ভোপাল: করোনাকালে প্রায় অনেকদিন ধরেই গ্রামের মেলা, জমায়েত বন্ধ থাকায় সাম্প্রতিক একটি ছোট মেলাকে কেন্দ্র করেই গ্রামবাসীর উচ্ছ্বাস পৌঁছে ছিল চূড়ান্ত পর্যায়ে। অন্যান্যবারের তুলনায় এবারের মেলায় তাই ভিড়ও হয়েছিল অনেকটাই বেশি। স্থানীয় এই ছোট মেলাতেই আনন্দ মজা করতে হাজির হয়েছিল গোটা গ্রাম। কিন্তু এই মেলাতেই কি ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে তাদের জন্য, তা কেউই আগের থেকে টের পাননি। গ্রাম হোক কিংবা শহর, মেলায় ফুচকা, ঘুগনির দোকান থাকবে না এ কার্যত অসম্ভব। কিন্তু সামান্য ফুচকা খেয়ে যে কি ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে গ্রামবাসীর তা কল্পনাও করতে পারেনি শৃঙ্গারপুর গ্রামের বাসিন্দারা। জানা যাচ্ছে ওই গ্রামের মেলাতেই ফুচকা খেয়ে রাতারাতি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে কমপক্ষে একশো জন গ্রামবাসীকে। তাদের অনেকের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক বলেও হাসপাতাল সূত্রে খবর। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে ফুচকার জলে ভয়াবহ বিষক্রিয়ার কারণেই এই অঘটন। মধ্যপ্রদেশের মানডোলা জেলার ওই গ্রামের ঘটনা রীতিমতো উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকারও।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার মান্ডলার ওই গ্রামে স্থানীয় একটি মেলার ফুচকার দোকানে ফুচকা খেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কমপক্ষে ৯৭ জন। অসুস্থদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু বলে খবর। জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, শনিবার রাত থেকেই একের পর এক রোগী পেটে ব্যথা এবং বমির সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসতে শুরু করেন। প্রথম দিকে বেশিরভাগ শিশুদের হাসপাতালে আনা হলেও পরে প্রাপ্তবয়স্করাও একে একে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসতে শুরু করেন। প্রাথমিকভাবে দেখেই বোঝা যায় যে খাবারে বিষক্রিয়ার কারণ এই ঘটনা ঘটেছে। এরপর অসুস্থদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যায়, তারা সকলেই গ্রামের মেলার একটি ফুচকার দোকানে ফুচকা খান এবং তারপরেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ওই চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন এই মুহূর্তে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোট ৯৭ জন। যাদের মধ্যে ৩৩ জন শিশু। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুর জ্বর হয়েছে হলেও তিনি জানিয়েছেন। কিন্তু এর সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন যে ওই গ্রামের এমন বহু মানুষ রয়েছে যাদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং এই মুহূর্তে তারা বাড়িতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
অন্যদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয় পুলিশ ওই ফুচকাওয়ালাকে আটক করেছে। আপাতত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে যে কীভাবে এই বিষক্রিয়ার ঘটনা ঘটল। তবে এই ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোনো কিছুই বিস্তারিত জানা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অভিযুক্ত ওই ফুচকাওয়ালার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৬৯ ও ২৭২ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।