রাজভবনে কেন আটকে বিল? অচল বিধানসভায় রাজ্যপাল

কলকাতা: নজিরবিহীনভাবে যেমন বিধানসভার অধিবেশন বয়কট করেছেন, ঠিক তেমনভাবেই বিধানসভা মুলতবি থাকা সত্ত্বেও নজিরবিহীনভাবে আগামীকাল বিধানসভায় যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার৷ কোন উদ্বেগ প্রকাশ না করে খুব স্বাভাবিকভাবেই জানালেন বিধানসভার হাল-হকিকত পরিদর্শনে যাচ্ছেন তিনি৷ নিয়ম মেনে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় বিধানসভায় পৌঁছে যাবেন বলেও জানিয়েছেন৷ আগামীকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বিধানসভায় যেতে চেয়ে স্পিকার বিমান

রাজভবনে কেন আটকে বিল? অচল বিধানসভায় রাজ্যপাল

কলকাতা: নজিরবিহীনভাবে যেমন বিধানসভার অধিবেশন বয়কট করেছেন, ঠিক তেমনভাবেই বিধানসভা মুলতবি থাকা সত্ত্বেও নজিরবিহীনভাবে আগামীকাল বিধানসভায় যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার৷ কোন উদ্বেগ প্রকাশ না করে খুব স্বাভাবিকভাবেই জানালেন বিধানসভার হাল-হকিকত পরিদর্শনে যাচ্ছেন তিনি৷ নিয়ম মেনে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় বিধানসভায় পৌঁছে যাবেন বলেও জানিয়েছেন৷ আগামীকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বিধানসভায় যেতে চেয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও দিয়েছেন তিনি৷ চিঠি পাওয়ার পর স্পিকারের সচিবালয় থেকে বিধানসভার কর্মীদের আগামীকাল সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷

রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই প্রশাসনিক ক্ষেত্রে একের পর এক মনগড়া বক্তব্য এবং পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্কে কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছেন তিনি৷ তাঁর আচরণ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরক্ত রাজ্য সরকার৷ একের পর এক অসাংবিধানিক পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠছে৷ এরইমধ্যেই বিধানসভার অধিবেশন বয়কটের ঘটনাটি রীতিমতো নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন বাম-কংগ্রেস সহ ওয়াকিবহাল মহল৷ রাজ্যপাল বিলে সই করছেন না,এই কারণে মঙ্গলবার অধিবেশনের মাঝপথেই বিধানসভা দু’দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্তু রাত কাটতে না কাটতেই রাজ্যপালের সিদ্ধান্তে বদল৷

একদিকে তাঁর অনুপস্থিতিতে রাজ্য সরকারের বিল পাশের অনুমতি আটকে রয়েছে রাজভবনে৷ সূত্রের দাবি, গণপিটুনি প্রতিরোধ, তফসিলি ও আদিবাসী নির্যাতন বিরোধী বিল, পুর সংশোধনী-বিল সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল রাজভবনে পাঠিয়েছিল বিধানসভার সচিবালয়৷ এছাড়া শিক্ষা দপ্তরের একাধিক বিলের খসড়াও রাজভবনে আটকে রয়েছে বলে জানা গেছে৷  কমিশন গঠনের প্রক্রিয়াও রাজ্যপালের কারণে বিলম্বিত হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

গত বিধানসভা অধিবেশনে পাশ হওয়া গণপিটুনি রোধ বিল পাশ হওয়া সত্ত্বেও তা রাজ্যপালের সম্মতিসূচক স্বাক্ষর পায়নি৷ ফলে ওই বিল আইনে পরিণত করে কার্যকরের রাস্তাও বন্ধ৷ এই নিয়েও শাসকপক্ষ যথেষ্ট বিরক্ত৷ যদিও বিল আটকে থাকার দায় রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ওপর চাপিয়ে দিয়ে নিজের দায় এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন রাজ্যপাল৷ এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের গাফিলতি দেখিয়ে অবশ্য বড়োসড়ো একটি তালিকাও তুলে ধরেছে রাজভবন৷

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভবনের জারি করা বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তফসিলি জাতি-উপজাতি কমিশন বিল ২০১৯, গত ২৯ নভেম্বর রাজভবনে জমা পড়ে৷ ৩ ডিসেম্বর অনগ্রসর শ্রেণীকল্যাণ দপ্তরে সচিবকে চিঠি দিয়ে ওই বিষয়ে বিশদে জানতে চান রাজ্যপাল৷ ২৯ তারিখে নবান্নের তরফে বিলের খসড়া পেয়েই ৩ তারিখে ওই আধিকারিককে ডেকে পাঠান৷ ৩০ নভেম্বর ও পয়লা ডিসেম্বর দু’দিন শনি ও রবিবার পড়ে যাওয়ায় ৩ তারিখ সময় দেওয়া হয়েছিল৷ লিফট, এসকালেটর, ট্রাভেলটর বিষয়ক একটি বিল সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব তাঁকে ব্যাখ্যা দেবেন বলে জানানো হয়৷

এখনও পর্যন্ত সে বিষয়ে কোনও সাড়া মেলেনি বলে দাবি রাজভবনের৷ এরপর পুর বিষয়ক একটি সংশোধনী বিলে সংক্রান্ত ব্যাখ্যা চেয়ে গত ১১ নভেম্বরে নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে চিঠি দেন রাজ্যপাল৷ সেক্ষেত্রে কোন সাড়া না মেলায় ৪ ডিসেম্বর অর্থাৎ বুধবার তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়৷ তবে সেই অনুমতি মেলেনি বলেও ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে৷ একইভাবে হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয় বিল ও অ্যাপার্টমেন্ট ওনারশিপ সংশোধনী বিল নিয়ে রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের তলব করলেও সাড়া মেলেনি বলে দাবি করা হয়েছে৷ সুতরাং বিল নিয়ে রাজভবনের দিকে তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে পরোক্ষে শাসক দলের ওপর এই দায়ভার চাপাতে চেয়েছেন রাজ্যপাল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − one =