতে পারেন না। সব থেকে আশ্চর্যের ঘটনা দেশের ৪৫ শতাংশ স্ত্রী মনে করেন রান্না বাজে হলে, কথা না শুনলে, যৌন সম্পর্কে অসম্মতি জানালে স্বামীর মারধরের অধিকার রয়েছে।
দেশের সম্প্রতি বৈবাহিক ধর্ষণ শব্দটি উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিবাহিত কোনও মহিলাকে তাঁর স্বামী জোর করে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত করতে পারেন না। তা অপরাধ। কিন্তি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, যৌন সম্পর্কে অনিচ্ছার কথা বেশিরভাগ স্ত্রী তাঁদের স্বামীকে বলতে পারেন না। এই সমীক্ষায় শুধু মহিলা নয়, পুরুষরাও অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে পুরুষদের কাছে প্রশ্ন করা হয়, যৌন সম্পর্কে অনিচ্ছা প্রকাশকারী স্ত্রীর সঙ্গে কী করা উচিত? এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতে চারটি উত্তর অপশন দেওয়া হয়। এক- স্ত্রীর ওপর রেগে যাওয়া, দুই-টাকা পয়সা না দেওয়া, তিন- জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করা, চার- অন্য কারও সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করা। তবে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৭৭ শতাংশ পুরুষ কোনও অপশনকেই পছন্দ করেননি।
২০১৯ সালের ১৭ জুন থেকে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত এই সমীক্ষা ১৭টি রাজ্য ও পাঁচটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে চালানো হয়। আবার ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত আর একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল ১১টি রাজ্য ও তিনটি কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলে।