নয়াদিল্লি: সোমবার বিকেলে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করেছে ইডি। তবে চলতি বছরের শুরুতেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল আশঙ্কা করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করা হতে পারে। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। সত্যেন্দ্র জৈনের গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া। ট্যুইটারে জানিয়েছেন, হিমাচলপ্রদেশের ভোটকে সামনে রেখেই সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করানো হয়েছে মিথ্যা অভিযোগে। প্রসঙ্গত, নির্বাচনের আগে হিমাচল প্রদেশে আপের দায়িত্বে রয়েছেন মনীশ সিসোদিয়া।
সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতারের পরেই ট্যুইটারে ক্ষোভ উগড়ে দেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, আট বছর ধরে সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা চলছে। এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ইডি সত্যেন্দ্র জৈনকে ডেকে পাঠিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। মাঝে সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ না পেয়ে এই তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন ইডি আবার নতুন করে সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত শুরু করেছে। কারণ একটাই। সত্যেন্দ্র জৈন বর্তমানে হিমাচল প্রদেশের নির্বাচনে আপের দায়িত্বে রয়েছেন। মনীশ সিসোদিয়া পাশাপাশি বলেন, বিজেপি বুঝতে পারছে, হিমাচলপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে তারা খুব খারাপ ফল করবে। ওই নির্বাচনে বিজেপির ভালো ফল করার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই আতঙ্কেই কেন্দ্র ইডির সাহায্যে সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করিয়েছে। যাতে তিনি আর হিমাচলে যেতে না পারেন। তবে অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভুয়ো বলে মনীশ সিসোদিয়া দাবি করেছেন। তিনি আশা করছেন কয়েকদিনের মধ্যেই সত্যেন্দ্র জৈন ছাড়া পেয়ে যাবেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শেষের দিকে হিমাচলপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। সেই নির্বাচনের ওপর আপ প্রথম থেকেই জোর দিচ্ছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনে জয় লাভের পর আপ আগের থেকে অনেকটা বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়েছে। পঞ্জাব নির্বাচনের আগেই সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল আশঙ্কা করেছিলেন। সেই আশঙ্কা সত্যি হল। তবে হিমাচলপ্রদশের নির্বাচনের আগে আপ মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করা হল। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কেন্দ্র ব্যবহার করছে।
উল্লেখ্য ২০১৭ সালে সিবিআই ১.৬২ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সত্যেন্দ্র জৈন ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এরপর সিবিআই তরফে দায়ের করা অভিযোগে জানানো হয়, ২০১১-১২ সালে ১১.৭৮ কোটি টাকা ও ২০১৫-১৬ সালে ৪.৬৩ কোটি টাকা পাচারের জন্য চারটি শেল ফার্ম গঠন করেন। বাস্তবে যার কোনও অস্তিত্ব নেই। সিবিআইয়ের প্রথম তথ্য রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্তে নামে ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর।