লখনউ: মোবাইল গেমের প্রতি এতটাই আসক্ত ছেলে যে মোবাইল ফোনের স্ক্রিন থেকে মুখ তোলার সময় হত না তার। প্রায় প্রতিদিনই একটু একটু করে বাড়ছিল এই আসক্তি। গেমের মোহে ছেলে একেবারে বয়ে যাচ্ছে দেখে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মা। আর তারই ফল হল ভয়াবহ। গেম খেলতে বাধা দেওয়ায় মাকেই গুলি করে খুন করল ১৬ বছরের ওই নাবালক ছেলে। এমনকি খুন করার পরে বাড়িতেই মায়ের দেহ লুকিয়ে রেখেছিল সে, পুলিশ সূত্রে খবর এমনটাই। দেহের পচনের গন্ধ ঢাকতে বারবার ব্যবহার করা হয়েছিল রুম ফ্রেশনারও। ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। সোমবার মাকে খুন করার পর ওই নাবালক মায়ের দেহ বাড়িতেই লুকিয়ে রাখে বলে খবর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার রাতে খুনের কিনারা করে পুলিশ। তৎক্ষণাৎ গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত ওই নাবালককে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, মৃতা ওই মহিলার এক ছেলে এবং এক মেয়ে। মোবাইল ফোনে গেম খেলা নিয়ে সোমবারই ছেলের সঙ্গে তীব্র বচসা হয় ওই মহিলার। ক্রমে সেই ঝামেলায়ই এমন জায়গায় পৌঁছায় যে মাকে গুলি করে খুন করে ওই নাবালক। প্রসঙ্গত মৃতার স্বামী একজন সেনা আধিকারিক। এই মুহূর্তে তিনি আমাদের রাজ্য বাংলাতে পোস্টিংয়ে রয়েছেন। মাকে খুন করার পর প্রথম দিন ওই নাবালক কাউকে কিছু জানায়নি। তবে পুরো ঘটনাটিই আড়াল থেকে দেখেছিল তার বোন। কিন্তু বোন যাতে জনসমক্ষে মুখ না খোলে তাই জন্য বোনকেও খুনের হুমকি দেয় ওই নাবালক। এরপর নিজের বাবাকে ফোন করে মায়ের মৃত্যুর খবর দেয় সে। গল্প ফেঁদে জানায়, এক ইলেকট্রিশিয়ান বাড়িতে এসে মাকে গুলি করে খুন করেছে। এরপরই ওই সেনা আধিকারিক গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ আধিকারিকরা। বাড়িতে আসা পুলিশকেও প্রথমে একই কথা বলে ওই কিশোর। কিন্তু পরে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ আসল ঘটনা জানতে পারে। তারপরেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত ওই নাবালককে। পুলিশি জেরার মুখে পড়ে মঙ্গলবার রাতেই নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে ওই কিশোর, এমনটাই লখনউ থানা সূত্রে খবর।
অন্যদিকে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। কিশোরের এই ঘটনায় রীতিমতো বিস্মিত তাদের প্রতিবেশীরা। পরে পুলিশ বাড়ি সার্চ করে লাইসেন্সযুক্ত বন্দুকটিও উদ্ধার করেছে বলে খবর। পাশাপাশি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে বহু রুম ফ্রেশনারের খালি বোতল। পুলিশের অনুমান মায়ের মৃতদেহের গন্ধ ঢাকতেই ক্রমাগত ঘরের রুম ফ্রেশনার ছড়িয়েছিল অভিযুক্ত ওই নাবালক। পাড়া-প্রতিবেশীরা যাতে মৃতদেহের দুর্গন্ধ টের না পান তার জন্যই এই ফন্দি এঁটেছিল সে।