নিজেকে বিয়ে হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধ, মন্দিরে বিবাহ বন্ধের নিদান বিজেপি নেত্রীর

নিজেকে বিয়ে হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধ, মন্দিরে বিবাহ বন্ধের নিদান বিজেপি নেত্রীর

 

গান্ধীনগর: নিজেকে নিজেই বিয়ে করতে চান ক্ষমা বিন্দু। আগামী ১১ তারিখ তিনি মন্দিরে এই বিয়ে করবেন। এই কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এই বিয়ে মন্দিরে কিছুতেই হতে পারে না। তার নিদান দিলেন গুজরাটের বিজেপি নেত্রী সুনিতা শুক্ল। এ কথা জানাজানি হওয়ার পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। হিন্দুত্ববাদী আক্রমণ হতেই পারে এই বিয়ে ঘিরে। এই আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এবার সেই বিতর্ক চলে এল সামনে। তরুণীদের মধ্যে এমন বিয়ে শুরু হলে হিন্দুদের জনসংখ্যা কমে যাবে। একথাও জানিয়েছেন বিজেপি নেত্রী।

নিজেকে সব থেকে বেশি ভালবাসেন এই পৃথিবীতে। তাই অন্য কারোও সঙ্গে থাকার কথা ভাবতে পারেন না। নিজেকেই বিয়ে করতে চলেছেন বছর চব্বিশের তরুণী। এই ঘটনা রীতিমতো শোরগোল ফেলেছে। কিন্তু তিনি কোনওভাবেই বিচলিত নন। সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার প্রশ্ন আসে না। কারণ তার সিদ্ধান্তে পরিবার পাশে রয়েছে। ক্ষমা বিন্দু আগামী ১১ জুন তিনি বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন। ভারতবর্ষে এই ঘটনা আগে হয়নি বলেই খবর। ক্ষমা নিজেই জানিয়েছেন, তিনি ভারতে প্রথম যিনি নিজেকেই বিয়ে করছেন। আর এই বিয়ে সম্পূর্ণ হিন্দু রীতি রেওয়াজ মেনেই হবে। শুধু পাত্র থাকবে না। পাত্রপক্ষের উপস্থিতি নেই। কনেযাত্রী বরযাত্রী সবই এক থাকবে। কনে, কন্যা দান, সিঁদুর দান, অগ্নিসাক্ষী বিয়ের মন্ত্র থাকছে। আগামী ১১ জুন গুজরাটের গোত্রের এক মন্দিরে এই বিবাহ সম্পন্ন হবে।

এখানেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। হিন্দু ধর্মে এই ধরনের বিয়ের রীতি নেই। এই ধরনের বিয়ে কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। নিজেকে নিজে বিয়ে করা হিন্দু ধর্মের বিরোধী। তাই এই বিয়ে কিছুতেই মন্দির হতে পারে না। গুজরাটের বিজেপি নেত্রী সুনিতা শুক্ল এই কথা জানিয়েছেন। ওই তরুণী মানসিকভাবে অসুস্থ। কিছুতেই এই বিয়ে সম্ভব নয়। হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে গিয়ে এই ঘটনা হচ্ছে। সুনিতা শুক্ল রীতিমতো আক্রমণ করেছেন বিন্দুকে। তার মতে, এই জিনিস শুরু হলে হিন্দুদের জনসংখ্যা কমতে শুরু করবে। বিজেপি শাসিত গুজরাট রাজ্য।  সেখানকার বাসিন্দা ক্ষমা বিন্দুর পরিবার। তাহলে কি মন্দিরে এই বিয়ে সম্ভব হবে? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ভারতবর্ষে এই ধরনের বিয়ে আজ অবধি হয়নি। প্রথম কোনও তরুণী নিজেকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আধুনিক যুগে এই ঘটনা কি সম্ভব? তাই নিয়ে বিভিন্ন মহলে চর্চা চলছে। কিন্তু ধর্মীয় রং লেগে যাওয়ায় এবার নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা। এদিকে ক্ষমা বিন্দু কোনওভাবেই এই বিজেপি নেত্রীর বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি নির্ধারিত দিনে মন্দিরে বিয়ে করবেন। একথা পরিষ্কার জানিয়েছেন।

ক্ষমা বিন্দু জানান, বিয়ে দুটি মানুষের ভালোবেসে একসঙ্গে থাকার কথা বলে। আমি যদি নিজেকে ভালোবাসি, তাহলে নিজেকে বিয়ে করতে আপত্তি কোথায়? আর নতুন করে কিছু এরপর বলা যায় না। মনস্তত্ত্বের বিচারে এই ঘটনাকে সোল্যোগামি বলা হয়। সোল্যোগামি খুবই বিরল ঘটনা। হাতেগোনা কিছু মানুষের মধ্যে থাকে। বিন্দু সেই সোল্যোগামীর  উচ্চপর্যায়ে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথমে এই বিয়ে নিয়ে পরিবারের মত ছিল না। পরে মেয়ের কথা ভেবে বাবা-মা এই বিয়েতে মত দেন। জোগাড়যন্ত্র প্রায় হয়ে এসেছে। এখন নির্দিষ্ট সময়ে এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার অপেক্ষা। বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমার জন্য ক্ষমা গোয়া যাচ্ছেন। তার যোগাড়যন্ত্রও হয়ে গিয়েছে বলে খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *