বেঙ্গালুরু: গরুর দুধ, মোষের দুধ, ছাগলের দুধের পর এবার গাধার দুধ। আর সেই দুধের ব্যবসা করেই রাতারাতি লাখপতি আইটি কর্মী। জানা যাচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির নিরাপদ মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে সম্প্রতি গাধার ফার্ম খুলেছেন কর্নাটকের দক্ষিণা জেলার এক আইটি কর্মী। আর তাতেই ঘুরেছে তার ভাগ্যের চাকা। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, এই গাধার দুধ বেচেই লক্ষ লক্ষ টাকা কামাচ্ছেন কর্নাটকের দক্ষিণা জেলার বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের শ্রীনিবাস গৌরা। গত ৮ জুন খুলেছে তার গাধার ফার্মের দরজা। আর তারপর থেকেই লক্ষ্মীর আনাগোনা দেখে কার্যত চোখ কপালে প্রতিবেশীদের। কারণ এই প্রতিবেশীরাই যখন প্রথম শ্রীনিবাসের মুখে গাধার ফার্মের কথা শুনেছিলেন তখন কার্যত হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তবে হাজার কটূক্তি এবং ব্যঙ্গের পরেও নিজের লক্ষ্যে স্থির ছিলেন শ্রীনিবাস। আর তাতেই এমন অদ্ভুত উপায়ে যে সাফল্য আসতে পারে তা রীতিমতো খাতায়-কলমে দেখিয়ে দিয়েছেন এই আইটি কর্মী।
কিন্তু কীভাবে গাধার ফার্ম খুলে এমন বিপুল লাভের মুখ দেখলেন শ্রীনিবাস? এই প্রশ্নের উত্তরে ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী জানিয়েছেন, গাধার দুধ অত্যন্ত উপাদেয়। তাই গাধার দুধের দাম অন্যান্য দুধের দামের থেকে অনেকটাই বেশি। এছাড়া এই দুধের চিকিৎসাগত কিছু গুণ থাকার কারণে এর ব্যবসা করা অত্যন্ত লাভজনক। তবে দেশের মধ্যে তিনিই প্রথম যে গাধার ফার্ম খুলেছেন তা কিন্তু নয়। এর আগে কেরলের এর্নাকুলামেও এভাবেই একটি গাধার ফার্ম খোলা হয়েছিল এবং সেক্ষেত্রে লাভের পরিমাণ দেখেই শ্রীনিবাসের মাথায় এই ফার্ম খোলার কথা প্রথমে আসে। তিনি জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই তার কাছে ১৭ লক্ষ টাকারও বেশি মূল্যের দুধ বিক্রির বরাত এসেছে। শুধুমাত্র খেতে উপাদেয় কিংবা চিকিৎসাগত গুণ রয়েছে বলেই নয় গাধার দুধ প্রসাধনী তৈরীর কাজেও ব্যবহৃত হয়। আর তাই রীতিমতো চড়া দামে বিক্রয় হয় এই দুধ। পরবর্তীতে শ্রীনিবাসের গরুর দুধের মত গাধার দুধের প্যাকেট বিক্রির ইচ্ছাও রয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে ৩০ মিলিলিটারের একটি দুধের প্যাকেটের দাম পড়বে কমপক্ষে ১৫০ টাকা।
কর্ণাটকের গাধার ফার্মের মালিকের কথাগুলি যে একেবারে অক্ষরে অক্ষরে ঠিক তা মেনে নিয়েছেন বিজ্ঞানীরাও। তাদের মতে, প্রোটিন উপাদানের সঙ্গেই গাধার দুধে anti-microbial-এর গুনাবলী রয়েছে। যা পেটের রোগ সারাতে বিশেষভাবে সহায়ক। গাধার দুধ খুব সহজেই পেটের সমস্যা তৈরি করতে পারে এমন ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসকে সমূলে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে এই দুধের প্রভাবে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বৃদ্ধি পায় অন্ত্রে। আর তাই বাজারে গাধার দুধের দাম রীতিমতো আকাশছোঁয়া। সাধারণ বাজারে গাধার দুধ বিক্রি হয় লিটারপ্রতি ২০০০ থেকে ৭০০০ টাকায়। আর তাই গাধার দুধ থেকে তৈরি বিভিন্ন বিউটি প্রোডাক্ট এবং প্রসাধনী ও অন্যান্যদের থেকে অনেকটাই দামি হয়। গাধার দুধ থেকে সাবান, ঠোঁটে লাগানোর বাম, বডি লোশনর মতো একাধিক প্রসাধনী দ্রব্য তৈরি করা যায় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।