বর্ধমান: ফের বেলাগাম রাজ্য বিজেপি সভাপতি৷ এবার ফের একবার দিলীপ ঘোষের রোষের মুখে পড়লেন বাংলার বিদ্বজনেরা৷ দিলীপের বেনজির আক্রমণে উঠে এল সেই গোমাংস ইস্যু৷ বুদ্ধিজীবীরা কেন কুকুরের মাংস ভক্ষণ করেন না? কটাক্ষ দিলীপের৷
বর্ধমান টাউন হলে গাভী কল্যাণ সমিতির সভায় সংবাদসংস্থা এএনআইকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘বাংলার বেশ কিছু বিদ্বজন আছেন, যাঁরা প্রকাশ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গোমাংস ভক্ষণ করেন৷ আমি বলছি, আপনারা গোমাংস খেলে কেন কুকুরের মাংস খানেব না? মাংসখান৷ কিন্তু রাস্তায় দাঁড়িয়ে কেন? গোরুকে আমরা দেবতা জ্ঞানে পুজো করি৷ গোরুর দুধ খেয়ে বেঁচে থাকি আমরা৷ যদি আমাদের মায়ের সঙ্গে কেউ খারাপ ব্যবহার করে তা আমি মেনে নেব না৷ ভারতে গোহত্যা অপরাধ৷’’
দেশজুড়ে চলতে থাকা অসহিষ্ণুতা ও দাদরি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে শহরের রাজপথে দাঁড়িয়ে বাম ও তৃণমূলপন্থী বিদ্বজনেদের একাংশ গোমাংস ভক্ষণ করেন৷ ওই ঘটনা গোটা দেশজুড়ি ছড়িয়ে পড়ে নয়া বিতর্ক৷ মূলত, ওই ঘটনাকে ফের একবার উষ্কে ফের বিতর্ক বাড়ালেন দিলীপ৷
Dilip Ghosh, Bharatiya Janata Party (BJP) West Bengal President, in Burdwan: Few intellectuals eat beef on roads, I tell them to eat dog meat too, their health will be fine whichever animal they eat, but why on roads? Eat at your home. (4.11.19) pic.twitter.com/s5Muy6sBfn
— ANI (@ANI) November 5, 2019
এদিন ওই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে গোমাতার হয়ে দিলীপ নয়া তত্ত্ব ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ সোমবার গোরুর উপকারিতা বোঝাতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে করতে আজ জমি অনুর্বর হয়ে গিয়েছে৷ যদি আমাদের বাংলায় জমি অনুর্বর হয়ে যায়, তাহলে সেই জমিতে চাষ হবে না৷ তাহলে খাব কী? আমাদের এই বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত৷ গোরুর গোবর থেকে তার খাবারের খরচা উঠে আসতে পারে, যদি তা ঠিকমতো প্রয়োগ করা যায়৷ কেন্দ্রীয় সরকারও বিশেষভাবে চেষ্টা করছে৷ গোবর সার দিয়ে জমি চাষ করতে৷ যাতে জমির উর্বরা শক্তি নষ্ট না হয়৷ আমাদের যে ধার্মীয় ধারণা আছে, গোরুর শরীরে, গাভীর শরীরে ৩৩ কোটি দেবতার বসবাস করেন৷ সেই জন্য আমরা গোরুকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করি৷’’
খোলা মঞ্চ থেকে দিলীপ ঘোষের আরও মন্তব্য, ‘‘গোরুর দুধ খেলে শরীর সুস্থ হয়৷ পুষ্ট হয়৷ রোগ প্রতিষেধক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়৷ আমাদের দেশি গোরুর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তার দুধের মধ্যে সোনার ভাব থাকে৷ আর সেই কারণে দুধের রং একটু হলদে হয়৷ আর আমাদের দেশের গোরুদের যে ঝুন্ড থাকে, বিদেশি গোরুর মধ্যে এরকম ধরনের কুঁজ থাকে না৷ বিদেশি গোরুদের পিঠ মোষের মতো৷ সেই জন্য বলি, গোরুর যে কুঁজ থাকে, তার মধ্যে একটা নাড়ি থাকে৷ সেটাকে বলা হয় স্বর্ণনাড়ি৷ সূর্যের আলো পড়লে সেখান সোনা তৈরি হয়৷ তাই গোরুর দুধ হলদে হয়৷ আর সেই গোরুর দুধের মধ্যে থেকে প্রতিষেধক ক্ষমতা থাকে৷ অন্য দেশ আমাদের দেশ থেকে গোরুকে শোধন করার চেষ্টা করছে৷’’ দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য ঘিরে নেটপাড়ায় সপ্তমে বিতর্ক৷