কোন দলের লোক ছিলেন বাংলার রাজ্যপাল? জানেন চমকে উঠবেন!

কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরকে ‘বিজেপি পার্টি’র লোক বলেছেন৷ কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে রাজ্যপাল নিজের রাজনৈতিক জীবনে জনতা দলের সদস্য ছিলেন৷ সাংসদ হিসাবে দায়িত্ব সামলেছেন৷ বিধায়ক হিসাবেও তাঁকে দেখা গিয়েছে৷ রাজ্যপাল অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসাবেই বেশি পরিচিত ছিলেন৷ রাজ্যপাল এবং রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে প্রথম সংঘাতের আবহ বর্তমান৷ হাওড়ার নবান্ন এবং রাজভবনের মধ্যে

কোন দলের লোক ছিলেন বাংলার রাজ্যপাল? জানেন চমকে উঠবেন!

কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরকে ‘বিজেপি পার্টি’র লোক বলেছেন৷ কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে রাজ্যপাল নিজের রাজনৈতিক জীবনে জনতা দলের সদস্য ছিলেন৷ সাংসদ হিসাবে দায়িত্ব সামলেছেন৷ বিধায়ক হিসাবেও তাঁকে দেখা গিয়েছে৷ রাজ্যপাল অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসাবেই বেশি পরিচিত ছিলেন৷

রাজ্যপাল এবং রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে প্রথম সংঘাতের আবহ বর্তমান৷ হাওড়ার নবান্ন এবং রাজভবনের মধ্যে দূরত্ব যেন ক্রমশই বাড়ছে৷ এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায এতদিন চুপই ছিলেন৷ তিনি সরাসরি মন্তব্যে যাননি৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে সুব্রত মুখোপাধ্যায় – মমতার সিনিয়ার মন্ত্রীরা রাজ্যপালকে জবাব ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন৷ তবে এবার মমতাও সরাসরি সমালোচনায় নেমেছেন৷

রাজ্যপাল বিভিন্ন দিক থেকে রাজ্য সরকারকে সমালোচনা করছেন৷ রাজ্য সরকারের মনে হয়েছে তিনি বিজেপির কন্ঠস্বর হয়ে গিয়েছেন৷ কিন্তু আদতে জনতা দলের এই প্রবীন নেতার রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল রাজস্থানে৷ রাজস্থানের ঝুনঝুনু লোকসভা কেন্দ্রে ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন জগদীপ ধনখর৷ রাজস্থানের কিষাণগড় বিধানসভা কেন্দ্রে ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বিধায়ক ছিলেন এই আইনজীবী৷ রাজস্থান হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও ছিলেন৷

রাজ্যপাল এবং রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে প্রথম সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ বিক্ষোভের মুখে পড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে সেখানে নিজেই যান রাজ্যপাল৷ মুখ্যমন্ত্রীর বারবার নিষেধ তিনি শোনেননি৷ দূরত্ব সেইদিন থেকেই বাড়তে থাকে৷ অথচ শুরুটা খারাপ ছিল না৷ রাজ্যপালের নিয়োগের খবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ কিন্তু, তৃণমূল নেতা দীনেশ ত্রিবেদী যখন রাজ্যপালের বিষয়ে জানিয়েছিলেন, তখন বলেছিলেন, এই রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ দিনের আলাপ৷ বাংলার ভালোই হবে৷

যাদবপুরের পরে আসে উত্তর বঙ্গের ঘটনা৷ উত্তরবঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে চান রাজ্যপাল৷ একমাত্র বিজেপি এবং কংগ্রেসের এমপি-এমএলএ ছাড়া কেউ সেই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেনি৷ ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল বলেন, তিনি প্রীতিটি জেলায় যাবেন৷ বৈঠক করবেন৷ এরমাঝে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল এবং তাঁর পরিবার নৃশংসভাবে খুন হয়৷ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নেই – সরব হন রাজ্যপাল৷ কিছুদিন আগে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধীদের সঙ্গে দেখা করতে চান রাজ্যপাল৷ সেই বৈঠকও ছিল ফাঁকা৷ এই পরিস্থিতিতে রাজ্য কীভাবে তা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেন রাজ্যপাল৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য রাজভবনে এবং নবান্নের সম্পর্কের এই তিক্ততাকে নতুন দেখছেন না৷ বাম আমলে রাজ্যপাল গোপাল কৃষ্ণ গান্ধীর সঙ্গে মহাকরণের বিভিন্ন বিষয়ে ঝামেলা লেগেছিল৷ বিশেষ করে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে রাজ্যপালের ভূমিকাকে ভালো চোখে দেখে না বামেরা৷

জগদীপ ঘনখরের আগের রাজ্যপাল কেশরিনাথ ত্রিপাঠির সঙ্গেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য হয়েছে৷ পর্যবেক্ষকরা অনেকেই মনে করেন, বলছেন, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত এই দ্বন্দ্ব চলতেই থাকবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 1 =